মুন্সিগঞ্জের কোর্টগাঁও এলাকার স্কুলছাত্রী আদিবা আক্তারের সঙ্গে তিন বছর আগে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে একই এলাকার বিজয় রহমানের। গত বছর নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী জেসিকা মাহমুদের সঙ্গে নতুন সম্পর্কে জড়ান বিজয়। ত্রিভুজ প্রেমের সম্পর্ক ধরে ফেলেন আদিবা। এরপর বিজয়কে চাপ দিয়ে গোপনে বিয়ে করেন আদিবা। বিয়ের বিষয়টি জেনে জেসিকা তার সঙ্গে বিজয়ের ম্যাসেঞ্জারে বার্তা আদান-প্রদানের স্ক্রিনশর্ট আদিবাকে পাঠায়। এ নিয়ে আদিবার সঙ্গে বিজয়ের ঝগড়া হয়। তাঁদের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি শুরু হয়। পরে ভুল বোঝাবুঝির অবসান হলে দুজন মিলে পরিকল্পনা সাজিয়ে জেসিকাকে খুন করেন।
রোববার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর কাওরানবাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, “বিজয় ও তাঁর স্ত্রী আদিবা মিলে গত ১ জানুয়ারি জেসিকাকে উচিত শিক্ষা দেওয়ার পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী ৩ জানুয়ারি জেসিকার বাসায় যান আবিদা। নিজেদের মধ্যে ঝামেলা মিটিয়ে নেওয়ার কথা বলে জেসিকাকে বিজয়ের বাসার ছাদে ডেকে নেন আদিবা।”
তিনি বলেন, “সেখানে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে বিজয় ও আদিবা মিলে জেসিকাকে শ্বাস রোধ করে হত্যার চেষ্টা চালান। একপর্যায়ে ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে দুজন মিলে জেসিকাকে ছাদ থেকে ফেলে দেন। পরে নিজেরাই আহত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।”
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ঘটনার এক মাস পর গতকাল শনিবার হত্যা মামলার প্রধান আসামি বিজয় রহমানকে (১৯) রাজধানীর ওয়ারি এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
খন্দকার আল মঈন বলেন, “জেসিকা হাসপাতালে মারা গেলে সেখান থেকে পালিয়ে যান বিজয় ও আদিবা। জেসিকার ভাই হাসপাতালে এসে চিকিৎসকের কাছ থেকে জানতে পারেন, তাঁর বোনকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। পরে তিনি বাদী হয়ে বিজয় ও আদিবাকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন।”
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ঘটনার পরদিন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা আদিবাকে গ্রেপ্তার করেন। তিনি এখন কারাগারে আছেন। আর বিজয় ঘটনার পর মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান এলাকায় এক বন্ধুর বাসায় চার দিন আত্নগোপনে থাকেন।
সেখানে নিরাপদ মনে না করায় ফরিদপুরের একটি মাজারে গিয়ে ২২ দিন ছদ্মবেশে আত্মগোপন করেন। গ্রেপ্তার এড়াতে সেখান থেকে ওয়ারিতে এলে র্যাব তাঁকে গ্রেপ্তার করে।
এক প্রশ্নের জবাবে আল মঈন বলেন, “বিজয়ের বাবা ব্যবসায়ী। তিনি বা তাঁর পরিবারের কারও আগে কোনো অপরাধে জড়িত ছিল, এমন কোনো তথ্য জানা যায়নি।”
একুশে সংবাদ/এসএপি