প্রচণ্ড তাপদাহে পুড়ছে রাজশাহী অঞ্চল। আমের শহরখ্যাত এ জেলায় দিনের তাপমাত্রা ক্রমশ বাড়ছে। এতে বোঁটার রস শুকিয়ে ঝরে পড়ছে আমের গুটি। পানি সেচ ও নানা পদ্ধতি অবলম্বন করেও গুটি ঝরে পড়া ঠেকানো যাচ্ছে না। ফলে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন আমচাষিরা। আম উৎপাদনে বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন তারা।
![](https://86818.cdn.cke-cs.com/DCPkOUSXZG0bSzEhfv2o/images/8d7b0d4d09d456477c8b13ef9b82fd8debb6fe7564df28ef.jpg)
ইতোমধ্যে অনেক বাগানে প্রায় ৩০ ভাগ আমের গুটি ঝরে পড়েছে। আমচাষি ও ব্যবসায়ীরা বলছেন, রাজশাহীর ৯ উপজেলায় ব্যাপক আম চাষ হয়। এবছর আম বাগানে মুকুল এসেছিল চাহিদার তুলনায় অনেক কম। এরপর গত কয়েক দিনের তীব্র তাপদাহে আমের বোঁটা শুকিয়ে ঝরে পড়ছে গুটি। এতে পানি সেচ ও নানা পদ্ধতি অবলম্বন করেও ঝরে পড়া ঠেকানো যাচ্ছে না।
![](https://86818.cdn.cke-cs.com/DCPkOUSXZG0bSzEhfv2o/images/8ea75f02130078c3d9184768c5ed87c37bb6260ff88d1f86.jpg)
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, ৯ উপজেলায় ১৯ হাজার ৬০২ হেক্টর জমিতে আমবাগান রয়েছে। সবমিলে এবার দুই লাখ ৬০ হাজার ১৬৪ টন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। গতবার জেলার ১৯ হাজার ৫৭৮ হেক্টর জমি থেকে আমচাষিদের আয় হয়েছিল এক হাজার ৫২৮ কোটি দুই লাখ ৯৯ হাজার ৭৭০ টাকা।
![](https://86818.cdn.cke-cs.com/DCPkOUSXZG0bSzEhfv2o/images/f56c6578945a10bf2ebcdc6ee4bbe2e750e163217cf4e8a2.jpg)
রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রহিদুল ইসলাম জানান, বুধবার (১৭ এপ্রিল) জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। আগের দিন মঙ্গলবার ৩৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। রাজশাহীতে গত চারদিনে মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ চলছে। আগামী তিন দিনের মধ্যে বৃষ্টির কোনো সম্ভাবনা নেই। বরং তাপমাত্রা আরও বাড়বে।
নগরীর খড়খড়ি বাইপাশের আমচাষি শরিফুল ইসলাম কাদু বলেন, তীব্র খরায় আমের বোঁটার রস শুকিয়ে হলুদ আকার ধারণ করে ঝরে পড়ছে। মৌসুমের শুরুর দিকে বেশ ভালো মুকুল আসলেও ঘন কুয়াশা ও হালকা বৃষ্টিতে প্রথম দফায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এরপর যে খরা চলছে এতে গাছে আম ধরে রাখায় কষ্টকর।
কাশিয়াডাঙ্গার এনতাজ আলী বলেন, আমের জন্য এ সময় বৃষ্টি খুবই প্রয়োজন। বৃষ্টি না হওয়ার কারণে এবার আমের আকার বেশ ছোট হবে। সেই সঙ্গে উৎপাদনও কমবে। এবার মৌসুমের শুরু থেকেই আমের দাম বেশ চড়া থাকবে। কেননা গাছে আম নেই।
রাজশাহী ফল গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, গত বছর আমের অন ইয়ার থাকলেও এবার অফ ইয়ার, ফলে স্বাভাবিকভাবেই আমের ফলন কমবে। তবে প্রতিকূল আবহাওয়ায় কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন ব্যহত হবে। এসময় চাষীদের বিভিন্ন হপার পোকা নিধনে ওষুধের পাশাপাশি সকাল সন্ধ্যা পানি স্প্রে করা দরকার।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোছা. উম্মে সালমা বলেন, সব উপজেলায় খরা মোকাবিলায় আমের গুটি টিকিয়ে রাখতে চাষিদের পরামর্শ দিতে কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
একুশে সংবাদ/জা.নি/ এসএডি
আপনার মতামত লিখুন :