পিতার অকাল মৃত্যু মেধাবী ছাত্র আকাশ দাসের জীবনকে এক নতুন মোড় দিয়ে ফেলেছে। শত ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও নিয়মিত স্কুলে যেতে পারছে না সে। ভাই-বোন ও মায়ের মুখে খাবার তুলে দিতে তাকে এখন অন্যের কাজ করতে হচ্ছে। আকাশ দাস কোটচাঁদপুরের জালালপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের মেধাবী ছাত্র, যাঁর রোল নম্বর ৫।
এপ্রিল মাসের শুরুতে ক্যান্সারে আক্রান্ত হন আকাশের পিতা রাম দাস। চিকিৎসার জন্য গচ্ছিত সব টাকা খরচ হয়ে গেলেও শেষ পর্যন্ত রক্ষা পাওয়া যায়নি। ৩৫ বছর বয়সে গত মার্চ মাসের শেষের দিকে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
পিতার মৃত্যুর পর আকাশের সংসারে অবস্থা সংকটময় হয়ে পড়েছে। তাঁর মা, ছোট ভাই এবং বোনের মুখের খাবারের জন্য কাজ করতে হচ্ছে তাকে, ফলে স্কুলে নিয়মিত যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
আকাশ দাস বলেন, "শত ইচ্ছা থাকলেও নিয়মিত ক্লাসে যাওয়া হচ্ছে না। সংসারের দুঃখ-কষ্ট সহ্য করে মা ও ছোট ভাই-বোনদের মুখে খাবার তুলে দিতে হচ্ছে। কিছু বইও কেনা হয়নি, যা ক্লাস করতে গেলে প্রয়োজন ছিল। সব মিলিয়ে পড়ালেখা থমকে গেছে। তবে আমি চেষ্টা করব পিতার স্বপ্ন পূরণ করতে।"
আকাশের মা আশা রানী দাস বলেন, "আমার স্বপ্ন ছিল আকাশকে ডাক্তার বানাব, সে জন্যই তাকে বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি করেছিলাম। কিন্তু এখন আমার স্বামী আর নেই। সংসারে কোনো সামর্থ্য নেই যা বিক্রি করে ছেলের পড়ালেখা চালিয়ে নেব। যা কিছু ছিল, সব কিছু তার চিকিৎসার খরচে চলে গেছে।"
কোটচাঁদপুরের জালালপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোসাঃ আক্তার জাহান বলেন, "আকাশ অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র। তবে তাঁর পিতা অসুস্থ হওয়ার পর থেকে সে কিছুটা অনিয়মিত হয়েছে। এখন প্রায় দিনই অনিয়মিত হয়ে পড়েছে, কারণ সংসারের দায়িত্ব তার ওপর।"
আকাশের জীবন এখন কঠিন, কিন্তু তিনি হার মানতে চান না। তাঁর ইচ্ছা, পিতার স্বপ্ন সফল করতে সব ধরনের কষ্ট সহ্য করবেন।
একুশে সংবাদ/ঝি.প্র/এ.জে
আপনার মতামত লিখুন :