হাতে টানা তাঁত শিল্প বিলুপ্তের পথে
একুশে সংবাদ : এক সময় তাঁতের খট খট শব্দে মুখর থাকতো নরসিংদীর জনপদ। কিন্তু বর্তমানে সেই হাতে টানা তাঁত এখন ইতিহাস। সময়ের সাথে সাথে হাতে টানা তাঁতের জায়গা দখল করে নিয়েছে পাওয়ার লুম বা বিদ্যুৎ চালিত তাঁত। সেই সাথে তাঁত বোর্ডের ঋণ বিতরণে বৈষম্য, সুতার মূল্য বৃদ্ধি এবং পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে বন্ধ হতে চলেছে ঐতিহ্যবাহী হস্তচালিত তাঁত শিল্প।
এক সময় নরসিংদীর গ্রামগঞ্জে হাঁটলে পাখির কোলাহল ছাপিয়ে শোনা যেতো তাঁতের শব্দ। অথচ এখন কয়েক গ্রাম ঘুরে কোনো কোনো গ্রামে পাওয়া যায় হাতে টানা তাঁত। তাঁতিদের অভিযোগ, বৈদ্যুতিক তাঁতের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হচ্ছে হস্তচালিত এই তাঁতকে। তার ওপর মহাজনের সুদ-দাদন আর কাপড়ের দামের চেয়ে কাঁচামালের উচ্চমূল্য অস্তিত্ব সংকটে ফেলেছে এ শিল্পকে।
কয়েকজন তাঁতি বলেন, ‘এখানে কাজ করে আর পোষায় না, সারাদিনে ৮টি গামছা বুনলে মাত্র ১৪০ টাকা পাওয়া যায়। এতে সংসার চলে না। কিন্তু তারপরও পেটের দায়ে করি।
তাঁত শিল্পের উন্নয়নে প্রতি বছর তাঁত বোর্ডের অধীনে লাখ লাখ টাকা ঋণ সহায়তা থাকলেও প্রান্তিক পর্যায়ের তাঁতিদের হাতে এসব ঋণ সহায়তা পৌঁছায় না বলে অভিযোগ রয়েছে।
তাঁতিরা বলেন, ‘তাঁতবোর্ড থেকে কোনোরকম সহযোগিতা ও ঋণ পাই না আমরা। সহযোগিতা পেলে অনেকেই ও শিল্প ধরে রাখবে।
নরসিংদীর তাঁত বোর্ডের ভারপ্রাপ্ত লিয়াজোঁ অফিসার মোঃ এবি সিদ্দিক বলেন, তাঁত বোর্ডের প্রশিক্ষণ ও ঋণ প্রদানে অনিয়মের অভিযোগ ঠিক না। আনুষঙ্গিক জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধি ও পাওয়ার লুমের সাথে টিকতে না পেরেই এগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
তাঁত বোর্ডের হিসাব অনুযায়ী, বর্তমানে জেলায় মোট তাঁতি পরিবার ৭ হাজার ২শ’ ৪৭ জন। মোট তাঁতের সংখ্যা ২৬ হাজার ৬শ’ ৯৩টি। এর মধ্যে চালু আছে ১৪ হাজার ৮শ’ ৪৫টি।
একুশে সংবাদ ডটকম/আর/২৪-০৩-০১৫:
Link copied!
আপনার মতামত লিখুন :