কুমিল্লার তিতাস উপজেলায় পারিবারিক বিরোধ ও মামলার চাপে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পারভীন বেগম (৪৭) নামে এক নারী আত্মহত্যা করেছেন। এই ঘটনায় মামলা ও দালালচক্রের অপচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে, যা এলাকাজুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।
গত ১ মে কড়িকান্দি ইউনিয়নের বন্দরামপুর গ্রামের মুন্সি বাড়িতে এই ঘটনা ঘটে। পারভীন বেগম মুরাদনগরের পাঁচপুকুরিয়া গ্রামের মৃত মোস্তাক মিয়ার স্ত্রী। ছেলে ফয়সালের স্ত্রীর দায়ের করা নারী ও শিশু নির্যাতন মামলার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন বলে অভিযোগ।
সূত্র জানায়, পারভীনের ছেলে ফয়সালের সঙ্গে প্রবাসী কাবিলের মেয়ে আঁখি আক্তারের বিয়ে হয় পাঁচ মাস আগে। বিয়ের মাসখানেক পর আঁখি স্বামীর বিরুদ্ধে পরকীয়ার অভিযোগ এনে বাবার বাড়িতে চলে যান। পাল্টা অভিযোগ এনে ফয়সালের পরিবার সালিশ চাইলেও তা ব্যর্থ হয়। এরপর তিতাস থানায় মামলা দায়ের করেন আঁখির পরিবার।
পরিবারের দাবি, মামলা থেকে বাঁচতে পারভীনের ওপর আর্থিক ও মানসিক চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছিল। যুবদল নেতা তোফায়েল খানের মাধ্যমে মামলা নিষ্পত্তির নামে টাকা নেয়া হয়, এরপর আরও অর্থ দাবি করা হয়। এসব চাপ সহ্য করতে না পেরে তিনি বিষাক্ত কীটনাশক ট্যাবলেট খেয়ে আত্মহত্যা করেন।
প্রথমে লাশ দাফনের চেষ্টা হলেও সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে পুলিশের হস্তক্ষেপে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়। পরে নিহতের বোন হোসনেয়ারা বেগম বাদী হয়ে ৪ জনকে অভিযুক্ত করে প্ররোচণার মামলা দায়ের করেন। তবে অভিযুক্তদের মধ্যে একজন প্রতিবন্ধী হওয়ায় মামলা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, প্রকৃত ঘটনা আড়াল করতে একটি প্রভাবশালী মহল সক্রিয়। স্থানীয় যুবদল নেতা তোফায়েল খান ও তার সংশ্লিষ্টতা নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও মামলায় তার নাম নেই। পুলিশ জানিয়েছে, মামলার তদন্ত চলছে এবং সকল দিক বিবেচনা করেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা প্রশিক্ষণে থাকায় তিতাস থানার ওসি নিজেই সরেজমিন তদন্ত করছেন।
তথ্য সংগ্রহে গেলে সাংবাদিকদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ ও হুমকি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে অভিযুক্ত পক্ষের বিরুদ্ধে। এলাকাবাসী ও নিহতের স্বজনরা ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত ও দোষীদের বিচার দাবি করেছেন।
একুশে সংবাদ/কু.প্র/এ.জে
আপনার মতামত লিখুন :