ভাইরাসের কারণে চোখ ওঠে
একুশে সংবাদ:চোখ ওঠা রোগকে সাধারণভাবে চিকিৎসকরা কনজাংটিভাইটিস বা কনজাংটিভার প্রদাহ বলে থাকে।চোখ ওঠা বলতে সাধারণভাবে চোখ লাল হওয়া, খচখচ করা, সামান্য ব্যথা করা, পিচুটি জমা এবং রোদে বা আলোতে তাকাতে কষ্ট হওয়া ও পানি পড়াকে বোঝোনো হয়।
বিশেষ করে রাতে ঘুমের পর সকালে উঠলে চোখের কোণে পিচুটি বা ময়লা জমতে পারে। শিশুদের ক্ষেত্রে চোখ দিয়ে পানি পড়তে পারে। সর্দি ও চোখের চুলকানিও হতে পারে।
চোখের কালো মণির চারদিকে যে সাদা অংশ দেখা যায়, এর আবরণকে চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা কনজাংটিভা বলেন। চোখ উঠলে এই সাদা অংশ লাল হয়ে যায় এবং এখানে প্রদাহ বা জ্বালা যন্ত্রণার সৃষ্টি হয়। সাধারণভাবে এ রোগটি ঋতু পরিবর্তনের সময় দেখা দেয়। অর্থাৎ শীত শেষে গরম যখন পড়তে থাকে সে সময় এ রোগ দেখা দেয়। একই সঙ্গে এ সময় অন্যান্য ভাইরাসঘটিত রোগ যেমন সর্দি-কাশি বা ঠাণ্ডা জ্বর দেখা দেয়।
সাধারণভাবে ভাইরাসের কারণেই চোখ ওঠার মতো রোগ দেখা দেয়। কিন্তু ভাইরাসই চোখ ওঠার একমাত্র কারণ নয়। ব্যাপকহারে বা মহামারি আকারে যে চোখ ওঠা দেখা দেয় তা অ্যাডিনো নামে এক ধরনের ভাইরাসের কারণে হয়ে থাকে। স্কুল কলেজ থেকে এই রোগ ছড়াতে পারে। ঘনবসতি পূর্ণ এলাকায় কারো যদি ভাইরাসঘটিত চোখ ওঠা দেখা দেয় তাহলে সেখানে এই রোগ দ্রুত বিস্তার লাভ করতে থাকে।
এছাড়া রোগীর ব্যবহৃত গামছা, তোয়ালে যদি সুস্থ কেউ ব্যবহার করেন তবে তারও এ রোগ হতে পারে। রোগীর সঙ্গে একত্রে থাকার কারণে চোখ ওঠা হতে পারে। বাতাসের মাধ্যমে এই রোগের বিস্তার ঘটে। তবে সব চোখ ওঠাই কিন্তু ভাইরাসের কারণে হয় না। কোনো কোনো চোখ ওঠা ব্যাকটেরিয়ার কারণেও হয়।
চোখ ওঠলে চোখ লাল হবে কিন্তু চোখে ব্যথা হবে না বা চোখে ঝাপসাও দেখা যাবে না। যদি চোখ ওঠার সঙ্গে সঙ্গে এ ধরনের কোনো উপসর্গ দেখা দেয় তা হলে রোগীকে সর্তক হতে হবে। কারণ তখন ধরে নিতে হবে গ্লুকোমা বা আইরাইটিস নামে যে কোনো কারণে এ ধরনের উপসর্গ দেখা দিয়েছে। সেক্ষেত্রে ডাক্তারের কাছে যেতে মোটেও বিলম্ব করা ঠিক হবে না।
ভাইরাসজনিত চোখ ওঠার জন্য সাধারণভাবে তেমন কোনো ওষুধের দরকার পড়ে না। কারণ এ জাতীয় চোখ ওঠা সাতদিনের মধ্যেই ভালো হয়ে যায়। তারপরও চিকিৎসক কখনো কখনো এ জাতীয় চোখ ওঠার জন্য অ্যান্টিবায়োটিক ড্রপ দিয়ে থাকেন। এটা দেয়া হয় সর্তকতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে। ভাইরাসজনিত চোখের রোগের ফলে অন্যকোনো সংক্রমণ যেনো হামলা করতে না পারে সে জন্যেই এই অ্যান্টিবায়োটিক দেয়া হয়।
এছাড়া চোখ ওঠা ছাড়াও যদি জ্বর বা গলা ব্যথা জাতীয় উপসর্গ থাকে তবে তার জন্য চিকিৎসক ওষুধ প্রদান করবেন। এছাড়া ব্যাকটেরিয়াজনিত কারণে যদি চোখ উঠে থাকে তবে সেক্ষেত্রে চিকিৎসক অবশ্যই অ্যান্টিবায়োটিক দেবেন। এছাড়া প্রয়োজনীয় আরো ওষুধ দেবেন।
একুশে সংবাদ ডটকম/মামুন/১৭.১০.২০১৪
Link copied!
আপনার মতামত লিখুন :