গণপরিবহনে আগের ভাড়ায় স্বস্তি, তবে উধাও স্বাস্থ্যবিধি
একুশে সংবাদ : গণপরিবহনে বর্ধিত ৬০ শতাংশ ভাড়া কমায় স্বস্তি প্রকাশ করেছেন যাত্রীরা। ১ সেপ্টেম্বর (মঙ্গলবার) থেকে করোনা পূর্ববর্তী ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে ৫০ শতাংশ আসন ফাঁকা রাখার বাধ্যবাধকতাও উঠে গেছে। তবে, বাড়তি ভাড়া কমলেও উধাও হয়ে গেছে স্বাস্থ্যবিধি।
গতকাল (মঙ্গলবার) রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, বেশিরভাগ বাসেই শতভাগ আসন যাত্রী তোলার পর স্ট্যান্ডি প্যাসেঞ্জারও নেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে যাত্রীরা আপত্তি তুললে পরিবহণ শ্রমিকরা তাতে গুরুত্ব দেয়নি। বরং সরাসরি বাধা দেওয়ার চেষ্টা করায় কোথাও কোথাও বাসের হেলপার চালকরা যাত্রীদের উপর চড়াও হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ না কমলেও গণপরিবহণের এমন স্বেচ্ছাচারিতায় গোটা পরিস্থিতি আর ঘোলাটে হতে পারে। সরকারের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্যবিধি মানার ব্যাপারে কঠোর না হলে গণপরিবহণের মাধ্যমে করোনার ভয়াবহ বিস্তার ঘটতে পারে।
মতিঝিল ও ফকিরাপুল থেকে ছেড়ে যাওয়া বাসগুলোতেও স্বাস্থ্যবিধির কোনো বালাই ছিল না। এর উপর আদায় করা হয়েছে বাড়তি ভাড়া। এসব নিয়ে যাত্রীদের সঙ্গে পরিবহণ শ্রমিকদের বাকবিতন্ডায় জড়াতে দেখা গেছে। আর আগের ভাড়া কার্যকর হওয়ার প্রথম দিনেই নগরীতে বাসের সংখ্য কম লক্ষ্য করা গেছে। এতে বিপাকে পড়েছেন বিভিন্ন গন্তব্যে যাতায়াতকারীরা।
যাত্রীদের অভিযোগ, সরকারের নির্দেশনা থাকলেও এখনো বাড়তি ভাড়া আদায় করছে গণপরিবহণগুলো। আগের ভাড়ার কথা মনে করিয়ে না দিলে বাড়তি ভাড়া চাচ্ছেন পরিবহণ শ্রমিকরা। তাদের ইচ্ছামতো ভাড়া না দিলেই হয়রানির শিকার হতে হয়েছে।
শাহবাগ মোড়ে দেখা গেছে, প্রতিটি পরিবহণেই সবকটি আসনে যাত্রী রয়েছে। এ সময় মিডওয়ে পরিবহণের একজন যাত্রী জানান, 'আগের ভাড়ার কথা কন্ডাক্টরদের মনে করিয়ে দিতে হচ্ছে। তা না হলে তারা করোনাকালের জন্য যে ৬০ শতাংশ ভাড়া বৃদ্ধি করা হয়, সেই ভাড়াই রেখে দিচ্ছে। আমার থেকেও এমন করা হয়েছে।'
নগরীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে কথা হয় শিখর পরিবহণের যাত্রী মহিউদ্দিনের সঙ্গে। তিনি মিরপুর ১০ নম্বর থেকে সেখানে এসেছেন। করোনাকালের আগের নির্ধারিত ভাড়া অনুযায়ী এই পথের ভাড়া হচ্ছে ১৮ টাকা, করোনাকালীন এখান থেকে ৩৫ টাকার মতো আদায় করা হতো। কিন্তু আজ তার থেকে ২০ টাকা নেওয়া হয়েছে।
বিহঙ্গ পরিবহণের চালক সামছুদ্দিন বলেন, 'আমরা আগের ভাড়াই নিচ্ছি। কিন্তু কিছু কিছু যাত্রী সেই ভাড়াও দিতে চায় না। যে কারণে কারও কারও সঙ্গে ঝামেলা হয়। এছাড়া সিটের বাইরে কোনো যাত্রী পরিবহণ করা হচ্ছে না। মোড়ে মোড়ে বিআরটিএর ভ্রাম্যমাণ আদালত আছে। নিয়ম না মানলে তারা মামলা করে দিচ্ছে, জরিমানা আদায় করছে।
জানতে চাইলে ঢাকা সড়ক পরিবহণ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্যাহ বলেন, সব মালিককে চিঠি দিয়ে সরকারের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দিয়েছি। কোনো বাসে দাঁড়িয়ে বা বর্ধিত ভাড়া আদায় করা যাবে না। যদি কেউ এমন করে থাকে বা কোনো যাত্রীর কাছ থেকে অভিযোগ আসে সঙ্গে সঙ্গে সেই পরিবহণের বিরুদ্ধ আইনগত ব্যবস্থার পাশাপাশি সাংগঠনিক ব্যবস্থাও নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
একুশে সংবাদ/এআরএম/০২/০৯/২০২০
Link copied!
আপনার মতামত লিখুন :