পুরো শক্তি নিয়ে দেশের উপকূলীয় এলাকায় তাণ্ডব চালাচ্ছে ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’। ঝড়ের প্রভাবে ঘর-বাড়ি, দোকান-পাট তছনছ হয়েছে, ভেঙে পড়েছে গাছপালা। ‘রেমালের’ প্রভাবে দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি এবং ঝোড়ো বাতাস শুরু হয়েছে। রোববার মধ্যরাত থেকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) কুষ্টিয়া এলাকায়ও তীব্র বাতাসসহ বৃষ্টি হচ্ছে। এমন বৈরী আবহাওয়ায়ও সোমবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ক্লাস-পরীক্ষা চালু রেখেছে। এতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
জানা যায়, রোববার মাঝরাত থেকে শুরু হওয়া তীব্র বাতাসে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গার গাছপালা ভেঙে পড়েছে। প্রধান ফটকের সামনের কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়কের উপর গাছের ডাল ভেঙে পড়ায় রাস্তার একপাশ ব্লক হয়ে গেছে। সকাল থেকে ঝড়ো বাতাস ও বৃষ্টির মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহ শহরে অবস্থান করা শিক্ষার্থীদের পক্ষে ক্যাম্পাসে আসা কঠিন হয়ে পড়েছে।
এদিকে হলে অবস্থান করা শিক্ষার্থীরাও বৈরী আবহাওয়ার কারণে বাইরে বের হতে পারছে না। এছাড়া গত রাত থেকে হলে বিদ্যুৎ না থাকায় পানি সংকটে ভুগছে আবাসিক শিক্ষার্থীরা। এমন পরিস্থিতিতেও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ক্লাস-পরীক্ষা চালু রাখায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন শিক্ষার্থীরা। এমন পরিস্থিতিতে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ রাখার দাবি জানিয়েছেন অনেকেই।
লালন শাহ হলের আবাসিক শিক্ষার্থী আহসান হাবিব বলেন, প্রশাসনিক দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের সমন্বয়হীনতা ও দক্ষতার যথেষ্ট অভাব। তারা কি এমন পরিস্থিতিতে নিজেদের সন্তানদের ঘর থেকে বের হতে দেয়? আমাদের নিয়ে আসলে তাদের কোনো চিন্তা ভাবনাই নেই। আমাদের শিক্ষকরা আজকের এমন পরিস্থিতিতেও ক্লাস চালু রেখে চরম অমানবিকতার পরিচয় দিয়েছে। তারা কেবল নিজেদের নিয়ে ভাবতে ব্যস্ত।
হৃদয় আহমেদ নামের অপর এক ছাত্র বলেন, আজকের এমন বৈরী আবহাওয়ায়ও ক্লাস পরীক্ষা চালু রাখার বিষয়টা কোনোভাবেই ভালো সিদ্ধান্ত না। বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ক্যালেন্ডারে সারা বছরে ১৫০ দিন ছুটি থাকে। আর এমন একটা দুর্যোগপূর্ণ দিনে ক্যাম্পাসে ক্লাস-পরীক্ষা চলবে এটা মোটেই কাম্য ছিলো না।
জান্নাতুল তাজরিয়া নামের এক ছাত্রী জানান, আমাদের বাড়ি ক্যাম্পাস থেকে অনেকটা দূরে। এমন ঝড় বৃষ্টির দিনেও আমাদের স্যাররা ক্লাস বন্ধ রাখেনি। তারা আমাদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করলে কখনোই এমন সিদ্ধান্ত নিতো না।
ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসান বলেন, আমাদের এখানে তেমন কোনো প্রভাব নেই। স্বাভাবিক ভাবেই ক্লাস-পরীক্ষা চলবে। এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষ আমাকে কিছু জানাইনি। পরে যদি পরিস্থিতির অবনতি হয় তখন সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে জানতে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমানের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
একুশে সংবাদ/এস কে
আপনার মতামত লিখুন :