টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলার ঐতিহ্যবাহী নওয়াব শাহী জামে মসজিদে ফুটেছে দুর্লভ শুভ্র ম্যাগনোলিয়া ফুল। সাদা ও পবিত্র সৌন্দর্যে ভরা এই ফুলটি যেন প্রকৃতির অমুল্য রত্ন, যা মসজিদটির উত্তর পাশে ফুটে উঠেছে।
শুভ্র ম্যাগনোলিয়া ফুলটি মসজিদের দেয়ালঘেঁষে দাঁড়িয়ে থাকা একটি গাছ থেকে ফুটেছে। এটি দেখতে যেমন শান্ত, তেমনি হৃদয়কে প্রসন্ন করে। ফুলের পাপড়ি ছড়িয়ে থাকা সাদা আভায় গাছটি যেন আকাশের দিকে উচ্চতা স্পর্শ করতে চায়। বৈশাখ মাসে ঝুম বৃষ্টির মধ্যে ফুলটি আরো বেশি আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে। গাছের পাপড়ি সাজানো দুই সারিতে—উপরের পাপড়ি ছোট, নিচের পাপড়ি তুলনামূলক বড়। ফুলের কেন্দ্রে থাকা শম্বুকের মতো আকর্ষণীয় গর্ভমুণ্ড দর্শকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে।
নওয়াব শাহী জামে মসজিদের দায়িত্বপ্রাপ্ত ইমাম ইদ্রিস হোসাইন জানান, এই ফুলটি বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মুগ্ধ হয়ে "উদয়পদ্ম" নামে অভিহিত করেছিলেন। এই ফুলটি ফোটার পর থেকে নানা প্রজাতির পোকামাকড়ও ফুলের দিকে আকৃষ্ট হয়েছে। তিনি বলেন, "আজ সকাল থেকে এই ফুলটি বেশ মুগ্ধকর হয়ে উঠেছে, তবে কাল সকালের মধ্যে এটি বাসি হয়ে যাবে।"
ম্যাগনোলিয়া ফুলের আদি নাম উদয়পদ্ম, তবে এটি সাধারণভাবে ম্যাগনোলিয়া নামেই পরিচিত। এ ফুল ডালের আগায় সূর্যের মতো ফুটে থাকে, তাই সম্ভবত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এর নাম দিয়েছেন উদয়পদ্ম। ম্যাগনোলিয়ার পাতাগুলি দেখতে কাঁঠালের পাতার মতো হলেও বেশি লম্বাটে এবং কালচে সবুজ রঙের। ফুলটি ফোটে বসন্তের শেষ থেকে বর্ষাকাল পর্যন্ত, তবে গ্রীষ্মকালে এটি বেশি ফুটে থাকে।
ম্যাগনোলিয়া ফুলের মধ্যে আকর্ষণীয় বিশেষত্ব হলো এর কেন্দ্রে শম্বুকের মতো জননাঙ্গ থাকে, যা পরবর্তীতে বড় হয়ে ফলের আকারে পরিণত হয়। এ ফুলটি মূলত যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা ও টেক্সাসে আদি, তবে এখন এশিয়া, মেক্সিকো, ভারতীয় দ্বীপপুঞ্জ, মালয়েশিয়া ও অন্যান্য অঞ্চলেও প্রচলিত। ম্যাগনোলিয়া ফুলের পাতা ও ফুল থেকে তেল নিষ্কাশন করা হয় এবং এটি ম্যালেরিয়া ও বাতজ্বর চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়।
ম্যাগনোলিয়া ফুল বাংলাদেশে সংরক্ষিত উদ্ভিদ হিসেবে গণ্য এবং এই গাছ কাটা নিষিদ্ধ।
একুশে সংবাদ/ট.প্র/এ.জে