একুশে সংবাদ : শীতকাল মানেই গ্রামগঞ্জে খেজুর রসের পিঠা পায়েস উৎসব। এসময় গ্রামের বাড়িতে অতিথি মানেই খেজুর রসের পিঠা পায়েসের আপ্যায়ন। তবে বর্তমানে এ উৎসব প্রায় হারিয়ে গেছে। কালের আবর্তে ও নির্বিচারে খেজুর গাছ নিধনের ফলে রস মিলছে না পৌর সদরসহ পার্শ্ববর্তী গ্রামাঞ্চলে। শীতে রসের পিঠা আর আয়েশ করে পায়েস খাওয়া অনেকটাই কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।
বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জ উপজেলার যেসব গাছি এ পেশায় জড়িত ছিলেন তাদের আজ খুঁজে পাওয়া দায়। এখন তারা বেছে নিচ্ছেন অন্য পেশা। তবে গাছ স্বল্পতার কারণে থেমে নেই খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহের কাজ। যে ক’টি গাছ রয়েছে তা নিয়েই ব্যস্ত সময় পার করছেন সংশ্লিষ্ট গাছিরা।
বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী ইট ভাটার জ্বালানি হিসেবে খেজুর গাছ ব্যবহার করছে। ফলে হ্রাস পাচ্ছে এ গাছের সংখ্যা। উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের মাঠে আর মেঠোপথের পাশে বেশকিছু গাছ দাঁড়িয়ে আছে কালের সাক্ষী হয়ে।
স্থানীয়রা জানান, অতীতে এখানকার খেজুর রসের যে যশ ছিল তা ক্রমেই হারিয়ে যাচ্ছে। শীতের সকালে গ্লাসভর্তি খেজুরের রস খেয়ে দিন শুরু হতো, সন্ধ্যায় রস হয়ে উঠত আরো মজাদার। বেশ লোভনীয় রসের তৈরি গুড় ও পাটালি। গ্রামাঞ্চলের প্রতিটি ঘরে খেজুরের রস দিয়ে পিঠা-পুলি-পায়েস তৈরির ধুম পড়ত। কৃষক পরিবার থেকে শুরু করে সবার কাছেই মুড়ি, চিড়া, পিঠা বেশ প্রিয়।
শেখপাড়া গ্রামের গাছি স্বপন হাওলাদার জানান, ইট ভাটায় খেজুর গাছের চাহিদা থাকায় লোকজন এসব গাছ বিক্রি করে দিচ্ছে। এখন যে ক’টা গাছ আছে তা থেকেই রস সংগ্রহ করছে গাছিরা। তবে অনেকেই বেছে নিচ্ছেন অন্য পেশা। একসময় খেজুর রস দিয়ে ১৫০ থেকে ২০০ মণ গুড় তৈরি করত গাছিরা। পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে বিভিন্ন স্থানে এ গুড় বিক্রি করে সংসার চলাতো তারা।
শিক্ষক মো. মনিরুজ্জামান জানান, শীতকালে খেজুর রস ও রসের পিঠা বেশ জনপ্রিয় হলেও খেজুর গাছ হ্রাস পাওয়ায় এখন তা দুর্লভ। টাকা দিয়েও রস পাওয়া কষ্টকর।
গাছি মো. মজিবর জানান, আগের মতো খেজুর গাছ নেই। এখন ২০০-২৫০ টাকায়ও এক হাড়ি রস পাওয়া যায় না। তাই রসের পিঠাও খাওয়া হয় না।
একুশে সংবাদ // পপি // বিবা // ২৬-০১-১৭
আপনার মতামত লিখুন :