ভারতের তথা বিশ্বের প্রাচীন শহরগুলোর মধ্যে অন্যতম হল বেনারস। অনেকে একে কাশী বিশ্বনাথ হিসেবেও চিনে থাকেন। উত্তর প্রদেশের লক্ষনৌ থেকে ৩২০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই শহরটি গঙ্গা নদীর ধারে গড়ে উঠেছে। বর্ষায় চোখ বুজে আপনি বেনারস ঘোরার পরিকল্পনা করতে পারেন। অফ সিজন হওয়ায় যেমন ভিড় কম পাবেন, তেমন হোটেল ভাড়াও কম। আর বর্ষায় বেনারসের ঘাটের সৌন্দর্য আলাদা।
পুরাণ অনুসারে, শিব এই শহরের প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। পাণ্ডব ভ্রাতারা কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে ভ্রাতৃহত্যা ও ব্রহ্মহত্যাজনিত পাপ থেকে উদ্ধার পেতে শিবের খোঁজ করতে করতে এসে পৌঁছন বারাণসীতে। হিন্দু শাস্ত্র অনুসারে, যে সাতটি শহর মোক্ষ প্রদান করতে পারে, তার মধ্যে একটি হল কাশী। বিশ্বাস, এখানে মৃত্যু হলে মোক্ষ লাভ হয়। বারাণসীর কাছে সারনাথেই গৌতম বুদ্ধ প্রথম বৌদ্ধধর্ম প্রবর্তন করেছিলেন।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের হাওড়া থেকে ট্রেনে বেনারস স্টেশনে এসে নামতে পারেন। অথবা দিল্লিতে এসে সেখান থেকে বাসেও আসতে পারেন বেনারস। বেনারসে রয়েছে এয়ারপোর্টও। অফ সিজনে বিমানের ভাড়াও কম পাবেন। যদিও সেক্ষেত্রে বাজেট বেড়ে যাবে অনেকটাই। সবচেয়ে ভালো হয় ট্রেন ধরে সোজা বেনারস স্টেশনে নামলে।
বেনারস যেমন তার ঘাটের জন্য বিখ্যাত, তেমনই তার অলিগলির জন্যেও। এমন অনেক গলি আছে যেখানে রিকশাও পৌঁছায় না। সেখানে কোনো হোটেল নিলে আপনাকে হেঁটেই যেতে হবে। সঙ্গে গঙ্গা পাড়ে হোটেলের ভাড়াও অনেক বেশি। সবচেয়ে ভালো হয় গোধুলিয়া চকের কাছাকাছি কোথাও থাকার হোটেল নিলে। এখানে আপনি ৭০০ থেকে ১০০০ টাকায় এসি রুম পেয়ে যাবেন অফ সিজনে। এমনকি খাওয়ার হোটেলও পাবেন বিভিন্ন বাজেটের।
গঙ্গারয় মোট ৮৪টি ঘাট রয়েছে বেনারসে। প্রতিটা ঘাটের সাজ-সৌন্দর্য একে-অপরের থেকে আলাদা। পায়ে হেঁটে ঘুরে না দেখলে সেই শোভা উপভোগ করা মুশকিল। এর মধ্যে দশাশ্বমেধ ঘাটের সন্ধ্যারতি অশ্বী ঘাটের সকালের আরতি সবচেয়ে জনপ্রিয়। ঘুরে নিন সারনাথ, কাশী বিশ্বনাথ মন্দির, বিন্ধ্যাবাসিনীর মন্দির, রামনগর ফোর্ট। সঙ্গে মনিকর্নিকা ঘাট, তুলসী ঘাট, ভারত কলা ভবন, বেনারস হিন্দু ইউনিভার্সিটিও খুব জনপ্রিয় পর্যটকদের মধ্যে। ৩ রাত ৪ দিনে ঘুরে ফেলা সম্ভব কাশী বিশ্বনাথ।
বেনারসের বিখ্যাত পান, শরবত ও চাটের জন্য। বিভিন্ন ধরনের সুস্বাদু চাট খেয়েই আপনার পেট ভরে যাবে। চেখে দেখতে ভুলবেন না লাচ্চিও। তবে বেনারসে খাওয়া-দাওয়া কিন্তু পুরোপুরি নিরামিষ। যে কটা দিন এখানে থাকবেন আপনাকে ভেজ খেয়েই মন ভরাতে হবে।
একুশে সংবাদ/স ক
আপনার মতামত লিখুন :