AB Bank
ঢাকা রবিবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

অক্সিজেনের পরমাণু: পাল্টে দিচ্ছে বিজ্ঞানীদের ধারণা


Ekushey Sangbad
একুশে সংবাদ ডেস্ক
০১:৫১ পিএম, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
অক্সিজেনের পরমাণু: পাল্টে দিচ্ছে বিজ্ঞানীদের ধারণা

বিজ্ঞানীদের দীর্ঘ দিনের গবেষণা পারিপার্শ্বিকের যাবতীয় অণু এবং পরমাণু নিয়ে । অণুকে ভেঙে পরমাণু, পরমাণুকে ভেঙে ইলেকট্রন, প্রোটন, নিউট্রন আবিষ্কার আগেই হয়ে গিয়েছে। তবে সেগুলি নিয়ে গবেষণা থামেনি। পদার্থবিজ্ঞান বলে, অক্সিজেনের দু’টি পরমাণু দিয়ে একটি অণু গঠিত হয়, যাকে বিজ্ঞানের পরিভাষায় বলে ও২। এত দিন এই অক্সিজেনকে হাতের তালুর মতোই চিনতেন বিজ্ঞানীরা। সম্প্রতি, সেই ধারণা কিছুটা ঘেঁটে গিয়েছে।

সম্প্রতি বিজ্ঞানীদের ধাক্কা দিয়েছে অক্সিজেনের পরমাণু। অক্সিজেনের এমন একটি আইসোটোপের খোঁজ মিলেছে, যা এত দিনের সমস্ত ধারণা ওলটপালট করে দিয়েছে।

আইসোটোপ কী? কোনও পরমাণুর নিউক্লিয়াস গঠিত হয় নিউট্রন এবং সমসংখ্যক প্রোটন, ইলেকট্রন নিয়ে। এই নিউক্লিয়াসকে যদি বাইরে থেকে অধিক গতিসম্পন্ন কোনও কণা দিয়ে আঘাত করা হয়, তখন তৈরি হয় তার আইসোটোপ। আঘাতের ফলে নিউক্লিয়াস থেকে কিছু সংখ্যক নিউট্রন বেরিয়ে যায়। তখন নতুন নিউট্রন সংখ্যা সম্পন্ন ওই পরমাণুরই অন্য একটি রূপ তৈরি হয়। এক একটি রূপকে বলে এক একটি আইসোটোপ।

যে কোনও মৌলের পরমাণুর একাধিক আইসোটোপ থাকে। প্রোটন এবং নিউট্রন সংখ্যার যোগফল দিয়ে সেই আইসোটোপগুলির নামকরণ করা হয়। অক্সিজেনের তেমন একটি আইসোটোপের নাম অক্সিজেন-২৮। ২, ৮, ২০, ২৮, ৫০, ৮২ এবং ১২৬। পদার্থবিজ্ঞানের ভাষায় এগুলি হল ম্যাজিক সংখ্যা। কোনও পরমাণুতে এই সংখ্যক নিউট্রন থাকলে সেই আইসোটোপগুলি অন্যদের তুলনায় বেশি স্থিতিশীল হয়।

পদার্থবিদ্যার এই ‘প্রামাণ্য সত্য’কে এ বার উল্টে দিয়েছে অক্সিজেন। অক্সিজেন-২৮ নামের আইসোটোপটি বিশ্লেষণ করে দেখা গিয়েছে, এটি আদৌ স্থিতিশীল নয়।
অক্সিজেনের প্রোটন এবং ইলেকট্রন সংখ্যা হল ৮। সুতরাং, অক্সিজেন-২৮-এ নিউট্রন থাকে ২০টি। এত দিন বিজ্ঞানীদের ধারণা ছিল, ২০টি নিউট্রন বিশিষ্ট অক্সিজেনের আইসোটোপ ‘শান্তশিষ্ট’, স্থিতিশীল।

অগস্ট মাসে নেচার পত্রিকায় প্রকাশিত একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, অক্সিজেন-২৮ ‘ছটফটে’, ক্ষণস্থায়ী। সেকেন্ডের অতি ক্ষুদ্র ভগ্নাংশে তা ভেঙে অন্য আইসোটোপে পরিণত হয়ে গিয়েছে। অক্সিজেন-২৮ ভেঙে তৈরি হয়েছে অক্সিজেন-২৪। চারটি নিউট্রন তা থেকে বেরিয়ে গিয়েছে। এতে সময় লেগেছে মাত্র ০.০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০১ সেকেন্ড। অঙ্কের ভাষায় একে বলে জ়েপটোসেকেন্ড।

অক্সিজেন-২৮-এর এই ‘অস্বাভাবিক’ আচরণে বিস্মিত বিজ্ঞানীরা। এর থেকে প্রমাণিত, নিউক্লিয়াসের গঠন এবং চরিত্র সম্পর্কে এত দিনের ধারণায় কিছু গলদ থেকে গিয়েছে। প্রোটন, নিউট্রনের রয়াসন এখনও বিজ্ঞানীদের চমকে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে।

অক্সিজেনের আইসোটোপ নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করে এই নতুন আচরণ আবিষ্কার করেছেন জাপানের এক দল বিজ্ঞানী। টোকিয়ো ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির পদার্থবিদ ইয়োসুকে কোন্‌ডোর নেতৃত্বে গবেষণার কাজ এগিয়েছে।

Oxygen 28: New Form and Isotope of Oxygen

জাপানের এই বিজ্ঞানী দল প্রথমে ক্যালসিয়াম-৪৮ পরমাণু ভাঙতে বেরিলিয়াম ব্যবহার করেছিল। তা থেকে অপেক্ষাকৃত হালকা কয়েকটি আইসোটোপ তৈরি হয়। তার মধ্যে অন্যতম ছিল ফ্লোরিন-২৯। এই ফ্লোরিন-২৯ একটি তরল হাইড্রোজেনের দিকে নিক্ষেপ করেন বিজ্ঞানীরা। একটি প্রোটন ছিটকে গিয়ে তৈরি হয় অক্সিজেন-২৮। তাকে নিয়েই চমকের সূত্রপাত।

অক্সিজেনের অণু-পরমাণু নিয়ে আরও গবেষণা করবেন বিজ্ঞানীরা। অক্সিজেন-২৮-এর ‘ছটফটানি’র কারণ অনুসন্ধান করা হবে। প্রতি ক্ষেত্রেই তা এমন আচরণ করে কি না, দেখা হবে তা-ও। গবেষণা সম্পূর্ণ হলে বিজ্ঞানীরা এ বিষয়ে স্থির সিদ্ধান্তে উপনীত হবেন।

প্রাণীরা যে অক্সিজেনের মাধ্যমে শ্বাসক্রিয়া চালায়, তা অবশ্য অক্সিজেন-২৮ নয়। তার নাম অক্সিজেন-১৬। সে ক্ষেত্রে অক্সিজেনের নিউক্লিয়াসে ৮টি প্রোটন এবং ৮টি নিউট্রন থাকে।

একুশে সংবাদ/এসআর

Link copied!