রাবিতে কফিন মিছিল ও অবস্থান ধর্মঘট
রাবি প্রতিনিধি: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ইংরেজী বিভাগের শিক্ষক ড. এ এফ এম রেজাউল করিম সহ বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে একের পর এক হত্যাযজ্ঞ সংগঠিত হওয়ার পরও দেশে সুষ্ঠ বিচার প্রতিষ্ঠিত না থাকার কারণে দেশে যে নৈরাজ্য সৃষ্টি হয়েছে তা থেকে মুক্তি চাই, দাবি করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষার্থীরা। সোমবার বেলা ১১টায় প্রতিকি কফিন মিছিল শেষে সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির ডাকা অবস্থান ধর্মঘটের অংশ হিসাবে রাবি শিক্ষক সমিতির ধর্মঘটে বিষয়টি দাবি করা হয়।
তারা দাবি করেন, বাংলাদেশের যারাই স্বাধীনতায় বিশ্বাস স্থাপন করে না তারা স্বাধীনতার মান মর্যাদা নষ্ট করতেই সাধারণের উপর নির্মম এবং নিষ্ঠুর প্রতিহিংসামূলক আচরণ করছে। তারা আমাদের মুক্তমনা মানুষদের হত্যা করছে না জাতির বিবেকদের হত্যা করছে। তারা আক্ষেপ করে বলেন শিক্ষকগণ শিক্ষাপ্রদান করতে এসেছেন না হত্যা হতে এসেছেন। প্রতিবাদের পর প্রতিবাদ করার পরও বিচার পাওয়া যাচ্ছেনা এটা প্রশাসনের ব্যার্থতা ছাড়া কি অন্য কিছু নয়।
তারা উদ্বৃতি দিয়ে বলেন রাষ্ট্রবিজ্ঞান অনুযায়ি বাংলাদেশ আজ স্বাধীন বলা হয় তবে কে বলে আমরা স্বাধীন ? যদি আমরা স্বাধীন হতাম তাহলে আমাদের কথা বলার স্বাধীনতা থাকত,মত প্রকাশের স্বাধীনতা থাকত । বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকগন কি জাতির কাছে নিকৃষ্ট হয়ে পড়েছেন যে আজ তাদের দাবির কোন মূল্যায়ন করা হচ্ছেনা। আর আজ যে নৈরাজ্য সৃষ্টি হয়েছে তার থেকে কবে মুক্তি পাবে জাতি।
তারা আরও দাবি করেন, বড় কোন মহলের সমর্থন না থাকলে কিভাবে এই ধারাবাহিক হত্যাকান্ড সংগঠিত হয়? অতিতের ইতিহাস কি তাহলে মিথ্যা প্রতিপন্ন হবে। দেশ ও জাতির বড় বড় বুদ্ধিজীবিদের হত্যার মাধ্যমে জাতিকে মেধাশুন্য করার এই ঘৃন্য চক্রান্ত আজ মাথাছাড়া দিয়ে উঠেছে তাদের প্রশ্রয়েই।
আক্ষেপ করে তারা আরও বলেন,রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হত্যার বিরুদ্ধে আন্দোলন অব্যহত থাকলেও প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে আজও সংহতি জানাতে কেউ আমাদের ক্যাম্পাসে পা রাখেন নি। তবে অপরাধীরা যে দলেরই হোক তাদের বিচার আমরা চাই।
শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শাহ আজম শান্তনুর সঞ্চালনায় এ সময় ইংরেজী বিভাগের সাথে সংহতি জানিয়ে, প্রাণীবিদ্যা বিভাগের সভাপতি প্রফেসর সেলিনা পারভিন, ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের সভাপতি প্রফেসর খন্দকার এমামুল হক, সমাজকর্ম বিভাগের সভাপতি ও সাবেক ছাত্র উপদেষ্টা প্রফেসর ছাদেকুল আরেফিন মাতিন, প্রফেসর জালাউদ্দিন, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর নিলুফার সুলতানা, প্রাণ রসায়ন ও অনুপ্রাণ বিভাগের সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন , ব্যবস্থাপনা বিভাগের মো. মোখলেছুর রহমান, সমিতির সাবেক সভাপতি বক্তব্য রাখেন। এছাড়া বিভিন্ন বিভাগের প্রায় এক হাজার শিক্ষক শিক্ষার্থী সেখানে উপস্থিত ছিলেন এবং বিগত কয়েক বছরে খুন হওয়া চার শিক্ষকের স্মৃতি তুলে ধরতে সেখানে চারটি কফিন আনা হয়। শিক্ষক সমিতির আগমিকালের মহাসমাবেশে সকলের স্বতস্ফূর্ত অংশগ্রহনের আহ্ববান জানিয়ে ধর্মঘটের সমাপ্তি ঘোষনা করা হয়।
একুশে সংবাদ /এস/০২-০৫-১৬
Link copied!
আপনার মতামত লিখুন :