কুমিল্লার তিতাস উপজেলার মৌটুপী গ্রামের মো.পণ্ডিত সরকারের (৭৫) স্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনাকে হত্যার অভিযোগ তুলে প্রতিপক্ষকে ফাঁসানোর অপচেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার সন্ধ্যা ৭টায় তিতাস উপজেলার মৌটুপী গ্রামে। এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, জার্মান প্রবাসী ছবির হোসেন ও একই গ্রামের হোসেন মিয়ার সাথে মৃত পণ্ডিত সরকারের বাড়ির সীমানার পাশে জায়গা পরিমাপ করা হয়। একপর্যায়ে সীমানা নির্ধারণ না হওয়ায় সকলে চলে যায়।
সন্ধ্যা আনুমানিক ৭টায় পণ্ডিত সরকার অসুস্থ বোধ করলে পরিবারের লোকজন তাকে তিতাস উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্মরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
পরে থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন।
এ বিষয়ে এলাকাবাসী তার মৃত্যুকে স্বাভাবিক দাবি করে বলেন, দুপুর বেলা জায়গা পরিমাপ শেষ, সন্ধ্যা ৭টায় নিজ বাড়িতে চেয়ারে বসে পরিবারের লোকজনের সাথে কথা বলা অবস্থায় পণ্ডিত সরকার অসুস্থ বোধ করেন এবং তার বুকে ব্যথা হচ্ছে এই কথা বলে তাকে শোয়াতে বলেন, তার কিছুক্ষণ পর অচেতন হয়ে পড়লে তাৎক্ষণিক পরিবারের লোকজন তিতাস উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্মরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের স্ত্রী মোসা. নুর জাহান (৬৮) বলেন, দুপুরে জায়গা মাপের ওখানে গিয়েছিল, তখন তিনি বলেছেন, যেভাবে দলিল আছে সেভাবে নিতে এবং ছবির মিয়া আমার দেবরের ছেলেকে মারতে আসলে তখন আমার স্বামী বলেছে তোরাকি মাইরা জায়গা নিবি, এই পর্যন্ত ঘটনা। আপনার স্বামীকে কেউ আঘাত করেছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, কেউ আমার স্বামীকে আঘাত করেনি।
অপরদিকে একই গ্রামের বাসিন্দা বিএনপি নেতা মাজেদুল ইসলাম মন্টু বলেন, জায়গার পরিমাপ সমাধান না হওয়ায় আমরা যে যার মতো করে চলে যাই এবং বিকেলে উপজেলা বিএনপির নেতাদের সাথে আমাদের একটি দরবার ছিল আমরা সেখানে ছিলাম, সন্ধ্যা ৭টায় খবর পাই পণ্ডিত চাচাকে সাত্তার নামের কেউ ধাক্কা দিছে এতে পড়ে গিয়ে তিনি মারা গেছেন।
জার্মান প্রবাসী ছবির হোসেন বলেন, বিকেলে আমি নিজে পণ্ডিত ভাইয়ের সাথে কথা বলে আসছি পণ্ডিত ভাই পুরোপুরি সুস্থ, সন্ধ্যায় আমরা উপজেলা বিএনপি নেতৃবৃন্দের সাথে একটি দরবারে ছিলাম হঠাৎ খবর পাই পণ্ডিত ভাই মারা গেছেন। এর বেশি কিছু জানি না। এখন শুনতেছি পণ্ডিত ভাইকে ময়নাতদন্ত করেছে আমাদের নামে হত্যা মামলা দিবে, আমরা এর সঠিক তদন্ত চাই।
তিতাস উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক সাইফুল ইসলাম বলেন, হাসপাতালে আসার পূর্বই রোগীর মৃত্যু হয়েছে এবং পরিবারের লোকজন তাকে বাড়িতে নিয়ে যায় কিন্তু এক ঘণ্টা পর পুনরায় হাসপালে নিয়ে এসে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ এসে লাশ নিয়ে গেছে।
এ বিষয়ে তিতাস থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদ উল্যাহ বলেন, নিহতের শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি, একটি জিডিমূলে আমরা ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেছি। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়া গেলে মৃত্যুর কারণ বলা যাবে।
একুশে সংবাদ/কু.প্র/এ.জে