পাকিস্তানের শহর থেকে শহর, প্রদেশ থেকে প্রদেশ জুড়ে চলছে বিক্ষোভ। নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগে ফুটন্ত আগ্নেয়গিরিতে পরিণত হয়েছে পাকিস্তান। কারচুপির অভিযোগ তুলে বিক্ষোভের দাবানল ছড়িয়ে দিয়েছে পিটিআই সমর্থক রাজনীতিবিদরা। তাদের সাথে যোগ দিয়েছে সাধারণ জনতা।
পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডন জানায়, শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) দেশজুড়ে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ কর্মসূচি দেয়ায় ইসলামাবাদে ১৪৪ ধারা জারি করেছে কর্তৃপক্ষ। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে না বের হবার জন্য আহবান জানিয়েছে দেশটির আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। জরুরি অবস্থা মোকাবেলায় শহরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
ইসলামাবাদ জুড়ে টহল বাড়ানো হয়েছে এবং চেকপয়েন্টগুলোতে তল্লাশি জোরদার করা হয়েছে। এছাড়া নিরাপত্তার জন্য পুলিশ শহরজুড়ে উচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করেছে। বেশিরভাগ শহরে টহল বাহিনী নামানো হয়েছে। পিটিআই দেশজুড়ে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ ঘোষণায় এ পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
ভোট কারচুপির বিচারের দাবিতে রাজপথে পিটিআই রাজনীতিবিদরা। যতক্ষণ পর্যন্ত না এর সমাধান হচ্ছে ততক্ষণ আন্দোলন চালানোর ঘোষণা দিয়েছে দলের নেতাকর্মীরা। এর আগে আট ফেব্রুয়ারির নির্বাচনকে পাকিস্তানের ইতিহাসের ‘সবচেয়ে বড় জালিয়াতি’ আখ্যা দিয়ে দেশব্যাপী বিক্ষোভের ডাক দেয় ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ পিটিআই।
দেশজুড়ে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করতে নেতাকর্মী ও সমর্থকদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন দলের নেতা হাম্মাদ আজহার । তবে রাজপথে সেই শান্তি আর থাকছে না। এরইমধ্যে বিভিন্ন জায়গায় সমাবেশস্থলের নাম ঘোষণা করেছে পিটিআই। তাদের ঠেকাতে মরিয়া হয়ে উঠায় অশান্ত হয়ে উঠছে দেশটির পরিস্থিতি।
পিটিআই চেয়ারম্যান গওহর আলি খান বলেন, যারা বিশ্বাস করেন ম্যান্ডেট পরিবর্তন ও নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে আমরা সেসব রাজনৈতিক দলকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। শনিবার বিকেলে পিটিআই শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করবে। এ কর্মসূচিতে জনসাধারণকে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
পাকিস্তানে নির্বাচনের দিন বন্ধ ছিলো ইন্টারনেট ও মুঠোফোন সেবা। ফল দেয়া হয় তিন দিন পর। ভোটের দিন কারচুপি ছাড়াও ফল পাল্টে দেয়ার মতো জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে। নির্বাচনের পর থেকেই দেশে-বিদেশে সমালোচিত হচ্ছে পাকিস্তান। তদন্ত চাইছছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ সব মিত্ররা।
ভোটের পরদিন থেকেই কারচুপির প্রতিবাদ শুরু হয়। সে ধারাবাহিকতায় শুক্রবারও বিক্ষোভ করে বিভিন্ন দল। সিন্ধু প্রদেশের জামশোরো শহরে বিপুল জনসমাবেশ করেছে রাজনৈতিক জোট গ্র্যান্ড ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স (জিডিএ)। এ সময় দেশটির নতুন সরকারের ভবিষ্যৎ নিয়ে সংশয় জানায় দলটি।
গ্র্যান্ড ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্সের (জিডিএ) প্রধান পীর সৈয়দ সিবগাতুল্লাহ শাহ রুশদী, যিনি পীর পাগারা নামেও বেশ পরিচিত, তিনি বলেন, যে সরকার পাকিস্তানের ক্ষমতায় আসছে, তারা বড়জোর থাকবে ৮-১০ মাস। খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের ওয়াজিরিস্তানেও সপ্তাহব্যাপী সড়ক অবরোধ চলছে পিটিআইয়ের।
একুশে সংবাদ/সা.আ
আপনার মতামত লিখুন :