নড়াইলে আসন্ন ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ আহত ১০
উজ্জ্বল রায়, নড়াইল জেলা প্রতিনিধি: ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে আসায় উদ্বেগ উৎকন্ঠায় দিনপাত করছেন নড়াইল জেলার সদর উপজেলার ৯নং সিংগাশোলপুর ইউনিয়নের বাসিন্দারেরা। আমাদের নড়াইল জেলা প্রতিনিধি উজ্জ্বল রায়ের পাঠানো তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়, আওয়ামীলীগ সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী সাইফুল ইসলাম হিটু অধিপত্য ব্যাপক বিস্তার করে ভোটারদের মধ্যে আতংক ছড়াচ্ছেন। প্রতিপক্ষ প্রার্থীকে ঘাঁয়েল করতেন তিনি সহিংসতার পরিকল্পনা করছেন। ইতোমধ্যে ইউনিয়নের একাধিক স্থানে গোপন বৈঠক করে তিনি ভোট ডাকাতি ছক পাকাপক্ত করছেন। বিভিন্ন স্থান থেকে সন্ত্রাসী ভাড়া করে যে কোন মুল্যে বিজয় ছিনিয়ে নেয়ার পরিকল্পনা করছেন বলে স্থানীয় একাধিক সুত্রে জানা গেছে। আর এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সোমবার রাত ১০টার দিকে নৌকা প্রতীকের নির্বাচনী প্রচারণায় যাওয়ার পথে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও গোবরা বণিক সমিতির নেতা উজ্জ্বল সমর্থকদের সাথে নৌকা প্রতীকের সমর্থকদের সাথে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এরই জের ধরে প্রতিপক্ষের
হামলায় মোস্তফা কামরুজ্জামান কামাল, সাবেক সভাপতি, জেলা ছাত্রলীগ, মোঃ নাইম মোল্যা, সভাপতি, নড়াইল জেলা তরুণ লীগ, মোঃ হোসেন মোল্যা, রনি মুন্সী, রকি মুন্সীসহ কালিয়া উপজেলা যুবলীগের নেতাসহ কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়। বর্তমানে আহত অনেকের অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে। ডিব পুলিশ সূত্রে জানা যায়, এএসআই হাসান, এএসআই আলমগীর, কনস্টেবল নারায়ণ, শিমুল, শরীফ, মুরাদ, বায়েজিদসহ ডিবির একটি টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এদিকে নড়াইল জেলা নির্বাচনী অফিস সুত্রে জানা গেছে, ৭ মে নড়াইল জেলার
সদর উপজেলার ৯নং সিংগাশোলপুর ইউনিয়নে ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন। সুষ্ঠ নির্বাচন সম্পন্ন করতে নানা প্রস্তুতি গ্রহণ করা হচ্ছে। কিন্তু নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠ নির্বাচনের পরিকল্পনা করলেও গোপনে ভোট ডাকাতির ছক কষছেন সয়ং আওয়ামীলীগ সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী সাইফুল ইসলাম হিটু। তিনি তার অনুসারীদের নিয়ে এলাকায় অস্ত্রের মহড়া দিচ্ছেন বলে একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেছে। প্রতিপক্ষ প্রার্থীর লোকদের ভয় দেখাতে সন্ত্রাসী কার্যক্রম করছেন। এছাড়া ভোট কেন্দ্রে প্রতিপক্ষের ভোটারেরা যাতে না আসতে পারে সেজন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। বিভিন্ন স্থান থেকে সন্ত্রাসী জড়ো করে ব্যাপক ভোট ডাকাতির আগাম প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। সাইফুল ইসলাম হিটু বিভিন্ন স্থানে উস্কানিমুলক বক্তব্য দিয়ে মানুষের মধ্যে ভীতি আরও বাড়িয়ে দিচ্ছেন। একাধিক সুত্রে জানা গেছে, ভোট কেন্দ্র দখল, জোরপূর্বক ভোট কাটা ও সংখ্যালঘুদের ভোট কেন্দ্রে
বাঁধাদান করতে হিটুর অনুসারীরা অন্তত ১২/১৫টি স্থানে গোপন বৈঠক করেছেন। সেখানে কার নেতৃত্বে এ কাজ করা হবে, প্রতি দলে কতজন সন্ত্রাসী থাকবে সে ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে। সংখ্যালঘু ভোটাররা যাতে ভোট কেন্দ্রে না না যায় সেজন্য তাদের বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। এতে নির্বাচনের দিন ঘনিয়ে আসায় সাধারন ভোটারদের মধ্যে উদ্বেগ উৎকন্ঠা বাড়ছে। তারা ভোট কেন্দ্রে যেতে পারবেন কিনা তা নিশ্চিত হতে পারছেন না। নাম প্রকাশ না করার সত্তে কয়েকজন ভোটার জানান,‘ হিটুর সন্ত্রাসীরা তাদের প্রাশনাশের হুমকি দিচ্ছে।
ভোট কেন্দ্রে না যাওয়ার জন্য তাদের আগের থেকেই নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। হিটুর সন্ত্রাসীরা প্রতিপক্ষ প্রার্থীর পোস্টার ছিঁড়ে ফেলছে।’ উল্লেখ্য যে, ইতোমধ্যে সাইফুল ইসলাম হিটুর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড ও ভোট ডাকাতির অভিযোগ এনে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন বর্তমান চেয়ারম্যান খায়রুজ্জামান মোল্যা (খায়ের)। অভিযোগে তিনি সুষ্ঠ ভোট নিয়ে শংকা প্রকাশ করেছেন। এছাড়া ভোট সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন করতে হিটুর সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য তিনি প্রশাসনের হস্তপেক্ষপ কামনা করেছেন। এ ব্যাপারে আওয়ামীলীগ সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী সাইফুল ইসলাম হিটুর সাথে কথা বলার জন্য তার মোবাইল ফোনে (০১৭১২-৫৪৪৮৮৩) একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
একুশে সংবাদ/এস/০৩-০৫-১৬
Link copied!
আপনার মতামত লিখুন :