ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) আবার সিনিয়র কর্তৃক নবীন শিক্ষার্থীকে র্যাগিংয়ের অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের হিউমান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র। তার অভিযোগ ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের কয়েকজন শিক্ষার্থী তাকে র্যাগিং করে। এ ঘটনায় শনিবার ভুক্তভোগী তার বাবাকে সাথে নিয়ে রেজিস্ট্রার, ছাত্র উপদেষ্টা, প্রক্টর ও বিভাগের সভাপতি বরাবর লিখিত অভিযোগ দেয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম দিনেই এমন ঘটনার সম্মুখীন হয়ে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীর। এদিকে এ ঘটনায় রোববার পাঁচ সদস্যদের তদন্ত কমিটি গঠন করে কর্তৃপক্ষ।
কমিটিতে ব্যবসা প্রশাসন অনুষদের ডিন প্রফেসর সাইফুল ইসলামকে আহ্বায়ক ও ডেপুটি রেজিস্ট্রার (শিক্ষা) আলীবদ্দীন খানকে সদস্য সচিব করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- ছাত্র উপদেষ্টা প্রফেসর ড. শেলীনা নাসরীন, আইন প্রশাসক প্রফেসর ড. আনিচুর রহমান ও সহকারী প্রক্টর মিঠুন বৈরাগী। আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। রোববার প্রক্টর ও এন্টি র্যাগিং ভিজিলেন্স কমিটির আহবায়ক প্রফেসর ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, আমি ওই শিক্ষার্থীর বিভাগের সভাপতিকে চিঠি পাঠিয়েছি। একজন সহকারী প্রক্টরকে তার সার্বিক নিরাপত্তার জন্য খোঁজ খবর রাখতে নির্দেশনা দিয়েছি।
অভিযোগপত্র সূত্রে জানা গেছে, গত ২ সেপ্টেম্বর ওরিয়েন্টেশন ক্লাসের পর ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের কয়েকজন ছাত্র ভুক্তভোগীকে র্যাগিংয়ের নামে চরম খারাপ ব্যবহার করে। ওইদিন ভুক্তভোগীকে ওরিয়েন্টেশন ক্লাসের পর জিমনেশিয়ামের পেছনে নিয়ে ও সন্ধ্যায় সাদ্দাম হোসেন হলের পাশে নিয়ে ম্যানার শেখানোর নামে দফায় দফায় র্যাগ দেওয়া হয়। তার অভিযোগ ওই একই বিভাগের হিশাম নাজির শুভ, মিজানুর রহমান ইমন, শাহরিয়ার পুলক, শেখ সালাউদ্দীন সাকিব ও সাদমান সাকিব আকিব সহ বেশ কয়েকজন এ ঘটনা ঘটায়।
অভিযোগপত্রে আরও উল্লেখ রয়েছে, ওইদিন দুপুরে তাকে যখন র্যাগ দেওয়া হচ্ছিল তখন ক্যাম্পাসে ‘র্যাগিং ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে’ মর্মে মাইকিং চলছিল। পরদিন বিকালে তাদের বিভাগের খেলায় আসতে দেরি করায় আবারো বাজে ব্যবহার করেন তারা। পরে তারা ভুক্তভোগীকে দেরিতে আসার কারণ জিজ্ঞেস করে নানাভাবে হেনস্তা করেন তারা। পরে সিনিয়রদের ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট না পাঠানোর কারণে আবারো তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন তারা। এসময় তাদের কথা না শুনলে ভুক্তভোগীকে বিভিন্নভাবে হুমকিধামকি দেওয়া হয়। পরে কৌশলে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী সেখান থেকে পালিয়ে বাড়ি চলে যায়।
বিষয়টি নিয়ে অভিযুক্ত শুভ ও ইমনের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তাদের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক প্রফেসর সাইফুল ইসলাম বলেন, আমি এখনো চিঠি হাতে পাইনি। সোমবার চিঠি হাতে পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার (দায়িত্বরত ভিসি) প্রফেসর ড. আলমগীর হোসেন ভূঁইয়া বলেন, অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাৎক্ষণিক আমরা তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। ঘটনার সত্যতা প্রমাণিত হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনানুযায়ী ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে। ওই শিক্ষার্থীর অভিভাবকের অনুরোধে তাকে নিরাপত্তার স্বার্থে আবাসিক হলে অস্থায়ীভাবে কিছুদিন রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
একুশে সংবাদ/আ.হ.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :