AB Bank
ঢাকা শনিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

মানুষের নামে পশুর নামকরণ, শরিয়তের বিধান কী?


Ekushey Sangbad
ধর্ম ডেস্ক
১০:৩৮ এএম, ২৯ মে, ২০২৪
মানুষের নামে পশুর নামকরণ, শরিয়তের বিধান কী?

ঈদুল আজহা বা ঈদুল আদহা (আরবি: عيد الأضحى, প্রতিবর্ণীকৃত: অনুবাদ ‘ত্যাগের উৎসব’। ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় দুটো ধর্মীয় উৎসবের দ্বিতীয় এটি। চলতি কথনে এই উৎসবটি কোরবানির ঈদ নামেও পরিচিত।

বছর পরিক্রমায় মুসলিম উম্মাহর দরজায় আবারো কড়া নাড়ছে এ কোরবানির ঈদ। প্রতিবছর এ ঈদের সময় আমাদের চারপাশে বিভিন্ন পশুর নাম চাউর হয়ে ঘুরে বেড়ায়। অনেকেই শখের বশে নাম রেখে থাকেন পশু-পাখির। আদর করে তাকে সেই নামে ডাকেন। আবার কেউ কেউ মানুষের নামেও পশুর নাম রাখেন।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এভাবে পশুর নাম রাখা ইসলামি শরিয়তে বৈধ কি না?

এ বিষয়ে ইসলামি শরিয়তের দৃষ্টিভঙ্গি নিম্নরূপ—

যেকোনো পশু-পাখি বা প্রাণীর নাম রাখা ইসলামী শরিয়তে বৈধ। এমনটি বিশ্বনবী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বিষয়টি প্রমাণিত। রাসূলুল্লাহ (সা.) এর ঘোড়া ও গাধার নাম রেখেছেন।

আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) এর ‘আজবা’ নামের একটি উটনী ছিল। দৌড় প্রতিযোগিতায় কোনো উটই তাকে পরাজিত করতে পারত না। একবার জনৈক গ্রাম্য আরব একটি উটের পিঠে আরোহণ করে এলো এবং তাকে পেছনে ফেলে দিল। এতে মুসলমানরা মনক্ষুণ্ন হলো। রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, দুনিয়ার কোনো কিছুর উন্নতিই স্থায়ী নয়। কোনো কিছু উন্নত হলে কখনও আল্লাহ তাকে অবনত করে দেন’। (সহিহ বুখারি: ২৮৭২)

ইমাম বাগাভি (রহ.) বলেন, উল্লিখিত হাদিস থেকে প্রমাণিত হয়, পশু-পাখির নাম রাখা বৈধ। আরবদের অভ্যাস ছিল তারা বিভিন্ন প্রাণী ও যুদ্ধের সরঞ্জামের নাম রাখত, যা দ্বারা সবার কাছে পরিচিত ছিল। (শরহুস সুন্নাহ : ৮/২২২)

মানুষের নামে পশুর নামকরণ করার বিধান

পশু-পাখির নাম রাখা বৈধ; কিন্তু মানুষের নামে কোনো পশুর নাম রাখা বৈধ নয়। কেননা আল্লাহ তাআলা মানবজাতিকে সম্মানিত করেছেন।

পবিত্র কোরআনে এসেছে, وَلَقَدْ كَرَّمْنَا بَنِي آدَمَ وَحَمَلْنَاهُمْ فِي الْبَرِّ وَالْبَحْرِ وَرَزَقْنَاهُم مِّنَ الطَّيِّبَاتِ وَفَضَّلْنَاهُمْ عَلَىٰ كَثِيرٍ مِّمَّنْ خَلَقْنَا تَفْضِيلًا
নিশ্চয় আমি (আল্লাহ) আদম সন্তানকে মর্যাদা দান করেছি, আমি তাদেরকে স্থলে ও জলে চলাচলের বাহন দান করেছি; তাদেরকে উত্তম জীবনোপকরণ প্রদান করেছি এবং তাদেরকে অনেক সৃষ্ট বস্তুর উপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছি’। (সূরা: ইসরা, আয়াত: ৭০)

পবিত্র কোরআনুল কারিমে আল্লাহ তাআলা আরো বলেন, یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا لَا یَسۡخَرۡ قَوۡمٌ مِّنۡ قَوۡمٍ عَسٰۤی اَنۡ یَّکُوۡنُوۡا خَیۡرًا مِّنۡهُمۡ وَ لَا نِسَآءٌ مِّنۡ نِّسَآءٍ عَسٰۤی اَنۡ یَّکُنَّ خَیۡرًا مِّنۡهُنَّ وَ لَا تَلۡمِزُوۡۤا اَنۡفُسَکُمۡ وَ لَا تَنَابَزُوۡا بِالۡاَلۡقَابِ بِئۡسَ الِاسۡمُ الۡفُسُوۡقُ بَعۡدَ الۡاِیۡمَانِ وَ مَنۡ لَّمۡ یَتُبۡ فَاُولٰٓئِکَ هُمُ الظّٰلِمُوۡنَ

অর্থ: ‘হে মুমিনরা, কোনো সম্প্রদায় যেন অপর কোনো সম্প্রদায়কে বিদ্রূপ না করে, হতে পারে তারা বিদ্রূপকারীদের চেয়ে উত্তম। আর কোনো নারীও যেন অন্য নারীকে বিদ্রূপ না করে, হতে পারে তারা বিদ্রূপকারীদের চেয়ে উত্তম। আর তোমরা একে অপরের নিন্দা করো না এবং একে অপরকে মন্দ নামে ডেকো না; ঈমান আনার পর মন্দ নামে ডাকা গর্হিত কাজ। যারা এ ধরণের আচরণ থেকে নিবৃত্ত না হয় তারা জালিম’। (সূরা: হুজরাত, আয়াত: ১১)

তাই মানুষের নামে কোনো পশুর নাম রাখা মানুষকে এক ধরনের তাচ্ছিল্য করার শামিল। এমন একটি প্রশ্ন করা হয়েছিল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের শায়খ ড. আহমদ তালেবের কাছে। জবাবে তিনি বলেছেন, মানুষের নামে কোনো প্রাণীর নাম রাখা বৈধ নয়। কারণ এর দ্বারা মানবজাতির সম্মানহানি হয়। মানুষের নামে পশুর নাম রেখে প্রকারান্তে মানুষের নামকে অপমান করা হয়। তাই এ ক্ষেত্রে আমাদের সতর্ক থাকা উচিত।

মূল কথা হলো, পশু-পাখির নাম রাখা বৈধ; কিন্তু মানুষের জন্য ব্যবহৃত নামে সেগুলোর নামকরণ করা যাবে না। মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তাআলা বিষয়টি আমাদের অনুধাবন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

একুশে সংবাদ/এস কে

Link copied!