আসন্ন ফরিদপুর কোতয়ালী থানা বিএনপি’র কাউন্সিলকে সামনে রেখে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর ফরিদপুর সদর উপজেলা তথা কোতয়ালী থানা বিএনপি’র সভাপতি প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় শীর্ষে উঠে এসেছেন ফরিদপুর জেলা যুবদলের বর্তমান সভাপতি রাজীব হোসেন রাজিবের নাম।
তাঁর স্বচ্ছ রাজনৈতিক পরিচিতি ও রাজপথের লড়াকু মানসিকতা তৃণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক আশার সঞ্চার করেছে। রাজীবকে কোতয়ালী থানা বিএনপি’র সভাপতি হিসেবে দেখতে চায়, এমন দাবি এখন সর্বত্র যা ইতিমধ্যে তার বিগত দিনের আন্দোলন সংগ্রামের ছবি ভিডিও সহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক ভাইরাল হয়েছে।
বিএনপি এবং অঙ্গ সংগঠনের অন্যান্য নেতাকর্মীদের মতে, রাজীব একজন “ক্লিন ইমেজ” সম্পন্ন নেতা।তাঁর রাজনৈতিক জীবনে টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি বা দখলবাজির মতো কোনো অভিযোগের দাগ লাগেনি।এই নির্লোভ ও নিরহংকার ভাবমূর্তি তাঁকে দলের নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষের কাছে এক আস্থার প্রতীক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
তার দীর্ঘ ৩০ বছরের রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে বিএনপি, যুবদল,ছাত্রদল সহ অন্যান্য অঙ্গ সংগঠনের কেন্দ্রঘোষিত প্রতিটি কর্মসূচিতে সক্রিয় অংশগ্রহণ ও সাহসী নেতৃত্ব বিশেষভাবে প্রশংসিত হয়েছে সর্বমহলে। স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে ডাকা অবরোধ ও হরতালের দিনগুলোতে ফরিদপুরের রাজপথে প্রথম সারিতে থেকে তাকে নেতৃত্ব দিতে দেখা গিয়েছে প্রায় সকল কর্মসূচীতে।
রাজিব হোসেন রাজিবের রাজনৈতিক জীবনের বিগত ৩০ বছরের কর্মকান্ড বিশ্লেষন করলে দেখা যায়, তার রাজনৈতিক জীবন আনুষ্ঠানিক ভাবে শুরু হয় ১৯৯৪-৯৫ শিক্ষাবর্ষে সরকারি ইয়াসীন কলেজে ছাত্রছাত্রী সংসদ নির্বাচনে বিপুল ভোটে এজিএস নির্বাচিত হওয়ার মাধ্যমে। পরবর্তীতে তিনি ১৯৯৪-৯৬ শিক্ষাবর্ষে সরকারি ইয়াসীন কলেজ ছাত্রদলের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৯৭ সালে ফরিদপুর জেলা ছাত্রদলের সদস্য এবং ২০০২ সালে ফরিদপুর জেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক পদে অধিষ্ঠিত হন। তিনি ২০১২ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ফরিদপুর জেলা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০২৩-২৪ সালে কেন্দ্রীয় যুবদলের(ফরিদপুর বিভাগ) সহ-সাধারণ সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৮ সালে ফরিদপুর জেলা যুবদলের কমিটি ঘোষনা হলে রাজিব হোসেন রাজিবকে সভাপতি করা হয়। তখন থেকে অদ্যবধি তিনি ফরিদপুর জেলা যুবদলের সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
তার রাজনৈতিক কর্মকান্ড বিশ্লেষন করলে আরো জানা যায়, ১/১১ এর সময় ফরিদপুর থানার মোড়ে অবস্থিত তৎকালীন অবৈধ সিইসি’র বাসভবনে হামলার ঘটনায় তিনি সম্মুখ সারিতে থেকে নেতৃত্ব দেন। এরপর থেকে ফ্যাসীবাদী আওয়ামী সরকারের আমলে তিনি অসংখ্যবার আন্দোলন সংগ্রাম করতে গিয়ে পুলিশের হাতে ধৃত হয়ে কারাভোগ করেন,২০২২ সালে এক আন্দোলন কর্মসূচিতে ফরিদপুর কোর্ট চত্তরে পুলিশ,ছাত্রলীগ,যুবলীগের হেলমেট বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে তিনি মারাত্মকভাবে আহত হন এবং পরবর্তীতে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে যান। বর্তমান সময়েও তার বিরুদ্ধে ফ্যাসিবাদী সরকারের করা বেশ কয়েকটি মামলা আদালতে চলমান। যা দলের প্রতি তাঁর সর্বোচ্চ ত্যাগ ও দায়বদ্ধতার প্রমাণ হিসেবে দেখছেন কর্মীরা।
তৃণমূলের এক কর্মী বলেন, “যে নেতা নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দলের আদর্শতে রাজপথে থাকেন, তিনিই তো আমাদের সত্যিকারের প্রতিনিধি হওয়ার যোগ্য।” ১৮ জুন বুধবার ফরিদপুর জেলা যুবদলের এক কর্মী সম্মেলনে কয়েকজন নেতৃবৃন্দ বলেন, বিগত দিনে যারা জেলা যুবদলের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছে তারা পরবর্তীতে জেলা বিএনপির গুরুত্বপূর্ন পদে পদায়ন হতে চেয়েছে। কিন্তু বর্তমান সভাপতি রাজিবের ক্ষেত্রে বিষয়টি আমরা ভিন্ন দেখছি। তিনি শুধুমাত্র বিএনপি’র একটি থানার সভাপতি হতে চান, যা তার নির্মোহ এবং উদারতারই বর্হিঃপ্রকাশ।
শুধু রাজপথের সংগ্রামেই নয়, রাজীবের অন্যান্য সাংগঠনিক দক্ষতাও প্রশংসার দাবিদার। তিনি ২০১৮ সালে ফরিদপুর জায়েদ মেমোরিয়াল শিশু হাসপাতালের পরিচালনা পরিষদের কার্যকারী সদস্য হিসাবে রেকর্ড সংখ্যক ভোটে নির্বাচিত হন। এছাড়াও তিনি রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি, ফরিদপুর শিল্পকলা একাডেমী , ডায়াবেটিক্স সমিতি সহ বিভিন্ন সেচ্ছসেবী ও জনহিতকর কর্মকান্ডে জড়িত রয়েছেন বলে জানা যায়।
সব মিলিয়ে, রাজীবের জীবন্ত নেতৃত্ব ও আপোষহীন সংগ্রাম তাঁকে একজন অপ্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হিসেবে উপস্থাপন করেছে। কর্মীরা বিশ্বাস করেন, তাঁর “ন্যূনতম অভিযোগহীন ও বিগত দিনের সংগ্রামী ন্যায়পরায়ণ ভাবমূর্তিকেই মূল্যায়ন করা হবে এবং তাঁকেই চূড়ান্তভাবে ফরিদপুর কোতয়ালী থানা বিএনপি’র সভাপতি হিসাবে মনোনীত করবে দলীয় নীতি নির্ধারকেরা”।
একুশে সংবাদ/ফ.প্র/এ.জে