আড়াই একর জমিতে সফলতার স্বপ্ন দেখছে লক্ষ্মীপুরের সাইফুল।লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার দক্ষিণ হামছাদী ইউনিয়নের গংগাপুর গ্রামের সৈয়দআহমদ এর পুত্র ও প্রবাস ফেরত সাইফুল স্বপ্ন দেখছে আড়াই একর জমিতে চালানো মাল্টাহবিভিন্ন গাছের উপর। একই উপজেলার শাকচর গ্রামের গড়ে তোলেন বাগান। গত বছর মাল্টা চাষ করে লাভবান হওয়ার কারণে এ বছর উৎপাদন বাড়ায়।
পাশাপাশি কমলা, চিনা মাল্টা, পাকিস্তানিসহ বিভিন্ন দেশের মাল্টা চাষ করেছেন সেই। তার স্বপ্ন তার বাগান কে নিয়ে। কিন্তু সরকারী সহযোগীতা না পাওয়ায় হতাশ সেই। বেসরকারী ভাবে একটি এনজিও সহযোগীতা পেলেও পায়নি সরকারী কোন অনুদান, বীজ্র, সার,কীটনাশক।
১১ সেপ্টেম্বর (সোমবার) দুপুরে গিয়ে দেখা যায় সাইফুলের বাগারে মাল্টা, কমলা, বারমাসি আম, ড্রাগন, শাকসবজিসহ বিভিন্ন কৃষি পন্য রয়েছে।এ ব্যাপারে সাইফুল ইসলাম জানান, দীর্ঘ সৌদি আরব থাকার পর ২০১৪ সালে দেশে এসে আড়াই একর জমি ক্রয় করে বাগান শুরু করে আবার বিদেশ চলে যায়। পরে ২০২১ সালে করোনা মহামারী শুরু হলে সৌদি আরব দেশে দেশে চলে এসে বাগানে সময় দেওয়া শুরু করে।
বিভিন্ন সময় বিভিন্ন প্রজাতির গাছ ও কৃষি পন্য চাষবাদা করলে গত বছর থেকে দেশীয় মাল্টা, কমলা ও বারমাসি আম গাছ লাগানো শুরু করে। এর মধ্যে মাল্টা ও কমলা চাহিদা বেড়ে যাওয়ার কারণে চলতি বছর ২০০ শতাধিক মাল্টা, ২৭০ টি কমলা গাছের রোপন করেন। এ ছাড়াও ড্রাগন, পেপে, শসা, কলাসহ বিভিন্ন কৃষি পন্য চাষাবাদ শুরু করে।
চলতি বছরে তার এ পর্যন্ত প্রায় ১০ লাখ ব্যয় হয়ে গেছে। বর্তমানে তার পিতা সৈয়দ আহমদ ও মাসিক বেতন ১৫০০ টাকা দিয়ে একজন শ্রমিক নিয়োগ করেন। তিনি আশা করেন চলতি বছর ফলন ভাল হলে মাল্টা ও কমলা থেকে ২০-৩০ লাখ টাকা আয় করতে পারবে। তবে তার বাগানে পাকা ড্রেন তৈরি এবং কৃষি পন্য, ব্রীজ, কীটনাশক, সার সরকারী ভাবে সহযোগীতা পেলে উৎপাদন বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে তার।
সম্প্রতি জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড, মো: জাকির হোসেন তার বাগার পরিদর্শন করে সহযোগীতা করার আশ্বাস দিলেও এখনো কোন ধরনের সহায়তা পাইনি বলে জানান সাইফুল।
সাইফুলের পিতা সৈয়দ আহমদ বলেন ছেলের পাশাপাশি তিনিও বাগানে সময় দেয় সহযোগীতা করেন। তিনি বলেন মাল্টা ও কমলা কিনতে প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ আসে।
আগামী ২-১ মাস পর মাল্টা ও কমলা সাইজ পরিপূর্ণ হবে। তিনি বলেন সরকার ও কৃষি সহযোগীতা পেলে জেলার চাহিদা মেটাতে তারা উৎপাদন বাড়াবে।বেসরকারী এনজিও কোডেক এর কৃষি কর্মকর্তা মো: কাউছার জানান, কোডেক সমন্বিত ইউনিট প্রকল্প থেকে সাইফুল কে তারা এককালিন নগদ ২০ হাজার টাকা এবং ২ বছরে সবজি চাষের জন্য ২০ হাজার টাকা ব্রীজ প্রদান করা হয়েছে। এ ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের কৃষি পরামর্শ দিয়ে সহযোগীতা করা হচ্ছে।
লক্ষ্মীপুর জেলা কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের কৃষি বিপণন কর্মকর্তা মোঃ মনির হোসেন জানান, ২০২২ সালে সাইফুলের বাগানটি সন্ধান পাই। সেই একজন পরিশ্রমী উদ্যোক্তা নিজের পরিশ্রমের মাধ্যমে বাগানটি সুন্দর করে সাজিয়েছেন। গতবছর ভালো ফলন পেয়েছে। এ বছর বাগানের পরিধি আরও বাড়িয়েছে। তার মার্কেটিং ও পরিচর্যা বিষয়ে বেশ কয়েকটি সমস্যা ছিল তা আমরা সমাধান করে দিয়েছ। কোথায় কি ভাবে পন্য বিক্রি করলে লাভবান সেই বিষয়ে কিছু দিক নির্দেশনা প্রদান করা হয়। তবে তার বাগানে পানির লাইনে এখনো সমস্যা আছে বিষয়টি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরকে অনুরোধ করেছি সহযোগীতা করার জন্য। কৃষি বিভাগ তার বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে তা করতে পারে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. মো: জাকির হোসেন বলেন, আমরা প্রান্তিক কৃষকদের নিয়ে কাজ করি মূলত। সাইফুলের মাল্টা ও কমলা বাগান দেখে এসেছি। তাকে কি ভাবে সহযোগীতা করা যায় উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার মাধ্যমে তার আলোচনা করা হবে।
একুশে সংবাদ/স ক
আপনার মতামত লিখুন :