AB Bank
ঢাকা সোমবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

স্বীকৃতি দিতে নারাজ স্বামী, ৭ দিনের বাচ্চা নিয়ে অনশনে স্ত্রী


Ekushey Sangbad
জেলা প্রতিনিধি,রাজশাহী
০৪:৪০ পিএম, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
স্বীকৃতি দিতে নারাজ স্বামী, ৭ দিনের বাচ্চা নিয়ে অনশনে স্ত্রী

এলাকায় থাকতে দেখা সাক্ষাতের মাধ্যমে পরিচয়। তারপর ভালবাসা থেকে ঢাকায় গিয়ে বিয়ে। দেড় বছরের অধিক সময়ের সংসারের জীবনে সদ্য ভূমিষ্ঠ হয়েছে একটি কন্যা সন্তান। এসব পেছনে ফেলে নিজের স্ত্রী ও কন্যা শিশু সন্তানকে অস্বীকার করছেন স্বামী সাফিউল্লাহ।

 

স্ত্রীর ও সন্তানের স্বীকৃতির দাবিতে দুইদিন থেকে স্বামী সাফিউল্লার বাড়ীর সামনে অবস্থান করছেন স্ত্রী। সাফিউল্লার মাসহ আত্নীয় স্বজনরাও তাকে বাড়ীর থেকে ঘাড়ধাক্কা দিয়ে তাড়িয়ে দিচ্ছেন এমন অভিযোগ করছেন ভূক্তভোগী নারী।

 

এমন চাঞ্চল্য ঘটনা ঘটেছে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার মাটিকাটা ইউনিয়নের উজানপাড়া গ্রামে।

 

সাফিউল্লার ওই গ্রামের মৃত মজিবুর রহমানের ছেলে। এর আগেও সাফিউল্লাহ এমন নারী ঘটিত একাধিক ঘটনা ঘটিয়েছে বলে এলাকাবাসী জানায়। ওই নারীর বাড়ী পাশ্ববর্তী সাহাব্দিপুর গ্রামে।

 

সাফিউল্লাহ ওই নারীকে অস্বীকার করলে ৯৯৯ নম্বরে কল দিয়ে গোদাগাড়ী মডেল থানা পুলিশ হাজির হয়। এছাড়াও নারী ও শিশু নির্যাতনের স্বীকার হচ্ছেন বলে ওই নারী অভিযোগ করেন।

 

ওই নারী অভিযোগ করেন, এলাকায় থাকতে আমাদের পরিচয়। পরে ঢাকায় গিয়ে আমরা মৌলভী দিয়ে কালেমা পড়ে বিয়ে করে একসাথে বসবাস করতে থাকি। বিয়ে রেজিস্ট্রি করা হয়নি। সরল বিশ্বাস ও ভালোবাসায় আমরা ঘর-সংসার করতে থাকি। ঢাকার হেমায়েতপুর এলাকায় আমার স্বামী তেল, গুড়া হলুদ-মরিচসহ বিভিন্ন জিনিসের দোকান ভাড়া নিয়ে ব্যবসা শুরু করে। সেই ব্যবসায় লোকসান হলে আমার বাড়ী থেকে টাকা পয়সা নিয়ে গিয়ে দেয়। এছাড়াও আমার গয়নাগাটি বিক্রি করে তকে সহযোগিতা করি। পরে সে আরো টাকা পয়সার জন্য চাপ দিতে থাকে। শুধু এখানেই শেষ না বিভিন্ন সময়ে সে খারাপ আচরণ করতো। 

 

গত ৪ সেপ্টেম্বর তার বাবা মারা গেলে সে বাসায় চলে আসে। আমার বাচ্চা হয় তার পরের দিন গত ৫ সেপ্টেম্বর সকালে। সে আর ঢাকা না যাওয়াতে আমি গত ১০ সেপ্টেম্বর দুপুরে আমার স্বামী সাফিউল্লার বাড়ীতে আসি। সেই সময় সে বাড়ীতে ছিলো। পরে সে সটকে পরে। সে আমাকে বিয়ে করেছে ও সন্তান হয়েছে এটা সে অস্বীকার করে। পরে তার মাসহ আত্নীয়রা আমাকে বাড়ী থেকে তাড়িয়ে দিতে চাই।

 

নিরুপাই হয়ে গতকাল রাতে ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিয়ে পুলিশকে অবহিত করি। গোদাগাড়ী থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে সব কিছু জানে। পুলিশ বলে বিয়ে করে থাকলে কাবিননামাসহ কাগজ পত্রাদি দেখাতে। আমার এইসব কাগজ না থাকায় পুলিশকে দেখাতে পারিনি। ঢাকায় বিয়ে হওয়াতে যে মৌলভীর কাছে বিয়ে করা হয়েছে সেখানে সব কিছু আছে ও সেই হুজুর সব বলবে। আমি কোন মিথ্যার আশ্রয় নিচ্ছি না। ঢাকার ৪ জায়গায় সে বাসাবাড়ী ভাড়া করে আমাকে নিয়ে থেকেছে এটা সবাই জানে।

 

বিয়ের কাগজ পত্রাদি না থাকায় পুলিশের কিছুই করনীয় নেই বলে জানিয়েছে।

 

তিনি আরো অভিযোগ করেন, মাত্র ৭ দিনের শিশু বাচ্চা যদি তার না হয় প্রয়োজনে ডিএনএ পরীক্ষা করুক। যদি মিথ্যা হয় তাহলে যে সাজা আমাকে দিবে আমি তা মাথা পেতে নিবো। ওই নারী আরো জানান, আমি মায়ের অনেক টাকা পয়াসা নষ্ট করেছি বিধায় আমার মা আমাকে বাড়ীতে আশ্রয় দিচ্ছেন না। ফলে আমি এই ৭ দিনের শিশু সন্তান নিয়ে নিরুপাই হয়ে পড়েছি। এর বিচার আমি চাই। স্ত্রী-সন্তানের স্বীকৃতি না পেয়ে এখান থেকে যাবো না।

 

এই ঘটনায় স্থানীয়ভাবে মাটিকাটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহেল রানা, স্থানীয় ইউপি সদস্য তোজাম্মেলহকসহ ছেলের আত্নীয় স্বজনরা মিমাংসার জন্য বসেছিলো। সেখানে প্রথমে সফিউল্লাহ ওই নারীকে বিয়ে করেছে বলে স্বীকার করলেও ওই সন্তান তার নয় বলে দাবি করে।

 

স্থানীয় ইউপি সদস্য তোজাম্মেল হক বলেন, আমরা খুব চেষ্টা করেছি বিষয়টি মিমাংসা করার। তবে বিয়ের কাগজপত্র না দেখাতে পারায় কিছু করা যায়নি। আমরা থানা পুলিকে সবকিছু অবগত করেছি তারাই কিছু করতে পারবে বলে জানান।

 

মাটিকাটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহেল রানা বলেন, প্রথমে আমরা মনে করেছিলাম মেয়েটা হয়তো মিথ্যার আশ্রয় নিচ্ছে। তবে আমরা খোঁজ নিয়ে জেনেছি ছেলেটা ১৮ মাস বাড়ীতে ছিলো না। ছেলের বন্ধুবান্ধবরা জানিয়েছে তারা বিয়ে করেছে। আমরা স্থানীয়ভাবে বসে বিষয়টি মিমাংসা করার চেষ্ঠা করেছি। কিন্তু বিয়ের কাগজ পত্রাদি না থাকায় আইনি কোন পদক্ষেপ নিতে পারা যায়নি। তবে বোঝা যাচ্ছে ছেলেটা স্ত্রী-সন্তান অস্বীকার করে অন্যায় করছে। থানা পুলিশ শক্ত ভূমিকা নিয়ে এর সমাধান হয়ে যেতে পারে বলে জানান।

 

এই বিষয়ে গোদাগাড়ী মডেল থানার ওসি কামরুল ইসলাম বলেন, ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিয়ে ওই নারী অভিযোগ জানিয়েছিল। আমি সেখানে পুলিশ পাঠিয়েছিলাম। ছেলে অস্বীকার করছে ওই নারী ও সন্তানকে। তাদের বিয়ে কাগজপত্রের প্রামাণও নেই। তাই আমরা সেভাবে কিছু করতে পারছিনা। ছেলেটাও বাড়ী থেকে সটকে পড়েছে। ঢাকায় বিয়ে করে ঘর-সাংসার করেছে। সে ঢাকায় মামলা করতে পারবে বলে জানায়।

 

একুশে সংবাদ/আ.ব.প্র/জাহা

Link copied!