বরিশালের আগৈলঝাড়া ভূমিহীন মুক্ত ঘোষণা

‘শেখের মাইয়া শেখ হাসিনা আমাগো ঘর আর জায়গা দিছে। এতোদিন মোগো ঘর বাড়ি ছিলো না। কোন ঠিকানা ছিলো না। আজ থাইকা মোগো ঠিকানা বানাই দিছে শেখের মাইয়ায়। মোর একাটা কোলের পোলা আয়াদ ইসলাম তিন বছর বয়স। মোরএই পোলাডা লইয়া কতোকষ্ট করছি মানুষের বাড়ি বাড়ি। আজগো মোর বাড়ি হইছে ঘরও হইছে। মোগো আর ঘর বাড়ির কষ্ট নাই।‘ 
মঙ্গলবার ১১ জুন সকালে সারাদেশে একযোগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক ভূমিহীন গৃহহীন পরিবারকে জমি ও গৃহ হস্তান্তর কার্যক্রমের উদ্বোধন শেষে আগৈলঝাড়ার গৃহহীন বাকাল গ্রামের আসলাম উদ্দিনের স্ত্রী খায়রুন নাহার পুতুল এই কথাগুলো বলেন।
এসময় আগৈলঝাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারিহা তানজিন আগৈলঝাড়া উপজেলাকে ভূমিহীন গৃহহীন পরিবারমুক্ত ঘোষণা করেন।

এসময় ৮৭ বছরের বৃদ্ধা সোবাহান শিকদার অশ্রুসজল চোখে বলেন, সারাজীবনে আমার ঘর ছিলো না। রোদ বৃষ্টিতে ভিজেছি। আমার স্ত্রী ফরিদা বেগমকে নিয়ে কতো রাত গাছে নিচে কাটিছি। আজ  বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর মেয়ে আমাকে জমি ও ঘর দিয়েছে। আমার জীবনের  শেষ বয়সে আমার স্ত্রীকে নিয়ে আর বৃষ্টিতে ভিজতে হবে না। আজ আমারা চিন্তামুক্ত। 
উপজেলার নবমুসলিম সুপ্রীয়া বৈরাগী বলেন,  আমি হিন্দু পরিবারে মেয়ে  মুসলিম পরিবারে এক ছেলেকে বিয়ে করে আমি মুসলিম ধর্মগ্রহণ করি। আমাদের পরিবায়ে একটি ৭ বছরে মেয়ে সন্তান। আমাদের কোন ঘরবাড়ি ছিলো না। মানুষের বাড়ি কাজ করি আর মানুষের বাড়ি থাকি। এখন  প্রধানমন্ত্রী আমাদের জমি ও ঘর দিয়েছে। আজকে ঘর আর জমি দলিল হাতে পেলাম। এখন মেয়ে টাকে নিয়ে ভালোভাবে বসবাস করতে পারবো। মেয়েটাকে ভবিষ্যতে লেখাপড়া করাতে কোন সমস্য হবে না।

মঙ্গলবার সকালে আগৈলঝাড়া উপজেলা পরিষদ হলরুমে ভূমিহীন গৃহহীন পরিবারকে জমি ও গৃহ হস্তান্তর কার্যক্রমের সভায় সভাপতিত্ব করেন আগৈলঝাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারিহা তানজিন। এসময় তিনি বলেন, আগৈলঝাড়া উপজেলায় চারটি ধাপে ২৫০ জনকে ভূমিহীন গৃহহীন পরিবারকে জমি ও ঘর দেওয়া হয়েছে। পঞ্চম ধাপে ২৮ জনকে জমি ও গৃহ হস্তান্তর করা হলো। এর মধ্য দিয়ে আজ আগৈলঝাড়া উপজেলায় ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার মুক্ত হলো।

সভায় বক্তব্য রাখেন, বরিশালের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মনদ্বীপ ঘড়াই, উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি উম্মে ইমামা বানিন, বরিশাল সহকারী কমিশনার ভূমি শহীদুল্লাহ, আগৈলঝাড়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোশারফ হোসাইন, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা সুশান্ত বালা ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শেখর রঞ্জন ভক্তসহ প্রমুখ।
পরে উপজেলার বাকাল ইউনিয়নের ডুমুরিয়া গ্রামে নির্মিত ২৮টি ঘর ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের মাঝে দলিল হস্তান্তর করা হয়। এই উপজেলায় ২শত ৫০টি ঘর ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে।  

একুশে সংবাদ/ এসএডি