শেরপুরের শ্রীবরদীতে পাকা ধানে কারেন্ট পোকার (স্থানীয়ভাবে ‘সুলসুলি’ নামে পরিচিত) মারাত্মক আক্রমণে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। উপজেলার গোশাইপুর, রানীশিমুল, বালিজুরী ও হালুয়াহাটিসহ বিভিন্ন এলাকায় একরের পর একর ধানখেত পোকায় আক্রান্ত হয়ে বিনষ্ট হয়ে যাচ্ছে। পোকা দমন করতে প্রতিদিন বিষ ছিটিয়েও সুফল পাচ্ছেন না কৃষকরা। কেউ কেউ আক্রমণকৃত জমিতে আগুন দিয়ে ধোঁয়ার মাধ্যমে পোকা তাড়ানোর চেষ্টা করছেন।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের অভিযোগ, কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে এখনো পর্যন্ত কোনো কার্যকর পদক্ষেপ বা পরামর্শ দেওয়া হয়নি। এতে কৃষি বিভাগের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তারা।
গোশাইপুরের কৃষক আসকর আলী বলেন, "প্রতিদিন বিষ দিচ্ছি, ধোঁয়া দিয়েছি, তাও কাজ হচ্ছে না। অথচ কৃষি বিভাগের কেউ এসে দেখে না।"
একই গ্রামের নজু মিয়া বলেন, "২৫ শতাংশ জমি ও আমার ভাইয়ের ৬৫ শতাংশ জমিতে পোকা ধরেছে। কৃষি অফিসের কেউ আসে না।"
কান্নাজড়িত কণ্ঠে কৃষক আব্দুল কাদের বলেন, "৪০ শতাংশ জমির ধান খেয়ে ফেলেছে সুলসুলি পোকা। খেত দেখলে কান্না আসে।"
বর্গাচাষি তোফাজ্জল হোসেন জানান, "অন্যের জমি বর্গা নিয়ে আবাদ করেছি, এখন পুরো ফসল বিনষ্ট হয়ে গেছে।"
এদিকে, কারেন্ট পোকার পাশাপাশি মাজরা পোকার আক্রমণেও ধানগাছ শুকিয়ে যাচ্ছে এবং মরা শীষ বের হচ্ছে বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা। এতে নিম্ন আয়ের কৃষক পরিবারগুলো পড়েছে চরম দুরবস্থায়।
এই প্রসঙ্গে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাবরিনা আফরিন বলেন, “কিছু জায়গায় আক্রমণ হয়েছে, আমাদের উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তারা মাঠে গিয়ে পরামর্শ দিচ্ছেন। ছুটির দিনেও মাঠে থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।”
তবে বাস্তবে কৃষকদের অভিজ্ঞতা ভিন্ন। তারা বলছেন, “কোনো পরামর্শ দেওয়া হয়নি, কেউ খোঁজও নেয়নি।”
এই অবস্থায় কৃষকদের দাবি, দ্রুত মাঠপর্যায়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হোক এবং ক্ষতিগ্রস্তদের প্রণোদনার আওতায় আনা হোক।
একুশে সংবাদ/শে.প্র/এ.জে
আপনার মতামত লিখুন :