AB Bank
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

আয় বাড়েনি ক্রেতার, ফল ও ইফতার কিনতে হাঁসফাঁস


Ekushey Sangbad
মুহাম্মদ আসাদ
০৩:০২ পিএম, ২৩ মার্চ, ২০২৩
আয় বাড়েনি ক্রেতার, ফল ও ইফতার কিনতে হাঁসফাঁস

শুক্রবার (২৪ মার্চ) থেকে শুরু হচ্ছে পবিত্র রমজান মাস। তাই অন্যান্য পণ্যের সঙ্গে ফল ও ইফতার পণ্য কিনতে বাজারে ভিড় করেছেন ক্রেতারা। কিন্তু কোথাও যেন স্বস্তির নিশ্বাস নেই। সরবরাহ ঠিক থাকলেও রোজা ঘিরে ছোলা, মসুর ডাল, চিনি, ভোজ্যতেল, মাছ-মাংসসহ একাধিক নিত্যপণ্যের দাম বাড়ানো হয়েছে।

 

ইতোমধ্যে বাজারে সব ধরনের ফল ও ইফতার পণ্য বাড়তি দরে বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু আয় বাড়েনি বেশিরভাগ মধ্যবিত্ত ক্রেতার। ফলে বাজারে গিয়ে তাদের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ে। উচ্চমূল্যের বাজারে যারা ফল কিনতে পারছেন না তাদের দীর্ঘশ্বাস ছাড়া কোনো গত্যন্তর নেই।

 

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ডলার সংকট, জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি এবং আমদানিতে অতিরিক্ত শুল্কারোপের কারণে এমনিতেই ফলের দাম অল্প আয়ের মানুষের বাইরে।

 

এর মধ্যে রোজা ঘিরে বাড়তি মুনাফা করার ছক তৈরি করছে ফল বিক্রেতা সিন্ডিকেট। এতে পরিবারের জন্য যারা নিয়মিত ফল কিনতেন, তারাও বাজারের তালিকা থেকে পুষ্টিকর পণ্যটি বাদ দিচ্ছেন। সঙ্গে ইফতার তৈরির সব ধরনের সামগ্রীর দামও বাড়ানো হয়েছে। যার কারণে এবার ইফতারেও ভোক্তার ব্যয় সামলাতে হিমশিম খেতে হবে।

 

বৃহস্পতিবার রাজধানীর বাইতুল মোকাররম, কাওরান বাজার, শান্তিনগর বাজার , নয়াবাজার ঘুরে খুচরা বিক্রোতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, খুচরা পর্যায়ে ক্রাউন আপেল প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকা, যা গত বছর একই সময় ১৭০-১৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। প্রতিকেজি মাল্টা বিক্রি হচ্ছে ২১০-২৩০ টাকা, যা আগে ১৬০-১৮০ টাকা ছিল। চায়না কমলা বিক্রি হচ্ছে ২৬০ টাকা, যা গত বছর একই সময় ২০০ টাকা ছিল।

 

এছাড়া খুচরা পর্যায়ে ৭০০-৭৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া আজোয়া খেজুর এখন ৮০০-৮৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ইরানি মরিয়ম খেজুর বিক্রি হচ্ছে ৭০০-৭৫০ টাকা, যা আগে ৬৫০-৭০০ টাকা ছিল। আর প্রতিকেজি সাধারণ মানের খেজুর বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ টাকা, যা আগে ৩০০ টাকা ছিল।

 

বাইতুল মোকাররম ফল কিনতে এসেছেন জাকির হোসেন। তিনি বলেন, বাজারে কী এমন হয়েছে যে রোজার আগে ফলের দাম এত বাড়ল? যে আপেল প্রতিকেজি ১৭০ টাকা করে কিনেছি। এখন ২৮০ টাকা দাম চাচ্ছে। ইফতারে ফল না হলে চলে না। কিন্তু মনে হচ্ছে এবার ফল খাওয়া বাদ দিতে হবে। বিক্রেতারা এক প্রকার স্বেচ্ছাচার করছেন। অথচ যারা দেখার তারাও রহস্যজনক কারণে নির্বিকার।

 

ঢাকা মহানগর ফল আমদানি-রপ্তানিকারক ও আড়তদার ব্যবসায়ী বহুমুখী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবদুল করিম শেখ  বলেন, ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় খেজুরের মতো ফল বেশি দামে আমদানি করতে হচ্ছে। পাশাপাশি অন্যান্য ফলের দামও বাড়তি। ঋণপত্র (এলসি) খোলায়ও জটিলতা আছে। আমদানিতে যেটুকু খরচ বেড়েছে, ফলের দাম সেটুকু সমন্বয় করতে হচ্ছে। কিন্তু দেখা গেছে পাইকারির তুলনায় খুচরায় বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।

 

নয়াবাজারের ফল বিক্রেতা মো. সাজ্জাত হোসেন বলেন, পাইকারি বাজার থেকে ফল কিনে খুচরা বাজারে আনতে চাঁদা দিতে হয়। গেটম্যান থেকে শুরু করে আনসার সদস্য সব স্থানে টাকা গুনতে হচ্ছে। তাই দাম সমন্বয় না করলে লোকসান হবে।

 

খুচরা বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত বছর রোজার আগে প্রতিকেজি বুটের বেসন বিক্রি হয়েছে ১০০ টাকা, যা বুধবার বিক্রি হয়েছে ১২০ টাকা। ইসবগুলের ভুসি প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ১৪০০ টাকা, যা আগে ৯০০ টাকা ছিল। ২০০ গ্রামের ট্যাং বিক্রি হচ্ছে ১৯০ টাকা, যা আগে ১৬০ টাকা ছিল।

 

প্রতিলিটার রুহ আফজা বিক্রি হচ্ছে ৩৬০ টাকা, যা আগে ৩০০ টাকা ছিল। বাজারে যে ছোলা প্রতিকেজি ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, সেই একই মানের ছোলা গত বছর ৬০-৭০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। দেশি চিনি প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা, যা আগে ১০০ টাকা ছিল।

 

প্রতিকেজি খেজুরের গুড় বিক্রি হচ্ছে ২৮০ টাকা, যা আগে ২২০ টাকা ছিল। মুড়ি বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা, যা আগে ৬০ টাকা ছিল। বেড়েছে সবজি মধ্যে বেগুনের দামও বেড়েছে। প্রতিকেজি বিক্রি হচ্চে ৮০-১০০ টাকা, যা গত বছর একই সময় ৭০ টাকা ছিল।

 

নয়াবাজারের পণ্য কিনতে আসা মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, যেভাবে পণ্যের দাম বেড়েছে তাতে দোকান থেকে ইফতারের ভাজাপোড়া কিনতে পারব না। তাই বাসায় তৈরির জন্য উপকরণ কিনতে এসে দেখি এগুলোর দামও হু হু করে বেড়ে গেছে। অথচ দোকানে পণ্যের কোনো সংকট নেই। কিন্তু বিক্রেতারা বাড়তি মুনাফা করতে ইচ্ছে করে দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। অথচ অন্যান্য দেশে এসব পণ্যের দাম ৭৫ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়েছে। অথচ আমরা কোন দেশে আছি। যেখানে এসবের বালাই নেই। আসলে দেখার যেন কেউ নেই।

 

কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান  বলেন, বাজারে এক প্রকারের বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছে। বিশ্ব পরিস্থিতির জন্য বাজারে এমনিতেই সব ধরনের পণ্যের দাম বাড়তি। এর মধ্যে অসাধু বিক্রেতাদের কারসাজিতে পণ্যের দাম আরও বেড়েছে। কিন্তু দৃষ্টান্তমূলক কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যাচ্ছে না। তাই নিত্যপণ্যের বাজারসহ ফল ও ইফতার সামগ্রীর মূল্য সহনীয় করতে এই সেক্টরেও তদারকির আওতায় আনতে হবে।

 

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার বলেন, অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে রাজধানীসহ সারা দেশে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।

 

ইতোমধ্যে আমরা ফলের বাজার ও ইফতার সামগ্রীর বাজারেও অভিযান পরিচালনা করতে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছি। আজ বৃহস্পতিবার মূল্য সহনীয় রাখতে এসব স্থানে বিশেষভাবে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।

 

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, রমজানে জিনিসপত্রের দাম সহনীয় রাখতে সরকার বিভিন্নভাবে চেষ্টা করছে।  সরকারের কাছে যে মজুত আছে, তাতে কোনোভাবেই দাম বাড়বে না। যদি কেউ সুযোগ নিয়ে দাম বাড়ায়  তা হলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

একুশে সংবাদ/এসএপি

 

Link copied!