১০ ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে মিলল ঈদের টিকেট
একুশে সংবাদ : ট্রেনে চট্টগ্রাম থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় যেতে সময় লাগার কথা সর্বোচ্চ ৫ ঘণ্টা। কিন্তু টিকেটের লাইনে দাঁড়িয়েছিলাম ১০ ঘণ্টারও বেশি সময়। ক্ষোভের সঙ্গে কথাগুলো বললেন অগ্রণী ব্যাংক কর্মকর্তা রাশেদুল ইসলাম।
তিনি জানান, ঈদের অগ্রিম ট্রেনের টিকেটের জন্য চট্টগ্রাম রেল স্টেশনে রোববার ভোররাত ৪টায় লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি; টিকেটে পেয়েছেন দুপুর আড়াইটার পর।
রাশেদুল ইসলামের মতো রোববার আরও অনেককেই দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে সংগ্রহ করতে হয়েছে ঈদে প্রিয়জনের কাছে যাওয়ার টিকেট। এজন্য তারা কালোবাজারিকে দায়ী করলেও তা অস্বীকার করেছে কর্তৃপক্ষ।
চট্টগ্রাম রেল স্টেশনে দুপুরে কথা হয় আলমগীর, সবুজ ও সোহাগ নামে তিন যুবকের সঙ্গে। তারা জানান, অগ্রিম টিকেট সংগ্রহের জন্য অনেকেই শনিবার মধ্যরাত থেকে লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন। সেহরিও খেয়েছেন স্টেশনেই।
তবে ঈদ আনন্দ পরিবার-পরিজনের সাথে করতে ঘরমুখো মানুষের কাছে এমন কষ্ট যেন কিছুই না।
আলমগীর বলেন, শনিবার রাত ১টায় লাইনে দাঁড়িয়েছি। আজ সকাল ১০টায় টিকেট পেয়েছি। টিকেট পেয়েই লাইনে দাঁড়ানোর কষ্ট ভুলে গেছি। মা-বাবার সাথে ঈদ করার আনন্দের কাছে এ কষ্ট কিছুই না।
চট্টগ্রাম স্টেশন সূত্রে জানা যায়, ৭টি কাউন্টার থেকে ঢাকা মেইল, তূর্ণা নিশিথা, উদয়ন, পাহাড়িকা, প্রভাতী, মেঘনা ও চট্টলা, মহানগর গোধূলীর টিকেট পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়া চাঁদপুরের জন্য ঈদ স্পেশাল ট্রেনের টিকেট আছে। একজন সর্বোচ্চ ৪টি টিকেট কিনতে পারবেন।
টিকেট কিনতে স্টেশনে উপস্থিত আলমগীর, সবুজ ও সোহাগসহ অনেকেই অভিযোগ করেছেন, ১০/১২ জন লাইনে দাঁড় করিয়ে দিয়ে সিন্ডিকেট করে টিকেট কিনছেন অনেকেই।
তবে তা অস্বীকার করে চট্টগ্রাম রেল স্টেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, কালোবাজারি বন্ধে আইন-শৃংখলা বাহিনী তৎপর রয়েছে। ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরাসহ স্টেশনের নিরাপত্তার জন্যও বাড়তি নিরাপত্তাকর্মী রয়েছে।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তা মিজানুর রহমান জানান, ঈদ উপলক্ষে ২৪ জুলাই থেকে ২৮ জুলাই পর্যন্ত অগ্রিম টিকেট বিক্রি করছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। ২০ জুলাই থেকে ২৪ জুলাই প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত অগ্রিম টিকেট কাটতে পারবেন যাত্রীরা।
প্রতিদিন প্রায় সাড়ে ৩ হাজারেরও বেশি টিকেট বিক্রির জন্য বরাদ্দ রয়েছে বলেও জানান তিনি।
চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন সূত্রে আরও জানা যায়, ঈদ উপলক্ষে ২০, ২১, ২২, ২৩ ও ২৪ জুলাইয়ে যথাক্রমে ২৪, ২৫, ২৬, ২৭ ও ২৮ জুলাইয়ের টিকেট বিক্রি করা হবে। এরমধ্যে কোনো স্ট্যান্ডিং টিকেট বিক্রি হবে না। প্রতিটি ট্রেনের যাত্রা শুরুর আগে ওই দিনই ‘স্ট্যান্ডিং টিকেট’ বিক্রি করা হবে।
মিজানুর রহমান জানান, গত বছর রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে নাশকতার কারণে ট্রেনের প্রচুর ক্ষতি হয়েছে। অন্যান্য বছরের তুলনায় অতিরিক্ত বগি সংযোজন কমানো হয়েছে।
তিনি জানান, বাস মালিকরা ভাড়া প্রায় দ্বিগুণ করায় ট্রেনে বাড়তি চাপ পড়তে পারে।
একুশে সংবাদ ডটকম/আর/২১-০৭-০১৪:
Link copied!
আপনার মতামত লিখুন :