AB Bank
ঢাকা সোমবার, ২০ মে, ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

নিহত গার্মেন্টসকর্মী আঞ্জুয়ারার স্বামীর আহাজারি


Ekushey Sangbad
নিজস্ব প্রতিবেদক
০৮:৩১ পিএম, ৮ নভেম্বর, ২০২৩
নিহত গার্মেন্টসকর্মী আঞ্জুয়ারার স্বামীর আহাজারি

আমার স্ত্রী তো গার্মেন্টসের একজন সেলাই মেশিন অপারেটর ছিল। সে তো আন্দোলনে যায়নি। তার তো কোনো দোষ ছিল না। সে তো কাজ শেষ করে বাসায় আসছিল। তবে কেন আমার স্ত্রীকে গুলি করে মারল? এখন আমার ছেলে মেয়ে দুটোর কী হবে? কে তাদের মায়ের ভালোবাসা দিবে?‍‍` কথাগুলো বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়ছিলেন গাজীপুরে পুলিশের গুলিতে নিহত গার্মেন্টস কর্মী আঞ্জুয়ারা খাতুনের স্বামী জামাল বাদশা।

বুধবার ১২টা ও সাড়ে ১২টার দিকে গাজীপুরে বেতন–ভাতার বাড়ানোর দাবিতে জরুল কোনাবাড়ি এলাকায় বিক্ষোভের সময় গুলিবিদ্ধ দুজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। পরে কর্তব্যরত চিকিৎসক আঞ্জুয়ারা খাতুনকে মৃত ঘোষণা করেন।

পরে বুধবার বিকেলে হাসপাতলের মর্গের সামনে কান্নাজড়িতে কণ্ঠে বাদশা বলেন, ‍‍`আমার স্ত্রী ইসলাম নামে একটি গার্মেন্টসে সেলাই মেশিন অপারেটরের কাজ করত। আমি অন্য আরেকটি গার্মেন্টসে কাজ করি। এক ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে মোটামুটি ভালোই চলছিল আমাদের সংসার। গতকাল সরকার গার্মেন্টস শ্রমিকদের বেতন বাড়ালেও আমাদের এলাকার শ্রমিকরা তা মানতে চাইছিল না। ভাইরে আমাগো কী, বেতন বাড়াইলেও বেশি দামে বাজার করতে হইব, বেতন কমলেও বেশি দাম দিয়েই কিনতে হইব। আজ আবারও আমাদের এলাকার শ্রমিকরা বেতন বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলন করতে নামে। আর তখন আঞ্জুয়ারা গার্মেন্টস ছুটি দিলে বের হয়ে গাজীপুর চৌরাস্তার জরুল এলাকায় এলে পুলিশ আন্দোলনরত শ্রমিকদের ওপর গুলি করতে থাকে।‍‍`

‘তখন সে বাসায় আসার কোনো গলি খুঁজে না পাওয়ায় এদিক-ওদিক ছোটাছুটি করতে থাকে। পরে পুলিশের গুলি তাঁর মাথায় এসে লাগে এবং ঘটনাস্থলে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকে। পরে তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে এলে চিকিৎসক জানায়, আমার স্ত্রী আর বেঁচে নেই।‍‍`

কান্নাজড়িতে কণ্ঠে বাদশা বলেন, ‍‍`সাংবাদিক ভাইয়েরা, আপনারা তো আমারে খালি একই কথা জিগান কী ঘটেছিল, কই একবারও তো জিজ্ঞেস করেন না আমার ছেলে মেয়েটার এখন কী হইব?‍‍`

এসময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে স্ত্রী হত্যার বিচার দাবি করেন বাদশা। বলেন, ‍‍`আমাদের গ্রামের বাড়ি সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলায়। স্ত্রী ও ছেলে মেয়েকে নিয়ে আমি কোনাবাড়ি এলাকায় ভাড়া থাকি। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার স্ত্রী হত্যার বিচার চাই। আমার তো আর কিছুই রইল না। বাড়িতে গিয়ে ছেলেমেয়ে দুইটাকে কি করে বুঝামু তাদের মা আর নেই।‍‍`

ময়নাতদন্ত শেষে সন্ধ্যা সোয়া ৫টার দিকে স্ত্রীর মরদেহ নিয়ে প্রথমে গাজীপুরে গিয়ে সেখান থেকে গ্রামের বাড়ি উদ্দেশ্যে রওনা দেবেন বলেও জানান বাদশা।

গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিক নিহতের ঘটনায় গাজীপুর মহানগর পুলিশের কমিশনার মো. মাহবুব আলম বলেন, ‘পুলিশ ও শ্রমিকদের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনার সময় এক নারী শ্রমিক গুরুতর আহত হন। তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।’

দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন এলাকায় মজুরি বাড়ানোর দাবিতে পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করে আসছেন। গতকাল মঙ্গলবার পোশাক শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি সাড়ে ১২ হাজার টাকা নির্ধারণ করে সরকার। কিন্তু এতেও সন্তুষ্ট না হয়ে আজ বুধবার সকাল থেকে কোনাবাড়ি, জরুল ও বাইপাইলসহ বিভিন্ন এলাকায় কয়েকটি কারখানার শ্রমিকেরা আবারও বিক্ষোভ শুরু করেন। একপর্যায়ে শ্রমিকেরা বিভিন্ন সড়ক অবরোধ করে কাঠ ও টায়ারে আগুন ধরিয়ে দেয়।

 

একুশে সংবাদ/ই.ট.প্র/জাহা

 

Link copied!