AB Bank
ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

সারাদেশে টিকা বিতরণে মাস্টারপ্ল্যান তৈরি করছে সরকার


Ekushey Sangbad
একুশে সংবাদ ডেস্ক
১১:৩২ এএম, ৩ জানুয়ারি, ২০২১
সারাদেশে টিকা বিতরণে মাস্টারপ্ল্যান তৈরি করছে সরকার

কোভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণে সারাদেশে লাখ লাখ মানুষকে টিকা দেওয়াকে মহাযজ্ঞ হিসেবে ধরে নিয়ে এই কাজটি সঠিকভাবে করার জন্য সরকার একটি মাস্টারপ্ল্যান ও প্রয়োজনীয় নির্দেশনা তৈরি করছে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলেছেন, নতুন বছরের গোড়ার দিকে দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় টিকাদান কর্মসূচি শুরু করার জন্য তৈরি এই মাস্টারপ্ল্যান শিগগিরই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে জমা দেওয়া হবে।

এক সাক্ষাৎকারে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের কার্যকারিতার ওপর নির্ভর করে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি মানুষকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্য রয়েছে।

টিকাদান ফেব্রুয়ারিতে শুরু হতে পারে

জাহিদ মালেক বলেন, সরকার এরই মধ্যে অগ্রাধিকার এবং প্রয়োজনীয়তার ভিত্তিতে ভ্যাকসিনের সঠিক বিতরণ নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিয়েছে।

করোনা ভ্যাকসিন জানুয়ারির শেষের দিকে বা ফেব্রুয়ারির শুরুতে দেশে পাওয়া যাবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ডব্লিউএইচও ও অন্যান্য সংস্থার অনুমোদনের প্রক্রিয়া শেষ হলে জানুয়ারির শেষে বা ফেব্রুয়ারির শুরুতে দেশে টিকাদান শুরু হবে।

তবে, নাম প্রকাশ না করার শর্তে মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, কোভিড-১৯ টিকাদান কর্মসূচি ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকে শুরু করার জন্য তাঁরা প্রস্তুতি নিচ্ছেন, কারণ জানুয়ারির মধ্যে তাঁরা এটি নাও পেতে পারেন।

কখন ও কীভাবে ভ্যাকসিন আসবে

ভ্যাকসিন নিয়ে সরকারের পরিকল্পনার কথা জানাতে গিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আগামী ছয় মাসের মধ্যে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি ভ্যাকসিনের তিন কোটি ডোজ বিভিন্ন পর্যায়ে দেশে পৌঁছে যাবে।

মালেক বলেন, টিকাদান প্রক্রিয়ার চুক্তি স্বাক্ষর করা থেকে শুরু করে সব প্রক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য স্বাস্থ্য খাত আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে।

স্বাস্থমন্ত্রী জানান, তাঁরা সাড়ে পাঁচ কোটি টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা করছেন। অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিনের তিন কোটি ডোজ সংগ্রহ এবং টিকা দিতে ছয় মাসের মতো সময় লাগবে।

মন্ত্রী আরো বলেন, ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাকসিন অ্যান্ড ইমিউনাইজেশনের (গ্যাভি) নেতৃত্বাধীন কোভ্যাক্স কর্মসূচির আওতায় বাংলাদেশকে মে ও জুনের মধ্যে প্রায় চার কোটি বা জনসংখ্যার ২০ শতাংশের জন্য ভ্যাকসিন দেওয়ার কথা রয়েছে। কোভ্যাক্স কর্মসূচির আওতায় আমরা এরই মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছি এবং অন্যান্য সব কাগজপত্রের কাজ শেষ করেছি।’

এক বছরেরও বেশি সময় ধরে টিকাদান কর্মসূচিতে দেশের সাড়ে পাঁচ কোটি মানুষকে টিকা দেওয়া হবে, বলে জানান মন্ত্রী।

‘যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সাড়ে পাঁচ কোটি মানুষকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্য পূরণের সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। আমাদের বিশেষজ্ঞ দলগুলো সঠিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করার জন্য আমাদের পর্যাপ্ত জনবলও আছে’, বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

প্রথম কারা টিকা পেতে পারে?

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, ভ্যাকসিন কীভাবে দেওয়া হবে এবং কাদের প্রথমে দেওয়া হবে–সে সম্পর্কে একটি মাস্টারপ্ল্যান ও নির্দেশনা তৈরি করা হয়েছে। তিনি বলেন, এরই মধ্যে ভ্যাকসিন ডোজ বিতরণের অগ্রাধিকার তালিকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, প্রথম পর্যায়ে স্বাস্থ্য ও গণমাধ্যমকর্মীরা এবং বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যদের সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে টিকা দেওয়া হবে।

প্রথম পর্যায়ে টিকাদানের বাইরে কারা?

জাহিদ মালেক বলেন, দেশের মোট জনসংখ্যার অর্ধেকের বয়স ২৫ বছরের কম এবং ৪০ শতাংশের বয়স ১৮ বছরের কম, যাদের প্রাথমিক পর্যায়ে ভ্যাকসিনের দরকার নেই।

মন্ত্রী আরো জানান, প্রায় ৩০ লাখ গর্ভবতী নারী ও জটিল রোগে আক্রান্ত আরো কিছু রোগীদের এ টিকা দেওয়া হবে না।

সংরক্ষণ ও পরিবহন পরিকল্পনা

প্রয়োজনীয় তাপমাত্রায় ভ্যাকসিনগুলো সংরক্ষণের জন্য জেলা পর্যায়ের হাসপাতালগুলোতে নির্ধারিত তাপমাত্রায় জমা রাখার ব্যবস্থা নিশ্চিতে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

জাহিদ মালেক বলেন, ভ্যাকসিন পরিবহনের জন্য ঠান্ডা রাখার বাক্স সংগ্রহের প্রক্রিয়া চলছে। বাংলাদেশে ডব্লিউএইচওর অনুমোদন নিয়ে বিশ্বমানের ল্যাব স্থাপন করা হবে।

নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় ভ্যাকসিন সংরক্ষণের জন্য কোল্ড-চেইন তৈরি এবং কোল্ড বক্সও সংগ্রহ করতে তাদের প্রস্তুতির কথা জানান জাহিদ মালেক।

বিশৃঙ্খলতার কোনো সুযোগ নেই

ভ্যাকসিন কীভাবে বিতরণ করা হবে—সে বিষয়ে একটি নির্দেশিকা তৈরি করা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘ভ্যাকসিন বিতরণে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলার কোনো আশঙ্কা নেই, কারণ সবকিছু আমাদের তৈরি করা নির্দেশিকা অনুসারে সম্পন্ন করা হবে।’

মন্ত্রী বলেন, ‘ভ্যাকসিন প্রদানে পর্যাপ্ত প্রশিক্ষিত জনবল আমাদের আছে। দক্ষ জনশক্তির মাধ্যমে সরবরাহে আমরা বেসরকারি খাতকেও কাজে লাগানোর পরিকল্পনাও করেছি।’

সরকার করোনার ভ্যাকসিন দেওয়ার পাশাপাশি অন্যান্য রোগের জন্য যেসব সাধারণ টিকা কার্যক্রম আছে সেগুলো চালিয়ে যাবে বলেও বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

যোগাযোগ করা হলে স্বাস্থ্য সচিব আবদুল মান্নান বলেন, একটি সুশৃঙ্খল টিকা কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য একটি মাস্টারপ্ল্যান তৈরির কাজ করা হয়েছে।

স্বাস্থ্য সচিব বলেন, মাস্টারপ্ল্যানটি শিগগিরই প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে। এটি অনুমোদন হয়ে গেলেই সে অনুযায়ী টিকা কার্যক্রমগুলো পরিচালনা করা হবে।

স্বাস্থ্য সচিব আরো জানান, ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে হওয়া চুক্তি অনুসারে বাংলাদেশ আগামী ছয় মাসে তিন কোটি ভ্যাকসিন (প্রতি মাসে ৫০ লাখ ডোজ) পাবে। প্রথম পর্যায়ে যে ৫০ লাখ টিকার ডোজ আসবে, তা ২৫ লাখ মানুষকে দেওয়া হবে।

আবদুল মান্নান বলেন, ভ্যাকসিন সংগ্রহের জন্য সরকার অ্যাস্ট্রাজেনেকা ছাড়াও আরো কয়েকটি সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করছে।

এক প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্য সচিব বলেন, ভ্যাকসিন সংরক্ষণ ও বিতরণ সম্পর্কে একটি গাইডলাইন তৈরি করা হচ্ছে। এ গাইডলাইন অনুসারে টিকাদান কর্মসূচি পরিচালনা করা হবে।

এই ভ্যাকসিন বিতরণে কেমন সংখ্যক চিকিৎসক, নার্স এবং অন্যান্য জনবলের প্রয়োজন হবে জানতে চাইলে আবদুল মান্নান জানান, মাস্টারপ্ল্যানের অনুমোদন পাওয়ার পরে এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানাবেন তাঁরা।

একুশে সংবাদ/এআরএম

Link copied!