ইসলামীক দৃষ্টিকাণ থেকে বিবাহের গুরুত্ব
একুশে সংবাদ: হযরত আদম (আ:) কে সৃষ্টি করার পর তার একাকিত্বের অবসান করার শুভ প্রয়াসে হযরত হাওয়া (আ:) কে বিবাহর মাধ্যমে তার জীবন সঙ্গী হিসেবে সৃষ্টি করেন যা মানব ইতিহাসের প্রথম বিবাহ।কেননা নারীর সাথে পুরুষদের সম্পর্ক স্থাপনের জন্য বিবাহ হচ্ছে একমাত্র বৈধ, বিধিবদ্ধ, সার্বজনীন এবং পবিত্র ব্যবস্থা।
আল্লাহ তায়ালা নারী পুরুষদের মধ্যে সুন্দর ও পুতঃপবিত্র জীবন-যাপনের জন্য বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার ব্যবস্থা করেছেন।
স্বেচ্ছাচারী জীবনের উচ্ছৃঙ্খলতা ও নোংরামির অভিশাপ থেকে সুরক্ষা করতেই ইসলাম বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার জোর তাগিদ প্রদান করেছে।কেননা নারী পুরুষের পবিত্রতা ও সতিত্ব রক্ষার মোক্ষম ও বাস্তব সম্মত হাতিয়ার হল এ বিবাহ ব্যবস্থা।
বিয়ে হল পুরুষ ও নারীর মাঝে সামাজিক পরিবেশে এবং ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক অনুষ্ঠিত এমন এক সর্ম্পক স্থাপন যার ফলে নারী-পুরুষ দু’জনে একত্রে বসবাস এবং পরস্পরের যৌন সর্ম্পক স্থাপন সম্পূর্ণ বৈধ হয়ে যায়।বিবাহ একটি শুভ ও ধমীয় অনুষ্ঠান যা পালনের মধ্য দিয়ে নারী পুরুষের ভবিষ্যৎ জীবনের সূচনা হয়।
কোরআনে এসেছে, ‘আর তাঁর (আল্লাহ) নিদর্শনাবলির মধ্যে রয়েছে যে তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের থেকেই স্ত্রীদের সৃষ্টি করেছেন, যাতে তোমরা তাদের কাছে প্রশান্তি পাও।আর তিনি তোমাদের মধ্যে ভালোবাসা ও মায়া সৃষ্টি করেছেন।’ (সুরা রুম, আয়াত : ২১)
এছাড়া বিয়ের বহুমুখী উপকারিতা রয়েছে। যেমন :
১. বিয়ে মানুষকে সংসারী করে।ফলে পুরুষরা দায়িত্বসচেতন ও কর্মমুখী হয়।ভোগের মানসিকতা দূর হয়।তদ্রূপ নারীরাও দায়িত্বসচেতন ও বাস্তবমুখী হয়।
২. নবীজি (সা:) সহ সব নবীর একটি মহৎ সুন্নতকে বাস্তবায়ন করা হয়।
৩. নারীর সম্মানজনক জীবন-জীবিকা সহজ হয়।
৪. অবিবাহিত থাকলে মানসিক বা শারীরিক রোগ ও জটিলতা তৈরির আশঙ্কা থাকে।
৫. স্বামী-স্ত্রী একে অপরকে উৎসাহ দিয়ে সুন্দর পৃথিবী বিনির্মাণের পথ সুগম করে।রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর নবুয়ত লাভের সময় আকস্মিক ওহিপ্রাপ্তিতে ভয় পেলে হজরত খাদিজা (রা:) তাঁকে অভয় দেন এবং তাঁর পাশে থাকার ঘোষণা দেন।
৬. বিয়ের দ্বারা রিজিকে বরকত ও জীবনে প্রাচুর্য আসে।রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তোমরা বিয়ে করো, স্ত্রীরা স্বীয় ভাগ্যে তোমাদের কাছে সম্পদ টেনে আনবে।’ (মুসনাদে বাজ্জার, হাদিস : ১৪০২)
৭. নারী-পুরুষ উভয়ের মানসিক স্বস্তি, তৃপ্তি ও প্রফুল্ল অর্জন হয়, যা বিয়ে ছাড়া অন্য কোনো উপায়ে সম্ভব নয়।
৮. নারী জাতির তত্ত্বাবধান ও রক্ষণাবেক্ষণ হয়।
৯. মানবশিশু তাদের প্রকৃত পরিচয় লাভ করে সঠিক লালন-পালন ও পৃষ্ঠপোষকতা লাভ করে।
১০. সৃষ্টিগত ও স্বভাবজাত যৌনচাহিদা পূরণের বৈধ ও নিরাপদ ব্যবস্থা বিয়ে।
১১. পুরুষ একজন আমানতদার নির্ভরযোগ্য সঙ্গিনী লাভ করে।
১২. অবাধ ও অবৈধ যৌনতা এইডসের মতো মারণব্যাধিতে আক্রান্ত হওয়ার পথ খুলে দেয়।আর বিয়ে তা থেকে মানুষকে পরিত্রাণ দেয়।
১৩. অবৈধ যৌন সম্পর্ক সামাজিক শৃঙ্খলা নষ্ট করে।
১৪. গুনাহ ও পাপাচার থেকে নিজেকে সংবরণ করার মাধ্যমে নারী-পুরুষ উভয়ের ঈমান, ইসলাম ও সতীত্ব রক্ষা করতে পারে।
১৫. বৈধ পন্থায় মানববংশের বিস্তার হয়।
একুশে সংবাদ//ক.ক.ন//১৭.০৭.২০১৯
Link copied!
আপনার মতামত লিখুন :