মৌসুমের প্রথম ম্যানচেস্টার ডার্বি ঘিরে ছিল রোমাঞ্চের হাতছানি। কিন্তু মাঠের লড়াই একেবারেই জমল না। ম্যানচেস্টার সিটির জার্সিতে শুরু থেকেই দুর্দান্ত ফর্মে থাকা আর্লিং হালান্ড আবারও প্রতিপক্ষের গোলমুখে হয়ে উঠলেন ভয়ঙ্কর। জোড়া গোল করে এবং সতীর্থের গোলে অবদান রেখে দলকে এনে দিলেন জয়ের আনন্দ।
ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে রোববার প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচটি ৩-০ গোলে জিতেছে পেপ গার্দিওলার দল। প্রতিপক্ষকে কোনো সুযোগই দেয়নি সিটিজেনরা। দুই অর্ধে হালান্ড একবার করে জালে বল পাঠানোর পর তৃতীয় গোলটি করেন ফিল ফোডেন।
ম্যাচের অষ্টম মিনিটে প্রথম উল্লেখযোগ্য সুযোগ পায় সিটি। কাইল ওয়াকারের হেড পাস পেয়ে জোরাল হেড করেন ফিল ফোডেন। ঝাঁপিয়ে ঠেকিয়ে দেন আন্দ্রে ওনানা, কিন্তু বল হাতে রাখতে পারেননি তিনি।
প্রতিপক্ষের রক্ষণে চাপ ধরে রাখার সুফল ২৬তম মিনিটে পায় শিরোপাধারীরা। একটি সেট-পিসের সময় ডি-বক্সে সিটির রদ্রিকে পেছন থেকে টেনে ফেলে দেন গাসমুস হয়লুন্ড। ভিএআরে মনিটরে দেখে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। নিখুঁত স্পট কিকে দলকে এগিয়ে নেন হালান্ড।
পাঁচ মিনিট পর দারুণ একটি প্রতি-আক্রমণ শাণায় ইউনাইটেড। মাঝমাঠ থেকে বল পায়ে ক্ষিপ্র গতিতে ছুটে যান তরুণ ফরোয়ার্ড হয়লুন্ড। তাকে বাধা দিতে এগিয়ে আসেন গোলরক্ষক এডারসন, তার স্লাইড এবং পেছনে এক ডিফেন্ডারের চ্যালেঞ্জে যদিও শট নিতে পারেননি তিনি।
প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে সমতায় ফিরতে পারত ইউনাইটেড। তবে স্কট ম্যাকটমিনের জোরালো শট ঝাঁপিয়ে ঠেকিয়ে দিয়ে ব্যবধান ধরে রাখেন এডারসন। এর দুই মিনিট পরই দ্বিতীয় গোল পেতে পারতেন হালান্ড, তবে তার হেড অসাধারণ নৈপুণ্যে রুখে দেন ওনানা।
দ্বিতীয়ার্ধের পঞ্চম মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করে সিটি। বাঁ দিকের বাইলাইন থেকে বার্নার্দো সিলভা ক্রস বাড়ান ডান দিকের পোস্টে আর জোরাল হেডে লক্ষ্যভেদ করেন হালান্ড। গত মৌসুমের রেকর্ড স্কোরার হালান্ড এবারও গোলদাতার তালিকায় আছেন শীর্ষে। লিগে ১০ ম্যাচে তার গোল হলো ১১টি।
৬৯তম মিনিটে দারুণ একটি সুযোগ হাতছাড়া হয় ইউনাইটেডের। ক্রিস্টিয়ান এরিকসেনের উঁচু করে বাড়ানো থ্রু বল ডি-বক্সে বুক দিয়ে নামিয়ে কোনাকুনি শট নেন মার্কাস রাশফোর্ড। অল্পের জন্য সেটা লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। দুই মিনিট পর হালান্ডের হ্যাটট্রিক হতে পারত। তবে নরওয়ের স্ট্রাইকারের শট ঠেকিয়ে দেন ওনানা।
৮০তম মিনিটে হ্যাটট্রিক পূরণের আরেকটি সুযোগ পান হালান্ড। রদ্রির বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া শট ওনানা ঝাঁপিয়ে ফেরানোর পর আলগা বল পেয়ে যান তিনি। তবে দুরূহ কোণ থেকে নিজে শট না নিয়ে পাস বাড়ান গোলমুখে। নিচু শটে জয়টা একরকম নিশ্চিত করে ফেলেন ফোডেন।
গত জানুয়ারিতে এই মাঠে প্রথমে পিছিয়ে পড়েও ঘুরে দাঁড়িয়ে ২-১ গোলে জিতেছিল ইউনাইটেড। এবার তেমন কোনো সম্ভাবনা জাগাতেই পাল না তারা। দারুণ এই জয়ের পর ১০ ম্যাচে আট জয়ে ২৪ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে উঠেছে ম্যানচেস্টার সিটি। তাদের সমান পয়েন্ট নিয়ে গোল ব্যবধানে এগিয়ে দুইয়ে আর্সেনাল।
শীর্ষে থাকা টটেনহ্যাম হটস্পারের পয়েন্ট ২৬। দিনের আরেক ম্যাচে নটিংহ্যাম ফরেস্টকে ৩-০ গোলে হারানো লিভারপুল ২৩ পয়েন্ট নিয়ে আছে চতুর্থ স্থানে। ১০ ম্যাচে পাঁচ জয়ে ১৫ পয়েন্ট নিয়ে আট নম্বরে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড।
একুশে সংবাদ/স ক
আপনার মতামত লিখুন :