AB Bank
ঢাকা সোমবার, ০২ অক্টোবর, ২০২৩, ১৭ আশ্বিন ১৪৩০

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

বিজয়নগরে লিচুর বাম্পার ফলন, ১৯ কোটি টাকার বাণিজ্য সম্ভাবনা


Ekushey Sangbad
এনায়েত খান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
০৪:২৬ পিএম, ১৬ মে, ২০২৩
বিজয়নগরে লিচুর বাম্পার ফলন, ১৯ কোটি টাকার বাণিজ্য সম্ভাবনা

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলায় এবার লিচুর বাম্পার ফলন হয়েছে। এতে করে উপজেলার বাগান মালিকদের মুখে হাসি ফুটেছে। ভারত সীমান্ত ঘেঁসা উপজেলা বিজয়নগর। এই উপজেলায় প্রায় সব ধরনের কৃষিরই ভাল ফলন হয় তার মধ্যে লিচুর সুনাম বাংলাদেশ জুড়ে। এখানকার লিচু সুস্বাদু হওয়ায় সারা দেশেই এর কদরও রয়েছে।

 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রায় ৫০ বছর পূর্ব থেকে বিজয়নগর উপজেলায় লিচুর উৎপন্ন শুরু হয়। জায়গা ও শ্রম কম হওয়াই লিচুর উৎপন্ন হয় বলেই জমিতে লিচুর রূপান্তর করেছেন চাষীরা। ফলন হওয়ার পর থেকে দুই দফায় লিচু বিক্রি হয়। এর মধ্যে গাছে ফুল আসে প্রথম দফায় কৃষকদের কাছ থেকে গাছ কিনেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। গাছে ফুল শেষ হওয়ার মুকুল বের হওয়ার পর দ্বিতীয় দফায় স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন এলাকার ব্যবসায়ীদের কাছে গাছের লিচু বিক্রি করেন।

 

উপজেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বিষ্ণুপুর, কাঞ্চনপুর, কাশিমপুর, সিঙ্গারবিল, আদমপুর, কালাছড়া, মেরাশানী, সেজামুড়া, কামালমুড়া, হরষপুর, মুকুন্দপুর, নোয়াগাঁও, অলিপুর, কাশিনগর, ছতুরপুর, বক্তারমুড়া, রূপা, শান্তামুড়া, কামালপুর, কচুয়ামুড়া, গোয়ালনগর, ভিটিদাউপুর, পত্তন, এলাকায় লিচুর উৎপন্ন হয়।

 

উপজেলার প্রায় প্রত্যেকের বাড়িতেই একটি করে লিচুর গাছ আছে। যাদের বাড়িতেই একটু জায়গা আছে, তারা প্রত্যেক বাড়িতে লিচুর গাছ লাগান। এসব গাছে পাটনাই, বম্বে, চায়না থ্রি, চায়না ২, এলাচি, ৫ধরনের জাতীয় লিচুর উৎপন্ন হয়। উপজেলার সবচেয়ে বড় বাজার হিসেবে পরিচিত আউলিয়া বাজার। এছাড়াও সিংগারবিল, হরষপুর, চম্পকনগর বাজারে বিক্রি হয় অধিকাংশ লিচু। এসব বাজার থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা, নরসিংদী, ভৈরব, নোয়াখালী, চাঁদপুর, মৌলভীবাজার, সিলেট, হবিগঞ্জ, শায়েস্তাগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, শ্রীমঙ্গল, ফেনী ও রাজধানীর ব্যবসায়ীরা পায়কারী দরে লিচু কিনে নিয়ে যায়।

 

সরেজমিনে মঙ্গলবার (১৬ মে উপজেলার পাহাড়পুর ইউনিয়নের ভিটিদাউদপুর, সেজামুড়া ও কামালমুড়ার বিভিন্ন বাগানে ঘুরে দেখা যায়, বাগান মালিকরা বাগানের পরিচর্যা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছে।

এসময় কথা হলে মুকুন্দপুর কামালমুড়া গ্রামের মোঃ শাহাবুদ্দীন বলেন, আমার ৭০ টি লিচু গাছ রয়েছে। এবছর আমার গাছে লিচু কম এসেছেন তবে কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারনে লিচু কম আসেননি। এমনিতেই অনেক বছর পর পর গাছে কম বেশি হয়ে থাকে।

 

তিনি জানান, লিচু গাছে যে ফলন হয়েছে সেগুলাতে অনেক ভালো ফলন হয়েছে। এবছর ৫ লাখ টাকা বিক্রি করবেন বলে আশা করছেন।

 

কৃষি অফিস থেকে পরামর্শ বা সাহায্য সহযোগীতা পেয়েছেন কিনা প্রশ্ন করা হলে শাহাবুদ্দীন আক্ষেপ করে বলেন, আমরা ১৫-২০ বছর ধরে লিচু বাগান করছি কিন্তু কোনদিন কৃষি অফিসের কোন কর্মকর্তা বাগানে এসে খবর নেয়নি।

 

ভিটিদাউদপুর গ্রামের বাগান মালিক আবুল কাসেম মোল্লা বলেন, বাগানে লিচু এসেছে পর্যাপ্তই কিন্তু সঠিক সময়ে বৃষ্টি না হওয়ায় এবং তাপমাত্রা বেশি হওয়ায় অসময়ে লাল হয়ে যাচ্ছে আর ফেটে যাচ্ছে। কৃষি অফিসাররা কোন যোগাযোগ করেন না বলে তিনিও অভিযোগ করেন।

 

সেজামুড়া গ্রামের বাগান মালিক কাউছার ভূইয়া বলেন, আমার ৪টি বাগানে ১৭০টি গাছ আছে। গাছে এবছর ভালো লিচুর ফলন হয়েছে কিন্তু গত দুইদিন ধরে গরমের তাপে হটাৎ লিচু লাল হয়ে যাচ্ছে। তবে তিনি আশাবাদী এবছর ১২ লাখ টাকা লিচু বিক্রি করবেন।

সবচেয়ে বেশি পাহাড়পুর ইউনিয়নের লিচু বাগান রয়েছে সেখানের দায়িত্বরত কৃষি কর্মকর্তা মোঃ আশরাফুল আলমকে তাপমাত্রার কারনে লিচু লাল হয়ে যাওয়া ও কৃষকদের বাগানে তদারকি করেন না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, লিচু বেশি তাপমাত্রার কারনে লাল হয়ে যাচ্ছে তবে বৃষ্টি হলে ঠিক হয়ে যাবে।

 

কৃষকদের কাছাকাছি কম যাওয়া হয় কারন হিসেবে তিনি জানান, পাহাড়পুর ইউনিয়নে ৩ জন কর্মকর্তা থাকার কথা সেখানে আমি ১ জন কাজ করছি। যারা যোগাযোগ করেন তাদের বাগানেই যান বলে তিনি জানান।

 

বিজয়নগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাব্বির আহমেদ বলেন, উপজেলায় এবছর ৪৩০ হেক্টর জায়গায় লিচুর আবাদ হয়েছে। লিচু বাগান আছে ৯০০টি। আবহাওয়া অনুকলে থাকলে ১৮ কোটি ৯০ লক্ষ টাকা প্রায় লিচু বিক্রির লক্ষ মাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

 

উপজেলার সব বাগানে কর্মকর্তাদের তদারকির করেন না ব্যাপারে প্রশ্নে এই কর্মকর্তা বলেন, উপজেলায় আমাদের ৩০ কর্মকর্তার প্রয়োজন সে জায়গায় ১৮ জন দিয়ে কাজ চলছে। জনবল কম হওয়ার ফলে সব বাগানে তদারকি করা যাচ্ছেনা বলে তিনি স্বীকার করেছেন।

 

একুশে সংবাদ/এসএপি
 

Link copied!