AB Bank
ঢাকা বুধবার, ০১ মে, ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

নতুন করে চালু ওয়াটার বাস সার্ভিস


Ekushey Sangbad

০৪:৪২ এএম, এপ্রিল ২২, ২০১৪
নতুন করে চালু ওয়াটার বাস সার্ভিস

bbbbbbbbbbbbএকুশে সংবাদ : ঢাকঢোল পিটিয়ে সদরঘাট থেকে গাবতলী পর্যন্ত ওয়াটার বাস সার্ভিস চালু হয়েছিল অনেক স্বপ্ন নিয়ে। মহতী এই উদ্যোগের অগ্রভাগে ছিলেন নৌমন্ত্রী শাজাহান খান। উদ্বোধনের পর এক বছরও পার হলো না, এরই মধ্যে সার্ভিসটি মুখ থুবড়ে পড়ার উপক্রম হয়েছে। রাজধানীর যানজট নিরসনে প্রথম দিকে এই সার্ভিসটির প্রতি মানুষের ব্যাপক আগ্রহ থাকলেও সিদ্ধান্তহীনতার পাশাপাশি কর্তৃপক্ষের অদক্ষতা আর অব্যবস্থাপনায় গত এক বছরেই যাত্রীরা প্রায় মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। সময় মতো বাস না পাওয়া, ল্যান্ডিং স্টেশনে পর্যাপ্ত বাস না থাকা ও সুবিধাজনক স্থানে ল্যান্ডিং স্টেশন না থাকায় এই সার্ভিসের প্রতি যাত্রীদের আগ্রহ কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ বলে মনে করা হচ্ছে। ফলে লোকসানের ভারে এই প্রকল্পটির অবস্থা এখন কাহিল। প্রকল্পটি টিকিয়ে রাখার চেষ্টার অংশ হিসেবে সার্ভিসটি বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ছেড়ে দেওয়া হলেও তাতে কাজের কাজ কিছুই হয়নি। শেষ পর্যন্ত বিআইডব্লিউটিসি আবার নতুন উদ্যমে এগিয়ে এসেছে। গত মাসের শেষ দিক থেকে এটি আবার সচল হতে শুরু করেছে। ওয়াটার বাসের ঘাটতি মোকাবিলায় আরো কয়েকটি বাস নামানোর পরিকল্পনা এখন বাস্তবায়নের পথে। মাঝখানে প্রায় এক মাস সার্ভিসটি বন্ধ থাকায় যাত্রী আকর্ষণে কিছুটা সময় লাগলেও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মাধ্যমেই যাত্রী সমাদৃত করা সম্ভব বলে মনে করছেন অনেকেই। এছাড়া এরই মধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে বেশ কিছু পদক্ষেপও নেওয়া হয়েছে। জানা গেছে, সদরঘাট-গাবতলী রুটে ওয়াটার বাস সার্ভিসটি শুরু থেকেই পরিচালনার দায়িত্ব বর্তায় বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) ওপর। তবে হতাশার কথা হচ্ছে, ২০১৩ সালের ৪ জুলাই থেকে চালু হওয়া সার্ভিসটি এক দিনের জন্যও লাভের মুখ দেখাতে পারেনি। এই অলাভজনক প্রকল্পটি শেষ পর্যন্ত গত ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে প্রতি মাসে ৬০ হাজার টাকায় ভাড়া দেয় লাবিবা স্টিল হাউসের কাছে। তবে ভাড়া নিয়ে এক সপ্তাহও চালাতে পারেনি প্রতিষ্ঠানটি। এরপর এক মাস বন্ধ ছিল সার্ভিসটি। শেষ পর্যন্ত গত ২৬ মার্চ চালু করে বিআইডব্লিউটিসি। বর্তমানে এই বহরে ছয়টি ওয়াটার বাস আছে। এর মধ্যে পুরনো দুটি এবং নতুন চারটি। পুরনো দুটির প্রতিটিতে আসন সংখ্যা ৩৫। নতুন চারটির প্রতিটিতে আসন ৮১। আসন সংখ্যা কম থাকায় পুরনো দুটিকে চালু রাখা গেলেও যাত্রীর অভাবে নতুন চারটিকে সব সময় বসিয়ে রাখতে হয়। প্রতিদিন সকাল ৭টা থেকে ৪৫ মিনিট পরপর ওয়াটার বাসগুলো ল্যান্ডিং স্টেশন থেকে ছাড়ার কথা থাকলেও সময় মতো তা ছাড়া হয় না। যাত্রীদের ওঠানামার জন্য চারটি ল্যান্ডিং স্টেশন আছে। একটি ল্যান্ডিং স্টেশন থেকে অপর স্টেশনে সর্বোচ্চ ৪০ টাকা এবং সর্বনিম্ন ১০ টাকা ভাড়া। বিআইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান ঢাকাটাইমসকে বলেন, রাজধানীর যানজট দূর ও বুড়িগঙ্গা নদী রক্ষার জন্য ওয়াটার বাস সার্ভিস চালু করা হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে ওয়াটার বাসে যাত্রীদের ব্যাপক সাড়া পাওয়া গেছে। তবে হরতাল অবরোধের কারণে যাত্রীর সংখ্যা কমে যায়। কিন্তু আমরা সার্ভিসটি চালু রাখার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছি। সার্ভিসটি চালু রাখার জন্য বাসগুলো একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে ভাড়া দেওয়া হয়েছিল। তারাও এটি পরিচালনা করতে পারেনি। এরপর গত ২৬ মার্চ থেকে বিআইডব্লিউটিসি আবার সার্ভিসটি চালু করেছে। বিআইডব্লিউটিসি সেবাধর্মী কার্যক্রম পরিচালনা করে। সবসময় লাভ হবে এমনটি প্রত্যাশা করা যায় না। রাজধানীর চারপাশে সার্ভিসটি চালু করার জন্য আরো ছয়টি ওয়াটার বাস তৈরি করা হচ্ছে। আগামী জুন মাসের মধ্যে বাসগুলো নদীতে নামানো হবে। এছাড়া যাত্রীদের আকৃষ্ট করার জন্য প্রচারণার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিআইডব্লিউটিসির উপ-মহাব্যবস্থাপক (যাত্রীবাহী সার্ভিস ইউনিট) নূরুল আলম আকন্দ ঢাকাটাইমসকে জানান, গত ডিসেম্বর মাসে সদরঘাট-গাবতলী রুটে ওয়াটার বাস মোট ১৮০টি ট্রিপ দেয়। এতে যাত্রী পরিবহন হয় ৮ হাজার ৯৮০ জন। যাত্রীদের কাছ থেকে মোট আয় হয় ৩ লাখ ৩০০ টাকা। সার্ভিস চালাতে তেল লাগে ৯ লাখ ৫২ হাজার ৬৩৯ টাকার। ওই মাসে লোকসান হয় ৬ লাখ ৫২ হাজার ৩৩৯ টাকা। এছাড়া কর্মচারীদের বেতনের টাকা তো আছেই। লোকসানের কথা মাথায় রেখে গত ২০ ফেব্রুয়ারি লাবিবা স্টিল হাউসের কাছে প্রতি মাসে ৬০ হাজার টাকায় ভাড়া দেওয়া হয়। তারা চার-পাঁচ দিন চালু রেখে এরপর আর চালাতে পারেনি। গত ২৬ মার্চ থেকে বিআইডব্লিউটিসি সদরঘাট-গাবতলী রুটে আবার বাস সার্ভিস চালু করেছে। প্রতিদিন ছয় ট্রিপ করে চলবে বাসগুলো। যাত্রীদের আকৃষ্ট করতে বাসগুলো সময় মতো ছাড়ার জন্যও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যাত্রী ও বাস ড্রাইভারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ওয়াটার বাস পরিচালনাকারীদের অব্যবস্থাপনার কারণেই সদরঘাট-গাবতলী রুটে  বাস সার্ভিস এখন বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। প্রচারণার অভাব, উপযুক্ত স্থানে ল্যান্ডিং স্টেশন না থাকা, বাস ছাড়ার নির্ধারিত সময় না থাকা, দেরি করে ছাড়া, ল্যান্ডিং স্টেশনে সব সময় না থাকায় যাত্রীরা ওয়াটার বাসের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওয়াটার বাসের একজন ড্রাইভার ঢাকাটাইমসকে জানান, ওয়াটার বাস চলাচলে এই দুর্দশার পিছনে পরিচালনাকারীরা দায়ী। তাদের অব্যবস্থাপনার জন্য এই সার্ভিসটি জনপ্রিয় করা যায়নি। শুরু থেকেই কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে তদারকির অভাব ছিল। সার্ভিসটি জনপ্রিয় করার জন্য কোনো ব্যবস্থাই গ্রহণ করেনি তারা। শুরু থেকেই কোনো ধরনের প্রচার-প্রচারণা ছিল না। ঢাকা শহরে যানজটের মধ্যে গাবতলী থেকে সদরঘাটে যেতে অনেক সময় লাগে। কিন্তু ওয়াটার বাসে খুব সহজে যাতায়াত করা যায়। এরপর ওয়াটার বাসে ভ্রমণও আরামদায়ক। কর্তৃপক্ষ সার্ভিসটি কেন জনপ্রিয় করতে পারল না। অনুমতি না থাকলেও প্রশাসনকে ম্যানেজ করে মানিকগঞ্জ, ধামরাই ও সাটুরিয়া থেকে আসা অনেক বাস সদরঘাট পর্যন্ত চলাচল করছে। এতে রাজধানীতে যানজট বৃদ্ধি পাচ্ছে। অথচ আমিন বাজার ব্রিজের পশ্চিম পাশে একটি বাস স্ট্যান্ড থাকলেও সেখানে থামে না। এসব বাস সেখানে থামলে একদিকে রাজধানীতে যানজট কমে যেত অন্যদিকে ওয়াটার বাস সার্ভিসটি জনপ্রিয় করা যেত। সদরঘাট-গাবতলী যাতায়াতকারী আশরাফ আলী বলেন, যানজটের কারণে বাসে করে গাবতলী থেকে সদরঘাটে যেতে অনেক সময় লাগে। ওয়াটার বাস সার্ভিসটি আরামদায়ক হওয়ায় এ বাসেই চলাচল করতেন তিনি। তবে ওয়াটার বাস নির্ধারিত সময়ে চলাচল না করায় তিনি বাধ্য হয়ে অন্য পরিবহনে চলাচল করছেন। বেশ কয়েকদিন স্টেশনে গিয়ে ওয়াটার বাসের দেখা না পাওয়ায় তিনি এই বাসের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন। তিনি বলেন, এখন আর ওয়াটার বাসে চলাচল করি না। উল্লেখ্য, ঢাকার যানজট এড়াতে প্রথম ২০০৪ সালে ওয়াটার ট্যাক্সি চালু করা হয়। সেটি বন্ধ হলে বর্তমান সরকারের সময় ২০১০ সালের ২৮ আগস্ট ‘এম এল তুরাগ’ এবং ‘এম এল বুড়িগঙ্গা’ নামের দুটি ওয়াটার বাস চালু করা হয়। একুশে সংবাদ ডটকম/এমপি/২২-০৪-১৪
Link copied!