মানিকগঞ্জের হরিরামপুরের ধূলশুড়া ইউনিয়নের আবিধারা এলাকায় ডাম্পিং এর কাজ চলমান অবস্থায় হঠাৎ করেই দেখা দেয় ভয়াবহ নদী ভাঙন। সোমবার রাত দশটার দিকে হঠাৎ ভয়াবহ দাবা ভাঙন দেখা দিলে এক ঘণ্টার মধ্যেই ১২টি বসত বাড়ি বিলীন হয়ে যায়। এতে এলাকার জনমনে আতংক বিরাজ করে।
সরেজমিনে জানা যায়, বেশ কয়েকদিন ধরেই আবিধারা এলাকায় আপদকালীন নদী শাসনের কাজ চলছে। এর মধ্যেই সোমবার রাত দশটার দিকে দাবা ভাঙন দেয়। এতে করে এক ঘণ্টার মধ্যে ১২টি পরিবারের ভিটে বাড়িসহ গাছপালা বিলীন হয়ে যায়। ঝুঁকির মধ্যে পরে আবিধারা এলাকার ৪৬নং চর মকুন্দিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
ভাঙনের কবলে পড়ে ফাটল ধরে বিদ্যালয়টির ভবন। বিদ্যালয়টির একটি অংশ অনেকটাই বিলীনের পথে। এতে করে অনির্দিষ্টকালের বন্ধ করা হয়েছে বিদ্যালয়। এছাড়াও ধুলশুড়া থেকে দোহার নবাবগঞ্জ যাতায়াতের একমাত্র ইট সোলিং রাস্তার প্রায় ১০০ ফিট নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এর ফলে এলাকাবাসীর মাঝে আতংক বিরাজ করছে। খবর পেয়ে মঙ্গলবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন মানিকগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাঈন উদ্দীন ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসন সানোয়ারুল হক।
আবিধারা গ্রামের কাঞ্চন বেপারি জানান, হঠাৎ করেই রাতে একঘণ্টার মধ্যেই চোখের সামনে দিয়ে সব শ্যাষ হইয়া গেল। কিছুই করার ছিল না। জিনিসপত্রও সরানোর কেউ সুযোগ পাইনি। এমন ভাঙন আমি আর কোনো দিন দেখি নাই।
ইসলামপুর গ্রামের গৃহবধূ ময়না বেগম জানান, রাতে কোনো কিছু বুঝে উঠার আগেই এক ঘণ্টার মধ্যেই আমার ঘরসহ ভিটেবাড়ি বিলীন হয়ে যায়। ঘরে সরিষা, ধান, তিল ও ভুট্টা ছিল। কিছুই সরাইতে পারি নাই। আমার সব শেষ হয়ে গেছে।
ধূলশুড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহেদ খান জানান, আমার এখানে ডাম্পিং এর কাজ চলছে। হঠাৎ করেই আমার কাছে মনে হয়েছে ভূমিকম্প হচ্ছে। বড় জোর এক ঘণ্টা হবে, এর মধ্যেই ১২টি বাড়ি শেষ। পাশেই প্রাইমারি স্কুল। যেকোন সময় চলে যাবে। গতকাল চোখের সামনে বাড়িগুলো শেষ হতে দেখেছি। লোকজনের সাথে সারারাত পদ্মার পাড়েই ছিলাম।
মানিকগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাঈন উদ্দীন ইনকিলাবকে বলেন, এখানে কয়েকদিন ধরেই পানি উন্নয়ন বিভাগ থেকে আপদকালীন সময়ে ১২০০ মিটার ডাম্পিং এর কাজ চলছে। হঠাৎ করেই সোমবার রাতে কয়েকটি বাড়ি বিলীন হয়ে যায়। আমি সকাল থেকে স্পটে আছি। ভাঙন কবলিত স্থানে জরুরি ভিত্তিতে জিও ব্যাগের পাশাপাশি, জিও টিউব ও ডাম্পিং শুরু করেছি।
একুশে সংবাদ/সা.খ.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :