ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারী উপজেলার দফায় দফায় বাড়ছে গো-খাদ্য দাম, এতে বিপাকে পরেছেন উপজেলার পশু পালনকারীরা ও খামারিরা। তাদের গবাদিপশু নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন অনেকে। খাবারের দাম বাড়ায় পশুকে পর্যাপ্ত পরিমাণে খাবার দিতে পারছেন না অনেকে পশু পালন কারীরা। কেউ কেউ আবার কমদামে গরু ছাগল বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। এছাড়া গো-খাদ্যের বাজারের ঊর্ধ্বগতির কারণে দুগ্ধ উৎপাদনকারী খামারিরাও লোকসানের মুখে পড়েছেন।
একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
উপজেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগের তথ্যমতে, উপজেলায় ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ১০০ খামারি রয়েছেন।
এসব খামারির গরুকে খড় ও ঘাসের পাশাপাশি গমের ভুসি, খেসারির ভুসি, বুটের ভুসি, বুটের খোসাসহ বিভিন্ন ধরনের দানাদার খাদ্য খাওয়ানো হয়। কিন্তু গত ১৫ দিনের ব্যবধানে সব গো-খাদ্যের দাম কেজিপ্রতি পাঁচ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে এবং বস্তাপ্রতি বেড়েছে ১৫০-৩০০ টাকা।
গো-খাদ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কারণে দুধ উৎপাদন ও পশু মোটাতাজাকরণে ব্যয় বেড়েছে কৃষক ও খামারিদের। এতে গবাদি পশুপালনে হিমশিম খাচ্ছেন তারা।
বোয়ালমারী উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজার ঘুরে ক্রেতা ও বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১৫ দিন আগেও গম, খেসারি ও বুটের ভুসির কেজি ছিল ৪০ টাকা। তা বেড়ে গমের ভুসি প্রতি কেজি ৫৫-৬০ টাকা, খেসারির ভুসি ৫০-৫৫ টাকা, বুটের ভুসি৫০- ৬০ টাকা হয়েছে। এছাড়া খৈল, মাসকলাইয়ের ভুসি, মসুরের ভুসি, ভুট্টার আটা, গমের আটা, সয়াবিনের খৈল, খুদ, চিটা গুড়, ক্যাটল ফিডসহ সব গো-খাদ্যের দাম বর্তমানে কেজিপ্রতি ৫-১০ টাকা বেশিতে বিক্রি হচ্ছে। একশো আঁটি খড় ৯০০ টাকা থেকে বেড়ে ১২৫০ টাকা হয়েছে।
বোয়ালমারী উপজেলার ময়না গ্রামের হাচান বিশ্বাস বলেন, তার খামারে ১০টি গাভী আছে। প্রতিদিন তার এক বস্তা করে গমের ভুসি ও এক বস্তা বুটের খোসা লাগে। কিন্তু হঠাৎ করে ভুসি ও বুটের খোসার দাম বাড়ায় তিনি বিপাকে পড়েছেন।
তিনি আরো বলেন, গরু নিয়ে খুব কষ্টে আছি। ভুসির দাম বাড়ায় গাভীগুলোকে খাবার দিতে পারছি না। এজন্য গরুর স্বাস্থ্য খারাপ হচ্ছে, দুধও কম হচ্ছে। খড়, খৈল, ভুসি ও খুদের যে দাম, তাতে ৫০-৬০ টাকা কেজি দুধ বিক্রি করে পোষাচ্ছে না।
এ বিষয়ে বোয়ালমারী উপজেলার ময়না ইউনিয়ন গৌড়িপুর গ্রামের একাধিক খামারি জানান, খৈল, ভুসি, খুদসহ গরুর সব খাবারের মূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে; তাতে গরু লালনপালন করা খুব কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। দাম বেশি হওয়ায় দানাদার খাদ্য দিতে না পেরে ঘাস ও খড় বেশি করে খাওয়ানো হচ্ছে। চালের চেয়ে গো-খাদ্যের দাম বর্তমানে বেশি। এজন্য সরকারকে এ বিষয়ে দৃষ্টি দেওয়ার অনুরোধ করছি।
বোয়ালমারী উপজেলার প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা বলেন, কৃষক ও খামারিদের আধুনিক পদ্ধতিতে গরু মোটাতাজাকরণসহ সব ধরনের সেবা ও পরামর্শ আমরা দিচ্ছি। গো-খাদ্যের দাম বাড়লে সাধারণ কৃষক ও খামারিদের ওপর বাড়তি চাপ পড়ে। বিদেশি কাঁচামালের দাম বৃদ্ধির কারণে গো-খাদ্যের দামের ওপর প্রভাব পড়ছে বলে তিনি মনে করেন।
একুশে সংবাদ/স.চ.প্র/জাহা
