মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞা নির্ধারণে দোলাচলে মন্ত্রণালয়
একুশে সংবাদ : 'মুক্তিযুদ্ধের সময় ১৫ বছরের কম বয়সীরা মুক্তিযোদ্ধা নন' সরকারের এমন শর্ত নিয়ে খোদ মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ই অন্ধকারে। সম্প্রতি মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞা নির্ধারণে বয়সের কোটা বেঁধে দেয়ার ঘোষণা দেন মন্ত্রী। কিন্তু সময় সংবাদকে একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের বয়স ১৫ এর কম হলেও তারা স্বীকৃতি পাবেন।
এদিকে, বয়সের বেড়াজালের সিদ্ধান্তে মুক্তিযোদ্ধারা একদিকে যেমন পরিচয় হারানোর শঙ্কায় অপমানিত বোধ করছেন, অন্যদিকে অনেকে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় প্রাপ্ত সরকারি চাকরি হারানোর ভয়ে আছেন। সিদ্ধান্ত বাতিল না হলে তারা আদালতে যাওয়ার হুমকিও দিয়েছেন।
নুর ইসলাম মোল্লা। বয়স ৫৯। একাত্তরে তাঁর বয়স ছিলো প্রায় সাড়ে ১৬ বছর। নবম শ্রেণীতে পড়ার সময় চাকরির সুবিধের কথা চিন্তা করে স্কুলের প্রধান শিক্ষক তার বয়স দু'বছর কমিয়ে দেন। সে হিসেবে ৭১ এ তার সার্টিফিকেট বয়স ছিলো ১৪। সম্প্রতি মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞায় সর্বনিম্ন ১৫ বছর বয়সের যে শর্ত বেঁধে দেওয়া হয়েছে তা কার্যকর হলে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সভাপতি এই নুর ইসলাম মোল্লা হারাচ্ছেন; তার মুক্তিযোদ্ধা পরিচয়।
গত সোমবার জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল- জামুকার ২৫তম বৈঠকে বয়সের এই সীমারেখা টেনে দেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।
তিন বলেন, যুদ্ধকালীন সময় অর্থাৎ ২৬ মার্চ ১৯৭১ সালে বয়স কমপক্ষে ১৫ বছর হতে হবে বলে জানান তিনি।
সিদ্ধান্তটি বাস্তবায়িত হলে ১৫ বছরের কম বয়সে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেয়া সকলেরই বাদ পড়ার কথা তালিকা থেকে। যাদের মধ্যে আছেন বীরপ্রতীক খেতাবপ্রাপ্ত অনেকেই।
এদিকে বয়সকে সামনে রেখে মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞা নির্ধারণের এই সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ অনেকেই।
তবে, বৃহস্পতিবার সময় সংবাদকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মন্ত্রী বলেছেন, প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের বয়স যাই হোক না কেনো তারা স্বীকৃতি থেকে বাদ পড়বেন না।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, এটা কোরআন হাদিস না যে পরিবর্তন করা যাবে না, আশ্বস্ত করছি প্রকৃতরা বাদ যাবেন না, তবে সার্টিফিকেটে বয়স কমানোটাও নৈতিক কাজ না। আর যারা কম বয়সে অর্থাৎ ১৫ বছরের নিচে করে থাকে তারা কেউ বাদ যাবে না।
মুক্তিযোদ্ধাদের মতে, মুক্তিযুদ্ধ কোনো সরকারি চাকরি নয় যে এতে অংশ নিতে বয়সের বাধ্যবাধকতা রাখা উচিত। বরং ভুয়া সার্টিফিকেট বাগিয়ে যারা বছরের পর বছর রাষ্ট্রের সঙ্গে বেঈমানি করছে তাদের চিহ্নিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব।
একুশে সংবাদ ডটকম/এফরান/১৯.১০.০১৪:
Link copied!
আপনার মতামত লিখুন :