AB Bank
ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

ক্যাম্পাস সাংবাদিকতা


ক্যাম্পাস সাংবাদিকতা

সাংবাদিকতাকে বলা হয় কোনো জাতির নির্মাণ কিংবা ধ্বংসের গদ্য। তবে সাংবাদিকতার মাধ্যমে কোনো জাতির ধ্বংশ নয়, বরং নির্মাণের গল্পই রচিত হয়েছে বেশি। অর্থাৎ জাতির চিন্তা-চেতনার শৈলী ও সুপ্ত মন-মানসিকতা তৈরিতে এটি বরাবরই ভূমিকা পালন করেছে। একারণে সাংবাদিকতাকে বলা হয় একটি মহান পেশা। আর এ পেশার মূল ভিত্তিটাই শুরু হয় ক্যাম্পাস সাংবাদিকতা থেকে। তবে নানামুখি চাপ মোকাবিলা করে ক্যাম্পাস সাংবাদিকদের টিকে থাকতে হয়। অপরাধীরা বারবার বিভিন্ন পেশীশক্তির দাপটে সাংবাদিকের ঘায়েল করতে চায়। সাংবাদিকের কণ্ঠ রোধ করতে চায় নির্ভীক ও সত্য সাংবাদিকতাকে ‘হলুদ সাংবাদিকতার’ তকমা লাগিয়ে। তবুও সাংবাদিকতার জগতে ‘ক্যাম্পাস’ সাংবাদিকরা দায়িত্ব পালনে ভয়ে সামান্য পিছু পা হয় না। সত্যকে আঁকড়ে ধরে এগিয়ে যায় তারা।

 

সাংবাদিকতার আঁতুড়ঘর ক্যাম্পাস সাংবাদিকতা - বিশ্ববিদ্যালয়কে সাংবাদিকতা চর্চার ‍‍`আদর্শ জায়গা‍‍` হিসেবে অভিহিত করা হয়। আমাদের দেশের সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে রয়েছে ক্যাম্পাস সাংবাদিকতা করার সুযোগ। যেখান থেকে দেশ বরেণ্য ও নামকরা ভবিষ্যৎ সাংবাদিকের জন্ম হয়। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যারা সাংবাদিকতা করেন সাংবাদিকতার প্রতি তাদের তেমন কোনো ধরনের জ্ঞান না থাকা সত্ত্বেও সাংবাদিকতার প্রতি অপরিসীম ভালোবাসা থেকেই নিজেকে ক্যাম্পাস সাংবাদিকতায় নিযুক্ত করেন। ক্যাম্পাস সাংবাদিকতার শুরুতে সংবাদ সংগ্রহে ভয়, সংবাদ নির্বাচন ও লেখায় অপরিপক্বতা সহ নানা সীমাবদ্ধতা ও জড়তা থাকলেও সময়ের সাথে সাথে সব কিছুকে মুছে ফেলে সততা,আদর্শ,বস্তুনিষ্ঠতার উপর নির্ভর করে একজন ক্যাম্পাস সাংবাদিক হয়ে উঠেন দক্ষ সংবাদকর্মী। পরিণত হন দেশ বরেণ্য একজন খ্যাতনামা সাংবাদিকে।

 

দায়িত্বশীলতায় অগ্রগণ্য- ক্যাম্পাস সাংবাদিকরা শুধু ক্যাম্পাসের দৈনন্দিন বিষয়গুলোই নয়, ক্যাম্পাসের লোকচক্ষুর অন্তরালে লুকিয়ে থাকা তথ্য সবার সামনে তুলে ধরেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, প্রক্টর, ডিন, শিক্ষক, কোষাধ্যক্ষ, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকসহ প্রশাসনিক কর্মকর্তারা চায় তাদের দুর্বলতা, ত্রুটি, অদক্ষতা আড়াল করতে। অন্যদিকে ক্ষমতাসীন ছাত্রসংগঠন চায় তাদের চাঁদাবাজি, টেণ্ডারবাজি, অস্ত্রের প্রকাশ্য মহড়া দেওয়ার মতো ঘটনা দেশের মানুষের কাছে আড়ালে থাকুক। কিন্তু ক্যাম্পাস সাংবাদিকরা এসবের তোয়াক্কা না করে নিজের দায়িত্ববোধকে বেশি গুরুত্ব দেয়। যখনই ঘটনা ঘটে তখনই সংবাদিকরা নৈতিকতার জায়গা থেকে ইস্যুগুলোকে সবার সামনে তুলে ধরেন এবং যেকোন প্রতিকূল অবস্থার মধ্যে থেকেও সেগুলোর যথাযথ সমাধান না হওয়া পর্যন্ত দায়িত্বে অবিচল থাকেন। এ যেন ক্যাম্পাসের প্রতি তাদের বাড়তি দায়বদ্ধতা। ক্যাম্পাসের সফলতার গল্পের পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয়গুলো সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে সর্বদা বদ্ধপরিকর তারা। এভাবে শিক্ষাঙ্গনের সার্বিক সমস্যা গুলো তুলে ধরে শিক্ষা কার্যক্রমকে আরও গতিশীল করে তুলতে সহযোগিতা করে ক্যাম্পাস সাংবাদিকরা।

 

ক্যাম্পাসের দর্পন- সংবাদপত্রকে বলা হয় সমাজ ও রাষ্ট্রের দর্পণ। ঠিক তেমনি ক্যাম্পাস সাংবাদিকতা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্পণ স্বরূপ কাজ করে।  তাদের লেখনীর মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক চিত্র ফুটে উঠে। তারা ক্যাম্পাসের বিভিন্ন ঘটনা, ধারণা, মানুষ, প্রকৃতি, পরিবেশ সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে লেখালেখি করেন। যেগুলো বিচার বিশ্লেষণ করে প্রতিবেদনের মাধ্যমে জনসম্মুখে তুলে ধরেন ক্যাম্পাস সাংবাদিকগণ। লেখনিতে যেমন শিক্ষক-ছাত্ররাজনীতি উঠে আসে, ঠিক তেমনি উঠে আসে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেট তথা অর্থনীতি। তুলে ধরা হয় ছাত্রছাত্রীদের সুযোগ-সুবিধা কিংবা পড়ার পরিবেশ। পাশাপাশি বিভিন্ন শিক্ষামূলক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নানা ইতিবাচক ও নেতিবাচক সংবাদ সরবরাহ করে ক্যাম্পাস সাংবাদিকগণ। অর্থাৎ ক্যাম্পাস সাংবাদিকগণের লেখনির মাধ্যমে শিক্ষার্থী সহ সকলের কাছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক খবরাখবর পৌঁছে যায়।

 

মতপ্রকাশের মাধ্যম- সুবিশাল ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের সাথে প্রতিনিয়ত নানা ধরনের ঘটনা ঘটে। শিক্ষার্থীরা তাদের সাথে হওয়া এসব ঘটনা ক্যাম্পাস সাংবাদিকদের মাধ্যমেই তুলে ধরতে সক্ষম হন। বিশেষত প্রশাসন থেকে শুরু করে তাদের আবাসস্থল ‍‍`হল‍‍` এ তাদের সাথে হওয়া ঘটানোগুলো জনসম্মুখে প্রকাশ করে সাংবাদিকদের মাধ্যমেই। তুলে ধরে তাদের দাবি-দাওয়া। এছাড়া নারী শিক্ষার্থীরা তাদের সাথে হওয়া অনাকাঙ্ক্ষিত আচরণগুলো প্রশাসনের কাছে পৌঁছে দিতে সাংবাদিকদের সহায়তা নেন। শিক্ষক ও শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ও কর্মচারীরাও তাদের অব্যক্ত কথা সাংবাদিকদের মাধ্যমেই তুলে ধরে। অর্থাৎ ক্যাম্পাস সাংবাদিকরা মতামত প্রকাশের মাধ্যম।

 

পারস্পারিক সহাবস্থান সৃষ্টির কারিগর - বিশ্ববিদ্যালয় মতামত প্রকাশের চারণভূমি। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বভাবতই নানা দল ও মতাদর্শের মানুষ থাকাই স্বাভাবিক। তবে বিভিন্ন দল ও মতাদর্শের মানুষ থাকায় অনেক সময় তাদের মধ্যে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার সৃষ্টি হতে পারে। তবে এক্ষেত্রে এগিয়ে আসে ক্যাম্পাস সাংবাদিকরা। কেননা তারা বরাবরই ভিন্নমত ও আর্দশের অনুসারীদের শক্তিপ্রয়োগের চেয়ে তাদের মাধ্যমে তাদের মতামত তুলে ধরতে অনুপ্রাণিত করে। যার ফলে আলোচনা ও সমালোচনার মাধ্যমে একটি সুষ্ঠ সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যায়। এভাবে ক্যাম্পাসে সুষ্ঠ পরিবেশ সৃষ্টিতে সহায়তা করে ক্যাম্পাস সাংবাদিকরা। বিশেষত রাজনৈতিক দলের সাথে সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীদের পারস্পারিক সহবস্থান তৈরিতে ক্যাম্পাস সাংবাদিকতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

 

জ্ঞানচর্চার বাহন ক্যাম্পাস সাংবাদিকতা - ক্যাম্পাস সাংবাদিকতা মেধার বিকাশ ঘটায় এবং স্বাধীনভাবে মত প্রকাশের চর্চা শেখায়। শেখায় অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলতে। ক্যাম্পাস সাংবাদিকতা করলে কীভাবে পরিস্থিতি অনুযায়ী পদক্ষেপ নিতে হয় সেটা জানা যায়। সারাদেশের সাংবাদিকদের সাথে একটি যোগাযোগ সৃষ্টি হয় এতে করে যোগাযোগ দক্ষতাও বৃদ্ধি পায়। বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্যদের কাছে নিজের একটা আলাদা পরিচিতি গড়ে ওঠে। সুযোগ হয় অনেক ধরনের মানুষের সঙ্গে কথা বলা ও চলাফেরা করার। সর্বোপরি ক্যাম্পাস সাংবাদিকতাকে জ্ঞানচর্চার বাহন বলা যেতে পারে। যারা ভবিষ্যতে পেশা হিসেবে সাংবাদিকতা করতে চায় তাদের জন্য ক্যাম্পাস সাংবাদিকতা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ ক্যাম্পাস সাংবাদিকতা তাদের ভবিষ্যতের পেশাগত কর্মক্ষেত্রে নিজের ভীত শক্ত করে।

 

একুশে সংবাদ.কম/আ.র.প্র/জাহাঙ্গীর

Link copied!