কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: কুড়িগ্রামে ব্যাটারী চালিত অটো রিক্সার যন্ত্রাংশ দিয়ে দৃষ্টিনন্দন মিনিবাস তৈরি করেছেন বেকার যুবক শওকত আলী নয়ন।
ভ্রমণ পিপাসুদের চাহিদা মেটাতে পরিবেশ বান্ধব ব্যতিক্রমী এ পরিবহন আবিস্কার করে আলোচনার কেন্দ্র বিন্দুতে পরিণত হয়েছেন তিনি। এনজিওর কাছে ঋণ নিয়ে মিনিবাস তৈরি করে সংসার চালানোর স্বপ্ন দেখছেন নয়ন। বিস্ময়কর এই মিনিবাস তৈরি করে কুড়িগ্রামকে তুলে ধরেছেন দেশ-বিদেশে।
পৌরসভার হিঙ্গনরায় সর্দারপাড়া গ্রামের বসির উদ্দিনের ছেলে শওকত আলী নয়ন। পেশাগত ভাবে ক্ষুদ্র মোদি দোকানি ছিলেন তিনি। সরকারি জায়গায় দোকান থাকার কারণে পর পর ৩ দফায় উচ্ছেদ অভিযানে পুঁজি হারিয়েছেন। দীর্ঘ দেড় বছর পর আবারো ঘুরে দাঁড়ানোর লক্ষ্যে ব্র্যাক এবং আশা এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে ৩ লক্ষ টাকায় তৈরি করেন এই মিনিবাসটি। এখন প্রতিদিন তার আয় ৮/৯'শ টাকা। এভাবেই চলছে তার তিন সদস্যের পরিবার।
গাড়ির মালিক শওকত আলী নয়ন জানান তার দুর্দিনের গল্প। তিনি বলেন, তত্ত¡াবধায়ক সরকার এবং আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে ৩ দফায় তার মুদির দোকান উচ্ছেদ অভিযানে ভেঙে দেয়া হয়। এতে ৭/৮ লক্ষ টাকার গচ্ছিত অর্থ পুরোটাই নষ্ট হযে যায়। হতাশায় বেকার জীবন অতিবাহিত করেন দেড় বছর।
এরপর হাইয়েচ মাক্রোবাস আদলে ৮ আসন বিশিষ্ট মিনিবাস তৈরির পরিকল্পনা শুরু করেন। এক পর্যায়ে স্থায়ীয় রাযীন অটো পয়েন্টের মিস্ত্রি আব্দুর রহিমের কাছে মিনিবাসটি তৈরির সার্বিক পরিকল্পনা ব্যক্ত করেন। শুরু হয় আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম। দুই মাসে ধীরে ধীরে প্লান অনুযায়ী রুপ পায় ব্যতিক্রমী মিনিবাসটি।
এখন আর স্বপ্ন নয়, বাস্তবে সেই নিজের তৈরি করা মিনিবাস দিয়ে সংসার চলছে তার। স্বপ্ন যেন আজ সত্যি হয়েছে। নয়ন প্রত্যাশা করছেন ধুলো-বালু থেকে রক্ষাকারী পরিবেশ বান্ধব মিনিবাসটি তৈরিতে সরকারি সহযোগিতা পেলে গণউৎপাদন সম্ভব বলে তিনি জানান।
এ বিষয়ে রাযীন অটো পয়েন্টের গাড়ির বডি মিস্ত্রি আব্দুর রহিম বলেন, মাত্র ৩ লক্ষ টাকা খরচে একটি মিনিবাস তৈরি করা সম্ভব। কারিগরিভাবে এটি তৈরিতে সহযোগিতা করে আমিও গর্বিত। মিনিবাসটি হুবহু হাইয়েচ মাইক্রোবাসের আদলে তৈরি। এটি ঘন্টায় ৫০কি.মি যায়।
এই গাড়িতে ভ্রমণকারী আব্দুল মালেক নামে এক ব্যক্তি বলেন, মিনিবাসটিতে ভ্রমণ করে ভালোই লেগেছে। এছাড়া গাড়ি ভিতরে পর্যাপ্ত বাতাস এবং ধুলো-বালু মুক্ত হওয়ায় যাত্রাপথে বিরক্ত লাগে না ও গাড়িতে ঝুঁকি নেই বললেই চলে।
একুশে সংবাদ/আনোয়ার হোসেন/এইচআই