AB Bank
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

"সড়ক যেন মানুষের মৃত্যুর কারন না হয়"


Ekushey Sangbad
ফিচার ডেস্ক
১১:৫৯ পিএম, ২২ অক্টোবর, ২০২২


আজ ২২ অক্টোবর। জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস। ২০১৭ সালের ৫ জুন মন্ত্রীসভার বৈঠকে ২২ অক্টোবর ‍‍`জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস ‍‍` পালনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। আজ পঞ্চমবারের মতো সরকারি উদ্যোগে পালিত হলো এই দিবস। এইবারের প্রতিপাদ্য বিষয় ‍‍` আইন মেনে সড়কে চলি, নিরাপদের ঘরে ফিরি।‍‍`৩
সরকারি বেসরকারি নানা প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন কর্মসূচি আজ পালন করেছে। এই দিবসের মূল লক্ষ্য যেন সঠিক ভাবে পালন করা হয় সে বিষয়কে সামনে রেখেই কর্মসূচিগুলো দিন ব‍্যাপী গৃহীত হয়। এ বিষয়টি নিশ্চিত করেন (বিআরটিএ) চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার। সড়ক পরিবহন দিবস উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি ও প্রধামন্ত্রী পৃথক বাণী দিয়েছেন।

 

১৯৯৩ সালের ২২ অক্টোবর, ২৮ বছর আগে ‍‍`নিরাপদ সড়ক চাই ‍‍` আন্দোলনের জন্ম। চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনের স্ত্রী এক সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু বরণ করেন। তিনি স্ত্রীকে হারিয়ে এ আন্দোলন গড়ে তোলেন। ২০১১ সালের ১৩ আগস্ট সড়ক দুর্ঘটনায় চলচ্চিত্রকার তারেক মাসুদ ও গণমাধ্যম ব‍্যক্তিত্ব মিশুক মুনীরের মৃত্যুতে গতি পায় এই আন্দোলন। ২০১৭ সালের ৫ জুন মন্ত্রীসভার বৈঠকে ২২ অক্টোবর  এই দিবস পালনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এরপর ২০১৮ সালের ২০ সেপ্টেম্বর সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ পাস হয় ৮ অক্টোবর গেজেট জারি হয়। এ দিবস পালনের মধ্য দিয়ে সড়ক পরিবহন সেক্টরে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা এবং দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে আনার জন‍্য কমিটি ১১১ টি সুপারিশ করেছিল। কিন্তু অতিব দুঃখের বিষয় সেগুলো কার্যকর হয়নি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কঠোর নির্দশনা দিয়েছিল ২০১৮ সালের জুনে। এই নির্দেশনার মধ‍্যে ছিল দূরপাল্লার গাড়িতে বিকল্প চালক রাখা, একজন চালকের ৫ ঘন্ত্রার বেশি গাড়ি না চালানো। চালক ও তার সহকারির প্রশিক্ষণের ব‍্যবস্থা, নিদিষ্ট দূরত্ব পর পর বিরতি ইত্যাদি। কিন্তু এত এত নির্দেশনার পর ও তেমন কোনো পরিবর্তন দেখা যায়নি। বরং অনিয়ম দুর্ঘটনা বেড়েই চলেছে। এক পরিসংখানে দেখা গিয়েছে অনেক শিক্ষার্থী প্রতিনিয়ত সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। দেশে এবং দেশের জনপথ জনগণের কল‍্যানের জন‍্য। সেখানে এইভাবে অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু কখনোই কাম‍্য নয়। সড়ক নিরাপদ দিবস তৈরি রক্তের মূল্য দিয়ে। এই দিবসের মূল বিষয় হলো আর যেন সড়কে এভাবে জনগনের রক্ত না ঝরে। দেশের মানুষ দেশের সম্পদ। সম্পদের এভাবে অকালে শেষ করা বন্ধ করতে হবে। জনগণ, কতৃপক্ষ এবং সরকার উভয়ের যথাযথ কর্মের মাধ্যমেই এই দিবসের প্রতিপাদ্য সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা সম্ভব। কেবল সভা সেমিনারের মধ্যেই যদি এই দিবসের গুরুত্ব দেখানো হয় কিন্তু কাজে যদি তার সঠিক প্রয়োগ না থাকে তাহলে কখনও নিরাপদ সড়ক আর বাস্তবায়ন করা যাবেনা।

 

আজ এই দিবসটি উপলক্ষ্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা মতামত দিয়েছেন। জনাব রাজেশ কুমার দেব ; প্রভাষক; অর্থনীতি বিভাগ ; বলেন,বর্তমান সময়ে নিরাপদ সড়ক দিবস একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বতর্মানে ফিটনেস বিহীন গাড়ি সড়কে প্রতিনিয়ত চলাচল করছে। এই ফিটনেস বিহীন গাড়িগুলোকে অপসারণ করতে হবে। গাড়ি গুলোকে নিয়ন্ত্রণের মধ‍্যে নিয়ে আসতে হবে। তিনি আরো বলেন, গত  কয়েক রিপোর্টে দেখলাম অনেক শিক্ষার্থী সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুবরণ করছে। ছাত্ররা দেশের সম্পদ। তাদের এমন অকাল মৃত্যু কখনোই কাম‍্য নয়। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এলাকা জনসমাগম এলাকা। পুরাণ ঢাকা অনেক লোকালয়ের এরিয়া। এখানে কোর্ট, বাংলাদেশ ব‍্যাংক, স্কুল কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় অবস্থান করছে। এখানে ট্রাফিকের নজরদারি তেমন ভাবে পরিলক্ষিত হয়না। ফ্রুট ওভার ব্রিজ সঠিকভাবে ব‍্যবহার করা হয় না। রিক্সাগুলো ট্রাফিক আইন মেনে চলে না। যদি ট্রাফিক আইনের মধ‍্যে আনা যায় তাহলে খুবই সুন্দর একটা সড়ক পরিবহন ব‍্যবস্থা গড়ে উঠবে। বর্তমানে যদিও এখানে ওয়ানওয়ে করা হয়েছে তারপর ও ট্রাফিক আইন প্রতিনিয়তই ভঙ্গ হচ্ছে। ট্রাফিক পুলিশ শুধু থাকলেই হবেনা তারা তাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করছে কিনা সেটাও ট্রাফিক সার্জন্টদের নজরদারিতে রাখতে হবে। তাহলেই সবার সচেতনতার মাধ্যমে একটি সঠিক নিরাপদ সড়ক ব‍্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে।

 

সরকারী অধ্যাপক ; জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়; জনাব দীপিকা মজুমদার বলেন ২০১৭ সালের ৫ জুন মন্ত্রীসভার বৈঠকে ২২ অক্টোবর জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস পালনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সেদিন থেকে এ দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। দুর্ঘটনা এড়ানোর জন‍্য অনেকগুলো কর্মসূচি গ্রহণ করা হলে ও সেসবের সঠিক বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়ে উঠেনি। যদি ট্রাফিক আইন অমান‍্য করার কঠোর শাস্তি বাস্তবায়ন করা হতো তাহলে সেটা পালনে অবশ‍্যই সকলে সচেতন হতো। জনগণ এবং পরিবহন সেক্টরে যারা আছেন ড্রাইভার কর্তপক্ষ যদি দেখেন যে আইন আছে কিন্তু সেই আইনের সঠিক বাস্তবায়ন হচ্ছে না তাহলে তারা সেই আইন না মেনে ; সহজ বেইমানি পথেই নিজেদের পরিচালিত করবে। ট্রাফিক আইন, সড়ক আইন সব ঠিকই আছে আইন আইনের জায়গার। কেবল তাদের বাস্তবায়ন নেই। দূরপাল্লার যাত্রার ড‍্রাইভার পরিবর্তনের কথা থাকলেও তার বাস্তবায়ন হচ্ছেনা। এমন বহু কর্মসূচি, সভা, সেমিনার হলো কিন্তু তার বাস্তবায়ন যদি না হয় তাহলে কখনও সড়ক কে নিরাপদ করা সম্ভব হবেনা।তাই আইন শুধু থাকলেই হবেনা তার সঠিক বাস্তবায়ন অধিক গুরুত্বপূর্ণ।

এছাড়াও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের  প্রভাষক জনাব মোঃ রবিউল করিম বলেন, সড়ক পরিবহন ব‍্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো যারা পরিবহন চালাচ্ছে তাদের কে অবশ্যই যথাযথ ট্রেনিং প্রাপ্ত হতে হবে। ট্রেনিংয়ের মাধ্যমে তাদের কে সড়কে গাড়ি চালানোর যোগ্য করে তুলতে হবে।ট্রেনিং এবং সঠিক ব‍্যবস্থাপনার মাধ্যমে যারা আসবে তাদের মাধ্যমে সঠিক সড়ক ব‍্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব। এছাড়াও কাগজপত্রের ত্রুটি দূর করতে হবে। মনিটরিং ব‍্যবস্থাকে যথাযথ হতে হবে। মনিটরিং ব‍্যবস্থা যদি সঠিক হয় তাহলে সকল কিছুই সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করা সম্ভব। ফীট গাড়ি সড়কে ছাড়া হচ্ছে কিনা সে বিষয়ে সরকার কে আরো কঠোর ভূমিকা পালন করতে হবে। আজকের প্রতিপাদ‍্য বিষয় হলো ‍‍`আইন মেনে সড়কে চলি, নিরাপদে ঘরে ফিরি‍‍`। প্রতিপাদ‍্য বিষয়ের মধ‍্যে প্রথমেই আইনের কথা উঠে এসেছে। আইনে সকল সঠিক ব‍্যবস্থপনার লিপিবদ্ধ করা আছে। কেবল নেই তার সঠিক বাস্তবায়ন। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা একটি জনসমাগমের মুখর এলাকা। এখানে ট্রাফিক থাকলেও সবসময়ই তাদের দেখা যায় না। নেই ট্রাফিক সার্জন্ট। বিকালের সময় দেখা যায় কেবল। কেবল একটি সময়ে ট্রাফিক ব‍্যবস্থা যদি সচল থাকে তবে কখনো সঠিক সড়ক ব‍্যবস্থা পরিচালনা করা সম্ভব হয়ে উঠবে না। এখানে ট‍্রাফিক সার্জেন্ট আব‍্যশিক বলে মনে করি। এছাড়াও কেবল ট‍্রাফিক সচেতনতা নয় দরকার জনগনের সচেতনতাও। আমরা যারা নিজেরা প্রাইভেট গাড়ি ব‍্যবহার করি তারাও যেন এ বিষয় গুলো মেনে চলি সেদিকে নিজেদেরকেই অনেক সচেতন হতে হবে। সকলের নিজ নিজ অবস্থানে যদি সঠিক দায়িত্ব সঠিকভাবে পালিত হয় তবেই সঠিক নিরাপদ সড়ক ব‍্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব।


সড়ক জনগনের চলাচলের মাধ‍্যম।সড়ক যেন পথচারীর জীবন না কেড়ে নেয়।ট্রাফিক যদি জরিমানা কে ঘুষ হিসাবে গ্রহণ করে ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন চলাচলের সুযোগ দেয় তবে নিরাপদ সড়ক কখনও বাস্তবায়ন হবেনা। প্রতি সপ্তাহে অন্ততপক্ষে একদিন সড়কের সকল যানবাহন ফিট কিনা তা পর্যবেক্ষণ করা উচিত। ফিটনেস বিহীন যানবাহন কে সড়ক থেকে অপসারণ করা অতিব জরুরি। এক্ষেত্রে সরকারের তদারকি এবং জনগনের সচেতনতা আবশ‍্যক।


আনিকা ইশরাফ ইকরা; অর্থনীতি বিভাগ; জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

 

একুশে সংবাদ.কম/জা.হা
 

Link copied!