AB Bank
ঢাকা শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

প্রবাসী দুই ভাইয়ের সেচ প্রকল্পে কৃষকদের ভাগ্য বদল


প্রবাসী দুই ভাইয়ের সেচ প্রকল্পে কৃষকদের ভাগ্য বদল

আবাদি/অনাবাদি কৃষি জমি সেজেছে আপন রূপে। এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, একথার বাস্তব রূপ দিতে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলা সরফভাটা ইউনিয়ন ৯নং ওয়ার্ডের অনাবাদি কৃষি জমিতে সদ্য নির্মিত সেচ প্রকল্পের নদীর পানি ব্যবহার করে ৫ হাজার কৃষকের ভাগ্য বদলে গেছে। পানির অভাবে অনাবাদি কৃষি জমি গুলো এখন সারা বছর তিন মৌসুমের ধান ও নানা ধরনের শাক-সবজি বিভিন্ন ফলমূল চাষ করছে কৃষকরা, এতে সোনালী ফসল ফলাতে সাশ্রয়ী হচ্ছে ফলে তারা স্বাবলম্বী হয়ে উঠছেন।

 

উপজেলার সরফভাটা ইউনিয়ন ৯নং ওয়ার্ডের সংযুক্ত আরব আমিরাতের বাংলাদেশী প্রবাসী দুই সহোদর ভাই নাদিম চৌধুরী জাকের ও কামাল চৌধুরীর একক প্রচেষ্টায় ৫০-৬০ লক্ষ টাকা খরচ করে অসহায় কৃষকের জন্য সেচ প্রকল্প নির্মাণ করেছে। এতে পার্শ্ববর্তী শিলক ইউনিয়নসহ অনেক আবাদি/অনাবাদি  জমি চাষের উপযুক্ত হয়েছে।

 

পানি সেচ প্রকল্পে পেয়ে আনন্দিত কৃষক, বদলে গেছে এলাকার কৃষি জমির চিত্র। প্রকল্পে ধারণ করা পানি এখন এলাকার কৃষকের ভাগ্যলক্ষ্মী। সেচ প্রকল্পে পানি দিয়ে চাষ হচ্ছে প্রায় ২শ একর আবাদি/অনাবাদি জমি।

 

নাদিম চৌধুরী বলেন, ‘কৃষক পরিবারে জন্ম আমার। আমি বুঝি কৃষকের কষ্ট। তাই এই সেচ প্রকল্প নির্মাণ করেছি যাতে কাউকে অতিরিক্ত টাকা খরচ করতে না হয় এবং কৃষককে সেচ বিল দিতে কোন ধরনের চাপাচাপি করিনা।’

 

তিনি আরো বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণাকে বাস্তবে রূপ দিতে বাংলাদেশের যে কোন জেলায় কৃষি জমিতে পানি সেচ ব্যবস্থা না থাকলে আমাকে জানালে আমি নিজ দায়িত্বে সেচ প্রকল্প নির্মাণ করে দিব। কৃষি প্রশাসন ও কর্মকর্তাদের কাছে আমার অনুরোধ থাকবে, কৃষি জমিতে ডিপ টিউবলের কারণে ফসলি জমি নষ্ট হচ্ছে। এসব ডিপ টিউবলের অপসারণ করে কৃষিজমি রক্ষা করতে এগিয়ে আসবেন। এছাড়াও আমি বাংলাদেশের প্রায় ৫০০ থেকে ৬০০ মাদ্রাসায় নিয়মিত সহযোগিতা করে যাচ্ছি, যদি কোন মাদ্রাসা ও মসজিদের জন্য অনুদান প্রয়োজন হয় আমার সাথে যোগাযোগ করলে আমি যতটুক সম্ভব সহযোগিতা করার চেষ্টা করব। যেহেতু আল্লাহ আমাকে সামর্থ্য দিয়েছে সে সমর্থ্য অনুযায়ী মানুষের উপকার করার চেষ্টা করে যাচ্ছি।’

 

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কারিমা আক্তার বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি উপজেলাতে বিভিন্ন চাষাবাদ যোগ্য জমি পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে এবং কৃষকদের প্রণোদনা সহায়তা ও কম সময়ে বেশি ফলনের বীজ বিনামূল্যে দিয়ে যাচ্ছে।’

 

সেচ প্রকল্প বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, ‘আপাতত উপজেলা কৃষি অফিস কোন ধরনের সেচ স্কিম দেয়না, তবে কেউ যদি নিজ দায়িত্বে প্রকল্প করতে চায় তাকে আমরা প্রযুক্তিগত সহযোগিতা করে থাকি। ডিপ টিউবল বসাতে কৃষকদের নিরসাহিত করা হচ্ছে,। ডিপ টিউবলের কারণে জমিনে পানির লেয়ার নিচে নেমে যায় যার ফলে গভীর থেকে লবণাক্ত পানি উঠে আসে, একবার যদি জমি লবণাক্ত হয়ে যায়, ওই মাটিতে কোনদিনও ফসল হবে না। সে ক্ষেত্রে কেউ যদি নদীর পানি থেকে সেচ দিতে চাই তাদেরকে উদ্বুদ্ধ করি এবং এই নদীর পানি মাটির জন্য পারফেক্ট ওয়াটার হিসেবে গণ্য করা হয়।’

 

তিনি জানান, ‘এছাড়াও এই মুহূর্তে উপজেলা কৃষি অফিস, কৃষকদেরকে যে লেটেস্ট প্রযুক্তি গুলো এসেছে এ সম্পর্কে ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করে ট্রেনিং দেওয়া হচ্ছে। ৫৮ নামের একটি চিকন জাতের ধান এসেছে যেটা আমরা দুই কেজি করে কৃষকদেরকে প্রণোদনা দিয়েছি। এছাড়াও উপজেলায় কৃষকদেরকে এক বছরের তিনবার করে বিনামূল্যে বীজ দেওয়া হচ্ছে তন্মধ্যে প্রতিবার ৫ হাজার ৮শত কেজি বোরো এবং ৬ হাজার কেজি হাইব্রিড ধানের বীজ দিয়েছি ইতিমধ্যে। রবি মৌসুমে বুট্টা, সূর্যমুখী, সরিষা ও সয়াবিন বীজ দেওয়া হচ্ছে বিনামূল্যে।’

 

অন্যদিকে, রাঙ্গুনিয়া উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মোঃ খালেক বলেন, ‘নাদিম চৌধুরী আমাদের অফিসে এসে পানি সেচ প্রকল্প সম্পর্কে অবহিত করলে, আমরা উনাকে কারিগরি সহায়তা প্রদান করি। এ প্রকল্প হওয়াতে ওই এলাকার সবগুলো কৃষি জমি চাষের আওতায় এসেছে। পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, তিনি দুইটা মেশিন দিয়ে জমিনে সেচ দিচ্ছেন, আশা করি ২ শ একরের বেশি জমি চাষা করা সম্ভব হবে। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে কৃষকদের জন্য বিভিন্ন প্রণোদনা ও সাহায্য সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে পাশাপাশি ভালো ফলনের জন্য নদীর পানি অত্যন্ত উপকারী আশা করি এখানে তিন মৌসুমের ধান সহ মৌসুমী সবজি উৎপাদন করতে সহজ হবে।’

 

একুশে সংবাদ/মু.বি.সো/এসএপি

Link copied!