AB Bank
ঢাকা বুধবার, ০১ মে, ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

মামলা করায় ঘুমন্ত প্রবাসীকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা


Ekushey Sangbad
নিজস্ব প্রতিবেদক
০৪:২৪ পিএম, ২২ জুন, ২০২৩
মামলা করায় ঘুমন্ত প্রবাসীকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা

বহুল আলোচিত মুন্সিগঞ্জের সদর এলাকায় প্রবাসফেরত মোঃ শ্যামল ব্যাপারী’কে রাতের অন্ধকারে ঘুমন্ত অবস্থায় নৃশংসভাবে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যাকান্ডের ঘটনায় মূল পরিকল্পনাকারী শাহাদাত বেপারীসহ জড়িত ৩ জন’কে মুন্সিগঞ্জ সদর এলাকা থেকে বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্রসহ গ্রেফতার করেছে র‌্যাব।

 

বৃহস্পতিবার (২২ জুন) দুপুরে রাজধানী কাওরানবাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব এ কথা জানান।

 

র‌্যাব জানায়, গত ১৪ জুন মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার শিলই ইউনিয়নের পূর্বরাখি এলাকায় গভীর রাতে প্রবাস ফেরত শ্যামল নামক এক ব্যক্তিকে নিজ বাড়িতে ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় কতিপয় দুর্বৃত্ত কর্তৃক নৃশংসহভাবে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যার ঘটনা ঘটে। উক্ত হত্যাকান্ডের ঘটনায় নিহতের ভাই বাদী হয়ে মুন্সিগঞ্জ সদর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকান্ডের ঘটনা বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় গুরুত্বের সাথে প্রচারিত হলে দেশব্যাপী ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। স্থানীয় লোকজন হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের বিচার দাবীতে এলাকায় মানববন্ধন করে।

 

এদিকে র‌্যাব উক্ত হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে। এরই ধারাবাহিকতায় গত রাতে র‌্যাব গোয়েন্দা শাখা ও র‌্যাব-১১ এবং র‌্যাব-১৪ এর একটি আভিযানিক দল মুন্সিগঞ্জ সদর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে হত্যাকান্ডের মূলপরিকল্পনাকারী শাহাদাত বেপারী (৪৫) ও তার ছেলে  মহিউদ্দিন বেপারী (২০) এবং ৩। হায়াতুন ইসলাম (৪২)কে গ্রেফতার করে। সেসময় তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় ১টি বিদেশী পিস্তল ও গোলাবারুদ এবং দেশীয় অস্ত্র।র‌্যাব জানায় গ্রেফতারকৃতরা উক্ত হত্যাকান্ডের সাথে তাদের সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে তথ্য প্রদান করে।

 

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, গ্রেফতারকৃত শাহাদাত বেপারীর নেতৃত্বে ১৫-২০ জনের সন্ত্রাসী দল পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী আগ্নেয়াস্ত্র ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে ১৪ জুন ২০২৩ তারিখ রাতে শ্যামলকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে। এলাকায় ট্রলার ঘাটের ইজারা, নদী থেকে অবৈধভাবে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন, আধিপত্য বিস্তার ও জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে নিহত শ্যামলের নিকট আত্মীয়দের  সাথে দীর্ঘদিন যাবৎ গ্রেফতারকৃত শাহাদাতের বিরোধ চলছিল। এ প্রেক্ষিতে ৫/৬ মাস পূর্বে নিহত শ্যামলের নিকট আত্মীয়দের  সাথে জমি সংক্রান্ত বিষয় এবং এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে গ্রেফতারকৃত শাহাদাতের বাকবিতন্ডা ও ঝগড়া হয়। এর জের ধরে নিহত শ্যামলের সাথেও গ্রেফতারকৃত শাহাদাতের বাকবিতন্ডা ও ঝগড়া হয়। পরবর্র্তীতে গত ফেব্রুয়ারি মাসে গ্রেফতারকৃত শাহাদাতের পরিকল্পনায় ও উপস্থিতিতে শ্যামলের ভাইদের স্থানীয় বাজারে ফার্মেসীতে কুপিয়ে জখম করে তার লোকজন। উক্ত ঘটনায় নিহত শ্যামল বাদী হয়ে মুন্সিগঞ্জ সদর থানায় গ্রেফতারকৃত শাহাদাত ও তার ছেলে মহিউদ্দিনসহ অন্যান্য সহযোগীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। গ্রেফতারকৃত শাহাদাত বেপারী গ্রেফতার এড়াতে আত্মগোপনে যায়। কিন্তু তার ছেলে গ্রেফতারকৃত মহিউদ্দিন বেপারী ও তার এক সহযোগী উক্ত মামলায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক গ্রেফতার হয়। পরবর্তীতে গ্রেফতারকৃত শাহাদাত বেপারী ও তার ছেলে বিজ্ঞ আদালত থেকে উক্ত মামলায় জামিন পায়।

 

আত্মগোপনে থাকাকালীন সময়ে গ্রেফতারকৃত শাহাদাত বেপারী শ্যামলকে হত্যা করার পরিকল্পনা করে। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী শাহাদাত পূর্ব থেকেই আগ্নেয়াস্ত্র, ককটেল ও ধাড়ালো অস্ত্র সংগ্রহ করে রাখে। গ্রেফতারকৃত শাহাদাতের বেশ কয়েকজন সহযোগী ও সন্ত্রাসী বাহিনীর ১৫-২০ জন সদস্য শাহাদাতের নেতৃত্বে উক্ত হত্যাকান্ডে অংশ নেয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ১৪ জুন ২০২৩ তারিখ রাত আনুমানিক ১.৩০ ঘটিকায় শাহাদাত ও তার লোকজন নিহত শ্যামলের বাড়ির চার দিক থেকে ঘেরাও করে হামলা চালায়। তারা শ্যামলের ঘরে ঢুকে পা, বুক, পিঠ, মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুলি করে ও এলোপাতাড়িভাবে ধাড়ালো অস্ত্র দিয়ে নৃশংসহভাবে কুপিয়ে শ্যামলকে হত্যা করে। পরবর্তীতে তারা গুলি করে ও ককটেল বিস্ফোরন ঘটিয়ে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। উক্ত হত্যাকান্ডের পর তারা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর গ্রেফতার এড়াতে আত্মগোপনে চলে যায়।

 

গ্রেফতারকৃত শাহাদাত বেপারী এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের জন্য তার ছেলে গ্রেফতারকৃত মহিউদ্দিন বেপারীসহ ১৫-২০ জনের একটি সন্ত্রাসী বাহিনী পরিচালনা করত। সে ২০ বছরেরও অধিক সময় ধরে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, চাঁদাবাজি, ছিনতাই, নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন, মাদক ব্যবসাসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কার্যক্রম করে আসছিল।

 

গ্রেফতারকৃত শাহাদাত বেপারী উগ্র প্রকৃতির লোক। উক্ত হত্যাকান্ডের পর সে কিশোরগঞ্জ ও মুন্সিগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপনে থাকে। পরবর্তীতে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় সে নিহত শ্যামলের পরিবারকে ভয়ভীতি দেখিয়ে উক্ত ঘটনার বিষয়ে তাদের সাথে সমঝোতার চেষ্টা করতে থাকে। আত্মগোপনে থাকাকালীন সময়ে র‌্যাব কর্তৃক গ্রেফতার হয়। তার বিরুদ্ধে মুন্সিগঞ্জের বিভিন্ন থানায় হত্যা, হত্যাচেষ্টাসহ বিভিন্ন অপরাধে প্রায় ১০টি মামলা রয়েছে বলে জানা যায় এবং বিভিন্ন মামলায় বিভিন্ন মেয়াদে কারাভোগ করেছে বলে জানা যায়।  

 

গ্রেফতারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

 

একুশে সংবাদ/বে.দে.প্রতি/এসএপি

Link copied!