হেমন্তের বাতাসে শারদীয় গন্ধ। দরজায় কড়া নাড়ছে শারোদৎসবের বার্তা। এরই মধ্যে ব্যস্ত ব্যস্ততা শুরু হয়েছে মূর্তিপাড়া।
জোরকদমে চলছে মূর্তি গড়ার কাজ। ১৪ অক্টোবর মহালয়া। মূলত শারোদৎসবের দিন গননা শুরু।
সম্প্রীতির বাংলাদেশে যে কোন উৎসবই ভিন্ন মাত্রায় সেজে ওঠে। এখানে দুর্গোৎসব পালন হয় সার্বজনিনভাবে। সকল ধর্মের মানুষের মিলনমেলায় পরিণত হয় দুর্গোৎসবের শুরু থেকে বির্সজন পর্যন্ত।
সংস্কৃতি লালনে এই বাঙলায় আলাদা নজির রয়েছে। এ বছর গোটা বাংলাদেশ জুড়ে প্রায় ৩৩ হাজার মণ্ডপে উদযাপিত হতে পারে শারদীয় দুর্গোৎসব।
স্বাচ্ছন্দ ও নির্বিঘ্ন পূজা উদযাপনে কয়েকস্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। পাশাপাশি পর্যাপ্ত সংখ্যা স্টাকিং ফোর্স থাকবে। পাশাপাশি থাকবে চৌকস স্বেচ্ছাসেবক কর্মীবাহিনী।
প্রতিটি মণ্ডপে সার্বক্ষণিক আলোর ব্যবস্থা ছাড়াও সিসিক্যামেরার নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা রাখবে পূজা উদযাপন সংশ্লিষ্টরা।
ঢাকার প্রাচীণ মূর্তিপাড়া শাখারী বাজারে পা রেখেই দেখা দেখা গেল কারিগরদের ব্যস্ততা। কথা হলো বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিমাশিল্পী বিশ^বিদ্যালয়ে পড়ুয়া অনামিকা নন্দীর সঙ্গে।
জানালেন, শুশিল নন্দী ছিলেন এলাকার সুপরিচিত প্রতিমা শিল্পী। একমাত্র সন্তান হিসাবে শৈশব থেকেই বাবার স্নে-হাদরে বড় হয়ে ওঠেছে অনামিকা।
বাবার স্মৃতি ধরে রাখতেই একমাত্র সন্তান হিসাবে লেখাপড়ার পাশাপাশি মূর্তি গড়ার কাজে হাত লাগিয়েছে অনামিকা। মূর্তি গড়ার অনেক কাজ আসে তার ওখানে। কিন্তু বেশি চাপ নিতে চান না। এবছর দুটো মূর্তি গড়ার কাজ করছেন অনামিকা।
১৯৫৫ সাল থেকে কাজ করে চলেছেন পুরাতন ঢাকার আদি মূর্তিগড়ার কারিগর হরিপদ পাল। কত মূর্তি গড়েছেন, তার হিসেব নেই হরিপদ বাবুর খাতায়। মূর্তিগড়ার কাজ অনেকই আসে, কিন্তু বয়স সায় দিচ্ছে না বলে কয়েকটি কাজ নিয়েছেন। কারিগরেরা কাজ চালিয়ে নিলেও তদারকি করেন কিংবদন্তী এই প্রতিমা শিল্পী নিজে।
হরিপদ বাবুর ঘরে আসা আরও কয়েকজনের সঙ্গে আলাপ হলো। দুর্গোৎসব নিয়ে তাদের আগ্রহের কমতি নেই। জানালেন, বাংলাদেশে দুর্গোৎসব পালন হয়ে থাকে সার্বজননীন উৎসব হিসাবে। ‘ধর্ম যার যার উৎসব সবার’ এটিই বাংলাদেশের শ্লোগান।
এবারে এমন এক সময় দুর্গোসব দুয়ারে, যখন রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে গোটা বিশ^ এক অস্থির সময় পার করছে। তারপরও কভিড এবং যুদ্ধ দু’য়ের দখল কাটিয়ে দুর্গোৎসব ভালোভাবেই উৎযাপন করা যাবে এমনটিই প্রত্যাশা করেন তারা।
একুশে সংবাদ/আ.প/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :