AB Bank
ঢাকা মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

কালাইয়ে সাজনাতে লাভের মুখ দেখছেন কৃষকরা


Ekushey Sangbad
আব্দুল্লাহ সউদ, কালাই, জয়পুরহাট
০৪:৫৬ পিএম, ১ এপ্রিল, ২০২৩
কালাইয়ে সাজনাতে লাভের মুখ দেখছেন কৃষকরা

আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় চলতি মৌসুমে সাজনের ফলন ভালো হয়েছে। এদিকে বাজারে ভালো দাম পেয়ে খুশি গরীব কৃষকরা।

 

মুখরোচক ও পুষ্টিগুনে ভরপুর সাজনে ডাটা। এই সাজনে ডাটা খেলে ভিটামিনের অভাব পূরণ হয়ে থাকে। সাজনে চাষীরা স্থানীয়ভাবে বিক্রি করে এলাকার চাহিদা পূরণ করে থাকে। এছাড়া পাইকাররা ক্রয় করে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্রি করে থাকে। তাছাড়া অন্যান্য বছরের ন্যায় অনেক পাইকারও এসে কিনে নিয়ে যায়। বলা যেতে পারে দেশের বৃক্ষাদি ফলের মধ্যে সাজনের ডাটা খুব কম সময়ের মধ্যে উপযোগী হয়ে থাকে। সাধারণত ফাগুন মাসের দিকে ফুল ধরা শুরু হলে চৈত্র মাসের মাঝামাঝি সময়ে পরিপূর্ণ হয়ে উঠে এবং খাওয়ার উপযোগী হয়ে যায়।

 

জয়পুরহাটে কালাই উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভাসহ হাট-বাজারে গ্রীষ্মকালীন সবজি সাজনা ডাটার প্রচুর আমদানি হয়। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় এবং প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ না হওয়ায় গত বছরের চেয়ে এবার সাজনে ডাটার উৎপাদন ব্যাপক হারে বেড়েছে। ফলে হাটবাজারে প্রচুর পরিমাণে উঠছে সাজনে ডাটা। বর্তমানে হাট-বাজারে চাহিদার পাশাপাশি এর দামও বেশি। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার গাছে গাছে প্রচুর সাজনে ডাটা ধরেছে। শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত রাস্তার দু’পাশে, ঘর বাড়ির আশে পাশে, প্রতিটি গাছে ঝুলছে সাজনে ডাটা।এক সময় বাড়ির আশপাশের সীমানায় সাজনের গাছ লাগানো হতো। তবে সময় পরিক্রমায় এবং চাহিদা থাকায় কৃষকরা  ফসলি জমিতে সাজনের চাষ করছেন। পরিকল্পিতভাবে সাজনের চাষ করে লাভবানও হচ্ছেন।

 

কৃষিপণ্যের মধ্যে এতো দ্রুত সময়ের মধ্যে অন্য আর কোনো ফল পাওয়া যায় না বলা যায়। উঠতি সময়ে এর দাম থাকে আকাশ ছোঁয়া, সাধারণ লোকের ক্রয়-ক্ষমতার মধ্যে থাকে না। আর এই সাজনে ডাটা খুবই অল্প সময়ের ফসল হওয়ায় বছরের অন্য কোন সময় পাওয়া যায় না। পুষ্টিগুণ ও সুস্বাধু হওয়ায় যে কোন বয়সের লোক খেতে পারে। এই সাজনের ডাটার জন্যে গাছে কোনো রাসায়নিক সার বা ওষুধ ব্যবহার করতে হয় না, বিধায় ভালো জেনে সবাই আগ্রহ ভরে খেতে পারে। মৌসুমী এই সবজির ব্যাপক চাহিদা থাকে বাজারে।

 

স্থানীয় হাট-বাজারগুলোতে মুখরোচক ও পুষ্টিগুণে ভরপুর সাজনে ডাটার চাহিদাও রয়েছে ব্যাপক।মৌসুমের শুরুতে প্রতি কেজি ১২০-১৪০ টাকায় বিক্রি হলেও বর্তমানে হাটবাজারে এর দাম কমে এসেছে। বর্তমানে পাইকারি ৬০ থেকে ৭০টাকা ও খুচরা বাজারে ৮০ থেকে ৯০ টাকা কেজিতে বিক্রি করা হচ্ছে সাজনে ডাটা।

 

কালাইয়ে হাতিয়র বাজারের কাঁচা তরকারি বিক্রেতা আব্দুল মোমিন বলেন, মৌসুমির শুরুতে এবছর ১২০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে সাজনে। সময় বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে এর দাম কমতে শুরু করেছে। বর্তমানে বাজারে ৮০ থেকে ৯০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে সজনের ডাটা। আমদানি বেশি ও বাজারে বেশ চাহিদা রয়েছে।

 

কালাই পাইকারি বাজারে বিক্রেতা আমিনুর ইসলাম বলেন, সাজনে ডাটা এ উপজেলার সব অঞ্চলে এর চাহিদা রয়েছে। আমি প্রতিবছর সজনে ডাটাগুলো চট্টগ্রাম,ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলাতে সরবরাহ করে থাকি। কালাই অঞ্চলে ব্যাপক সাজনে ডাটার গাছ আছে। এ বছর ঝড়-বৃষ্টি কম হওয়ার কারণে সাজনে ডাটার ফলন বেশি। গত বছরের তুলনায় এবছর লাভ বেশি হচ্ছে।

 

সাজনে বিক্রি করতে আসা কৃষক শাহীন হোসেন বলেন, সাজনে চাষ করা অন্য গাছের চেয়ে সহজ, কারণ সাজনের গাছের ডাল থেকে নতুন গাছের সৃষ্টি হয়। এবছর ডাল রোপণ করলে আগামী বছর গাছে ফলন হয়। বাড়তি খরচ হয় না। বাড়িতে বড় ৪/৫ টা গাছ থাকলে বছরে ৭/৮ হাজার টাকা আয় করা যায়। আমার বাড়িতে ৬টা গাছ আছে। ফলনও বেশি হয়েছে। শুরুতে ভালো দাম পেয়েছি। এখনও দুইটা গাছে সাজনে আছে। এই দাম থাকলেও ৪ হাজার টাকায় বিক্রি পারবো। যদি বাণিজ্যিকভাবে সাজনে ডাটা চাষ করা যায়। তাহলে এটি কৃষিতে অনেক সাফল্য বয়ে আনবে। একই সঙ্গে অর্থনীতিতে অনেক ভূমিকা রাখবে।

 

কালাই উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ ফয়সাল নাহিদ পবিত্র জানান, উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে সজনে ডাটা দেহের কোলেষ্টোরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। তাই সাজনে ডাটা খাওয়া উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের জন্য বেশি উপকারী। পেটের সমস্যা সমাধানে সজনে হজম ব্যাপক ভাবে কার্যকরী। পেটে গ্যাস হলে বদহজম হলে এবং পেটে ব্যাথা হলে সজনের তৈরি তরকারি খেয়ে নিন। দেখবেন পেটের গোলমাল অনেক উপশম হয়ে যাবে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে মানুষের শরীরে চিনির সটিক মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রেখে ডায়াবেটিসের বিরুদ্ধে লড়তে সাহায্য করে সাজনে ডাটা। তাই ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য সাজনে খুবই উপকারী সবজি।

 

কালাই উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ অরুন চন্দ্র রায় জানান, বীজ রোপণ ছাড়াই শুধু ডাটা বসত বাড়ির আশেপাশে রাস্তার ধারে পুকুর পাড়ে এমনকি মাঠের ফসলের আইলে  চাষ করা যায়। তাই উপজেলার চাষীদের সাজনে চাষে বিনা পুঁজিতে বাণিজ্যিকভাবে সাজনের বাগান করতে উৎসাহিত করা হয়েছে। অনেকেই এ সাজনে চাষাবাদ করে লাভবান হচ্ছেন।

একুশে সংবাদ.কম/এ.এ.আ.স/বি.এস

Link copied!