বান্দরবানে ঐতিহাসিক রাজ পূণ্যাহ্ মেলা অনুষ্ঠিত
বান্দরবান প্রতিনিধিঃ বান্দরবানে আনুষ্ঠানিকভাবে ১৩৭ তম ঐতিহাসিক রাজপূন্যাহ ্মেলা শুরু হয়েছে। স্থানীয় রাজার মাঠে অনুষ্ঠিতব্য চলতি মাসের ১৯ হতে ২৩ তারিখ পর্যন্ত ৫ দিনব্যাপী এ মেলার শুভ উদ্ধোধন করেন বোমাং সার্কেল চীফ উচপ্রু।
বোমাং রাজার বাৎসরিক জুম খাজনা আদায়কে কেন্দ্র করে অনুষ্ঠিত এ মেলা একসময় সার্কেলের হেডম্যান (মৌজা প্রধান), কারবারীসহ (পাড়া প্রধান) বসবাসরত বিভিন্ন সম্প্রদায়ের জনগোষ্ঠীর মিলন ক্ষেত্র হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে আসছে। বর্তমানে কেবল পার্বত্যাঞ্চল নয়, দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা পর্যটক, ভ্রমনকারীদেরও মিলন ক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে এই রাজ পূণ্যাহ্ মেলা।
মেলার উদ্ধোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি, বিশেষ অতিথি ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি। অতিথিদের মধ্যে আরও ছিলেন তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের মধ্যে যথাক্রমে বান্দরবানের ক্য শৈ হ্লা, রাঙ্গামাটির নিখিল কুমার চাকমা, খাগছড়ির চাই থোয়াই অং মারমা, ইউএনডিপি’র ডেপুটি কান্ট্রি ডিরেক্টর নিক বিরিস ফোর্ড, ইসলামী ব্যাংকের এমডি এম.এ.মান্নান, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর মালি, জেলা প্রশাসক কে.এম.তারিকুল ইসলাম, পুলিশ সুপার দেবদাস ভট্টাচার্য, চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট মো: ফারুক আহমদ, আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য সাধুরাম ত্রিপুরা মিল্টন প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বান্দরবান হেডম্যান এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাশৈপ্রু মারমা। অতিথি বক্তারা বলেন, বান্দরবানের বোমাং রাজারা শত শত বছর ধরে ঐতিহাসিক রাজ পূণ্যাহ্ মেলার মাধ্যমে নিজেদের বংশ মর্যাদা অক্ষুন্ন রেখেছে। এমন ধারাবাহিকতা অন্য কোথাও দেখা যায়না।
ক্য শৈ হ্লা জানান, পার্বত্য চুক্তি অনুযায়ী সরকার “পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসন বিধি ১৯০০”-এর ৪১ ও ৪২(সংশোধিত) শাসন বিধি পার্বত্য জেলা পরিষদের কাছে স্থলাভিষিক্ত করেছে। ফলে এবছর আদায় করা বাৎসরিক জুম কর জেলা পরিষদের তহবিলে জমা ও জুম সংক্রান্ত তথ্যাবলীসহ যাবতীয় কার্যাদির প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দায়িত্বভার পার্বত্য জেলা পরিষদের। তিনি বলেন, সরকার পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নে আন্তরিকতার সাথে কাজ করে চলেছে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী বোমাং রাজাকে কারবারী, হেডম্যানদের সাথে মত বিনিময় সভার মাধ্যমে সার্কেলে সামাাজিক আইন, প্রথা, ভূমি প্রভৃতির সমস্যা ও সমাধানের লক্ষ্যে জেলা প্রশাসনসহ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনার পরামর্শ দেন। তিনি হেডম্যান, কারবারীসহ পাড়াবাসী অভিভাবকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে প্রতিটি শিশুকে বিদ্যালয়ে পাঠানোর আহবান জানান। সরকারের সদিচ্ছায় চুক্তি বাস্তবায়ন হয়ে চলেছে দাবি করে তিনি জানান, সরকার পার্বত্যাঞ্চলে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগসহ নানান উন্নয়নে কাজ করে চলেছে।
প্রধান অতিথি বলেন, দেশের ইতিহাসে দীর্ঘ বছরের পার্বত্য সমস্যার সমাধান আওয়ামী লীগ শাসনামলে পার্বত্য চুক্তির মাধ্যমে হয়েছিল। চুক্তি বাস্তবায়নও বর্তমান সরকারের আমলে হবে। সরকার পার্বত্যাঞ্চলের সুখ, সমৃদ্ধি শান্তি স্থাপনে দৃঢ়তার সাথে কাজ করছে।
এ বছর মেলায় স্থানীয়, দেশীয় বিভিন্ন স্টলের সাথে শিশুদের জন্যও নানান আয়োজনের পাশাপাশি হাউজি, ভেরাইটি শো প্রভৃতির আয়োজন রয়েছে।
একুশে সংবাদ ডটকম/টিং শৈ প্রু (মংটিং)/১৯.১২.১৪।
Link copied!
আপনার মতামত লিখুন :