AB Bank
ঢাকা শনিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

নিখোঁজের দুই বছর পর মিলল হাড়ঁ, চার আসামি গ্রেপ্তার


নিখোঁজের দুই বছর পর মিলল হাড়ঁ, চার আসামি গ্রেপ্তার

বাবা খেলনা নিয়ে ফিরবেন। ছোট্ট শিশু তামিম (৪) দুই বছর ধরে অপেক্ষা করে আছে। বাবা মাফিজুল (২৫) যখন নিখোঁজ হয়েছিলেন, তামিমের বয়স তখন দুই বছর। এই দীর্ঘ সময় বাবার কথা মনে হলে মা মিনা খাতুন সন্তানকে শান্ত্বনা দিতেন। বলতেন টাকাপয়সা আয় করে বাবা ফিরবেন তামিমের জন্য খেলনা নিয়ে। শান্ত্বনার
বানীতে মা বুক ভাসালেও শিশু তামিমের অপেক্ষার প্রহর এখনো শেষ হয়নি। ছোট্ট শিশুটি জানেনা বাবা মাফিজুল খুন হয়েছেন।

বাবার শেষ পরিণতির কথা শিশু তামিম বুঝতে না পারলেও নিখোঁজের দুই বছর পর মিনা খাতুন জানতে পেরেছেন স্বামী খুন হয়েছেন। স্বামী হারিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন মিনা খাতুন, শশুড়,শাশুড়ীসহ পরিবারের লোকজন। হত্যাকাণ্ডের শিকার মাফিজুল ইসলাম নাটোরের গুরুদাসপুর পৌর শহরের খলিফাপাড়া মহল্লার
আজাদ প্রামাণিকের ছেলে। বাবা-মা, ছোট দুই ভাইবোন ও স্ত্রী সন্তান নিয়ে ছিল মাফিজুলের সুখের সংসার। বাড়ির ভিটার ১১ কাঠা জমি ছাড়া খেতখামারে তাদের
কোনো জমাজমি নেই।

মাফিজুলের বাবা আজাদ প্রামাণিক বলেন, দিনমজুরী করে মাফিজুল ও মাহফুজকে বড় করেছেন তিনি। বড় ছেলে মাফিজুল রঙ মিস্ত্রি এবং ছোট ছেলে মাহফুজ একটি জুতার দোকানে কাজ করতেন। বাবা ছেলের আয়ে তাদের ছয় সদস্যের সংসার ভালোই চলছিল। কিন্তু বছর দুয়েক আগে বড় ছেলে মাফিজুল হঠাৎ নিখোঁজ হন। তখন থেকে সন্তানের শোকে রুগ্ন হয়ে পড়েছেন তারা স্বামী-স্ত্রী।

তিনি বলেন, মাফিজুলের স্ত্রী-সন্ত্রানকে ভরণপোষণ দিতে তিনি ব্যাটারি চালিত ভ্যান চালানো শুরু করেছিলেন। আশায় বুক বেঁধে ছিলেন ছেলে মাফিজুল ফিরে আসবেন
তাদের বুকে। কিন্তু রোববার (৩ মার্চ) সন্তানের হাড়গোড় পাওয়া গেল। এখন তাদের ৫ সদস্যদের পরিবারের ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে গেল। আসামিদের মুখোশ উন্মোচিত হয়েছে। ছেলের হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি তার।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালের ৭ মে নিখোঁজ হন মাফিজুল। সন্তানকে খোঁজখুঁজি করে সন্ধান না পাওয়ায় গুরুদাসপুর থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরী করেন নিহত মাফিজুলের মা। মাফিজুল ফেরার অপেক্ষায় পথ চেয়ে ছিলেন পরিবারের লোকজন। কিন্তু সম্প্রতি প্রতিবেশী জাকির মুন্সির দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ছেলের শেষ পরিণতির বিষয়ে জানতে পারে মাফিজুলের পরিবার। শুক্রবার গুরুদাসপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন মাফিজুলের মা মাইনুর বেগম। এরপর রোববার দুপুরে চাঁচকৈড় বালিকা দাখিল মাদরাসার শৌচাগারের মেঝে খুঁড়ে লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। মামলায় চার আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

মাফিজুলের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় তার লাশ উদ্ধারের খবর শুনে স্ত্রী- স্বজনেরা আহাজারি করছেন। মা মাহিনুর বেগম ছেলের শোকে অসুস্থ হয়ে বিছানায় পড়ে গেছেন। মাঝেমধ্যে ছেলের শোকে চিৎকার করে উঠছেন। বাবা আজাদ প্রামাণিক কোনো কথা বলছেন না। বাবা হারিয়ে নির্বাক চোখে তাকিয়ে আছে ছোট্ট শিশু তামিম।

মাফিজুলের স্ত্রী মিনা খাতুন কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, মাফিজুলের সাথে তার বিয়ের পাঁচ বছর। পাঁচ বছরের সংসারে একমাত্র সন্তান তামিমকে (৪) নিয়ে দিনের পর দিন স্বামীর অপেক্ষায় কাটিয়েছেন। ভেবেছিলেন স্বামী ফিরবেন। কিন্তু এখন নিশ্চিত হয়েছেন স্বামী হত্যাকাণ্ডের শিকার। স্বামী হারিয়ে এখন নিজের এবং সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত তিনি।

 

একুশে সংবাদ/জ.পা.উ/সা.আ
 

Link copied!