AB Bank
ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

টুঙ্গিপাড়ায় ১৫০ বিঘা জমিতে সমলয়ে ধান চাষ শুরু


Ekushey Sangbad
জেলা প্রতিনিধি, গোপালগঞ্জ
০৭:৫১ পিএম, ১৩ জানুয়ারি, ২০২৩
টুঙ্গিপাড়ায় ১৫০ বিঘা জমিতে সমলয়ে ধান চাষ শুরু

গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায়  যান্ত্রিকীকরণ ও অধুনিক চাষাবাদের মাধ্যমে  দেড়শ” বিঘা জমিতে সমলয়ে বোরো ধানের চাষাবাদ শুরু হয়েছে।

 

এই পদ্ধতির চাষাবাদে বীজতলা থেকে শুরু করে ধান মাড়াই পর্যন্ত যান্ত্রিকীকরণের মাধ্যমে সম্পন্ন করা হবে। এই চাষাবাদে কম খরচে কৃষক অধিক ধান উতপাদন করতে পারবেন।ধানের অধিক ফলন পেয়ে কৃষক লাভবান হবেন। এই চাষাবাদ ছড়িয়ে দিতে পারলে দেশ খাদ্য উতপাদনে আরো সমৃদ্ধ হবে বলে কৃষি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

 

শুক্রবার (১৩ জানুয়ারী) সকালে টুঙ্গিপাড়া উপজেলার কুশলী ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর গ্রামে সমলয়ে চাষাবাদের উদ্বোধন করেন টুঙ্গিপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আল মামুন।

 

টুঙ্গিপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ জামাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান অসীম কুমার বিশ্বাস সহ আরো অনেকে বক্তব্য রাখেন।

 

টুঙ্গিাপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ জামাল উদ্দিন বলেন, সমলয়ে চাষাবাদে আমরা রামচন্দ্রপুর  গ্রামের ৪৮ জন কৃষককে সম্পৃক্ত করেছি। তাদের জমিতে এই পদ্ধতির চাষাবাদ হচ্ছে। চাষাবাদের শুরুতে আমরা ট্রেতে বীজতলা করেছি। প্রতি বিঘায় প্রচলিত চাষাবাদে হাইব্রিড ধানবীজ ৪ কেজি ও উফশী ধানবীজ ৮ কেজি দিয়ে বীজতলা তৈরী করতে হয়। সেখানে সমলয়ে চাষাবাদে বিঘা প্রতি বীজ খরচ অর্ধেক হয়েছে। বীজে কৃষকের খরচ বেঁচেছে।

 

এই চাষাবাদে রাইস ট্রান্সপ্লান্টার দিয়ে ধানের চারা রোপন করা হয়েছে।এতে বিঘা প্রতি খরচ হয়েছে মাত্র ১ হাজার ২০০ টাকা। শ্রমিক দিয়ে ধান রোপন করতে গেলে অন্তত ৬ হাজার টাকা খরচ হতো। এছাড়া উইডার মেসিন দিয়ে নিড়ানী দেওয়া হবে। এতে মাত্র ২জন শ্রমিক প্রয়োজন হবে। এক্ষেত্রে অন্ততঃ ১০জন শ্রমিকের মজুরী সাশ্রয় হবে। এই ধান পাকার পর কম্বাইন্ড হারবেস্টার দিয়ে কেটে মাড়াই করে দেওয়া হবে। এই মেসিন দিয়ে ১ বিঘা জমির ধান কাটতে মাত্র ১ হাজার ৫০০ টাকা ব্যয় হবে। এতে সাশ্রয় হবে অন্ততঃ সাড়ে ৭ হাজার টাকা।

 

সব মিলিয়ে এই পদ্ধতির চাষাবাদে কৃষকের বিঘা প্রতি অন্ততঃ ১২ হাজার টাকা সাশ্রয় হবে। এছাড়া এই পদ্ধতির চাষাবাদে বিঘা প্রতি হাইাব্রিডে ৩০ মনের স্থলে ৩৫ মন ধান উতপাদিত হবে। উফশী জাতে ২৫ মনের স্থলে ৩০ মন ধান উতপাদিত হবে। এই পদ্ধতির চাষাবাদে জমিতে কোন আইল থাকে না। এছাড়া ২০ থেকে ২২ দিন বয়সের ধানের চারা রোপন করতে হয়। তাই ধানের উতপাদন বেড়ে যায়।

 

ওই কর্মকর্তা আরো বলেন, টুঙ্গিপাড়া উপজেলায় চলতি বোরো মৌসুমে ৮ হাজার ৪০০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হচ্ছে। এরমধ্যে আইল রয়েছে প্রায় ১২৬ হেক্টর। জমির আইল আনাবদী থাকে। সব জমিতে সমলয়ে চাষাবাদ হলে ওই জমি চাষাবাদের আওতায় আসতো। এতে আরো ৭৫৬ মেট্রিক মেট্রিক টন ধান বেশি উতপাদন হতো। এই চাষাবাদ ছড়িয়ে দিতে পাড়লে দেশ খাদ্য উতপাদনে আরো সমৃদ্ধ হবে বলে ওই কৃষি কর্মকর্তা মন্তব্য করেন।

 

রামচন্দ্রপুর গ্রামের কৃষক মোঃ নাজিম বলেন, এই পদ্ধতিতে চাষাবাদে বীজতলা তৈরীতে অর্ধেক বীজ লেগেছে। এতে বীজ খরচ সাশ্রয় হয়েছে। আজ রাইস ট্রান্সপ্লান্টার দিয়ে ১ বিঘা জমির ধান আবাদ করেছি। এতে মাত্র ১ হাজার ২০০ টাকা খরচ হয়েছে। এই চাষাবাদে খরচ সাশ্রয় হচ্ছে। কৃষি কর্মকর্তারা বলেছেন ধানের ফলনও ভাল হবে। ভাল ফলন পেলে অধিক লাভবান হবো বলে আশা করছি।

 

একই গ্রামের কৃষক মহিব শেখ বলেন, নতুন পদ্ধতির চাষাবাদে সবই যন্ত্রের ব্যবহার। এখানে শ্রমিক তেমন লাগে না। ধান কাটার সময় শ্রমিক সংকট প্রকট আকার ধারণ করে। তখন শ্রমিককে ১ হাজার টাকা মজুরী দিতে হয়। ধান নিয়ে আমাদের দুশ্চিন্তার শেষ থাকে না। এই চাষাবাদে অধিক ফলন পেয়ে দ্রুত ধান ঘরে তুলতে পারব। এতে আমাদের অধিক লাভ হবে।

 

গোপালগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণের উপ-পরিচালক ড. অরবিন্দ কুমার রায় বলেন, সরকার কৃষিকে যান্ত্রিকী করণ করতে চাইছে। এই পদ্ধতিতে চাষাবাদে শ্রমিক কম লাগে। এছাড়া ধানের উতপাদন বৃদ্ধি পায়। গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলায় সমলয়ে চাষবাদ কার্যক্রমের আওতায় ১৫০ বিঘা জমিতে চাষাবাদ শুরু হয়েছে। এই পদ্ধতির চাষাবাদে একই জাতের ফসল আবাদ করতে হয়। ম্যনেজমেন্ট ও সেচ-নিকাশ খুব সহজ। ধানের অধিক ফলন পেয়ে কৃষক লাভবান হন। এই পদ্ধতির চাষাবাদ সম্প্রসারিত হলে দেশের খাদ্য উতপাদন আরো বৃদ্ধি পাবে বলে জানান ওই কর্মকর্তা।

 

একুশে সংবাদ/মু.মো.হু.প্রতি/এসএপি

Link copied!