উঠোনের চারপাশে ভিড় করেছেন গ্রামবাসী। মাঝখানে রাখা দুটি খাটিয়া, সেখানে শায়িত বাবা ও ছেলে। এ দৃশ্য দেখে অঝোরে কাঁদছেন প্রতিবেশী-স্বজনরা। মাত্র চার ঘণ্টার ব্যবধানে বাবা-ছেলের মৃত্যুতে গোটা গ্রামে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
সোমবার (২৮ জুলাই) চাঁদপুর জেলার মতলব দক্ষিণ উপজেলার উত্তর ডিঙ্গাভাঙ্গা গ্রামে এ হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটে। ওইদিন সন্ধ্যায় পারিবারিক কবরস্থানে বাবা-ছেলেকে পাশাপাশি দাফন করা হয়।
মৃতরা হলেন—উত্তর ডিঙ্গাভাঙ্গা গ্রামের মো. আবুল হাসেম খান (৬০) ও তার বড় ছেলে মো. সোলেমান খান (৩০)।
জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার হঠাৎ অসুস্থ হয়ে মো. সোলেমান খান চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হন। এরপর দুদিনের ব্যবধানে একই হাসপাতালে ভর্তি হন তার বাবা আবুল হাসেম খান। সোমবার ভোর ৪টা ৪০ মিনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান আবুল হাসেম খান।
বাবার মৃত্যুর খবর শুনেই হাসপাতালে থাকা ছেলেও মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। এরপর মাত্র চার ঘণ্টার ব্যবধানে, সকাল ৯টার দিকে তিনিও মৃত্যুবরণ করেন। সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় পারিবারিক কবরস্থানে তাদের দাফন সম্পন্ন হয়।
একই পরিবারের দুজন সদস্যের এভাবে মৃত্যুতে এলাকায় শোকের মাতম চলছে। স্থানীয়রা জানান, মো. আবুল হাসেম খানের চার ছেলে ও তিন মেয়ের মধ্যে সোলেমান ছিলেন বড়। মতলব দক্ষিণ উপজেলা সদরের গাউছিয়া মার্কেটে সোলেমানের একটি দর্জির দোকান ছিল। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন তিনিই।
সোলেমানের ছোট ভাই মো. শাহাজালাল খান বলেন, “এত অল্প সময়ের মধ্যে বাবা ও ভাইকে হারালাম। এই শোক আমরা কীভাবে সহ্য করবো! ভাইয়ের আয়েই চলত পুরো সংসার।”
এ বিষয়ে মতলব দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সালেহ আহমেদ বলেন, “বাবা-ছেলের মৃত্যুর বিষয়টি আমরা জেনেছি। এটি স্বাভাবিক মৃত্যু, এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি।”
একুশে সংবাদ/চাঁ.প্র/এ.জে