AB Bank
ঢাকা মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

কৃষি খাতে সম্প্রসারিত হচ্ছে ক্ষুদ্রঋণ


Ekushey Sangbad

০৪:২১ পিএম, জানুয়ারি ১০, ২০১৫
কৃষি খাতে সম্প্রসারিত হচ্ছে ক্ষুদ্রঋণ

একুশে সংবাদ : দারিদ্র্য বিমোচনে ক্ষুদ্রঋণ চালুর শুরুতেই ব্যবসা, ঘরবাড়ি নির্মাণসহ অনানুষ্ঠানিক বিভিন্ন খাতে ছড়িয়ে পড়ে ঋণ বিতরণকারী বেসরকারি সংস্থাগুলোর (এনজিও) কার্যক্রম। তবে সময়ের বিবর্তনে এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে কৃষি খাত। বর্তমানে দেশে ক্ষুদ্রঋণের প্রায় ৩৪ শতাংশ কৃষি খাতে বিতরণ করা হচ্ছে। ফলে মাইক্রো ক্রেডিট কার্যক্রম ক্রমেই কৃষি খাতে সম্প্রসারিত হচ্ছে। জানা গেছে, বর্তমানে দেশে ক্ষুদ্রঋণ বিতরণ করছে এমন এনজিওর সংখ্যা ৬৯৬। এনজিওগুলোর ক্ষুদ্রঋণ বিতরণে উত্থান-পতন থাকলেও ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে কৃষি খাতে ঋণ বিতরণ। যদিও ২০০৫ সালের আগ পর্যন্ত ক্ষুদ্রঋণের ৬০ শতাংশ যেত ব্যবসা খাতে। এছাড়া বসতবাড়ি মেরামত কিংবা দৈনন্দিন খরচ মেটানোর পর কৃষি খাতে অবদান ছিল সামান্যই। মূলত ২০০৯ সালে কৃষি খাতে ঋণ বিতরণে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কঠোর তদারকির পর থেকেই শুরু হয় ক্ষুদ্রঋণের গন্তব্য পরিবর্তন। আর ২০১০-১১ অর্থবছরে কৃষি খাতকে বিবেচনায় নিয়ে খাতভিত্তিক ঋণ বিতরণের হিসাব শুরু হওয়ার পর থেকেই শক্ত অবস্থানে আছে কৃষি খাত। কৃষি খাতে ঋণ বিতরণে সরকারের বিভিন্ন ধরনের নীতিসহায়তা, ঋণ বিতরণে এনজিওগুলোর খরচ তুলনামূলক কম হওয়া, গ্রামীণ পর্যায়ে প্রাতিষ্ঠানিক কার্যক্রম পরিচালনে সক্ষমতা বৃদ্ধি, সর্বোপরি কৃষি খাতের উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি এবং ঋণ আদায় পরিস্থিতি ভালো হওয়ায় এ খাতে ক্ষুদ্রঋণের বিস্তার বাড়ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এ বিষয়ে ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালকের উপদেষ্টা ও এশিয়ান সোসাইটি অব এগ্রিকালচারাল ইকোনমিস্টের (এএসএই) সভাপতি ড. মাহবুব হোসেন বলেন, কৃষি খাতে ঋণ বাড়াতে সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও বাণিজ্যিক ব্যাংক যখন ব্যর্থ হচ্ছে, তখন এনজিওগুলো ঋণ বিতরণের মাধ্যমে এ খাতকে জাগিয়ে তুলতে অবদান রাখছে। এনজিওগুলোর শক্তিশালী নেটওয়ার্ক থাকায় ঋণ বিতরণে পরিচালন খরচও তুলনামূলক কম হচ্ছে। ফলে ব্যবসায়িকভাবে বিকশিত (ভায়াবল) হতে পারছে তারা। অন্যদিকে গ্রামীণ পর্যায়ে শাখা-প্রশাখা বা নেটওয়ার্ক না থাকায় ছোট ছোট ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর অবদান কমে যাচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে কৃষির উন্নয়ন এনজিওগুলোকে আগ্রহী করছে জানিয়ে তিনি বলেন, আগে খাতটি অবহেলিত ও ঝুঁকিপূর্ণ মনে করা হতো। কিন্তু গত এক দশকে এ খাতে যেমন প্রযুক্তিগত উন্নয়ন হয়েছে, তেমনি ঋণ বিতরণের মাধ্যমে সফলভাবে অর্থ ফেরত এসেছে। মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটির (এমআরএ) তথ্যমতে, ২০১০-১১ অর্থবছরই ক্ষুদ্রঋণের ক্ষেত্রে কৃষি খাতে ঋণ বিতরণ হিসাবভুক্ত করা হয়। ওই অর্থবছর মোট বিতরণ করা ৩০ হাজার ৩১৮ কোটি ঋণের মধ্যে কৃষি খাতে বিতরণ হয় ৯ হাজার ৩৬৩ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৩০ দশমিক ৮৮ শতাংশ। ২০১১-১২ অর্থবছরে বিতরণকৃত ৪৫ হাজার ৬০২ কোটি টাকার ক্ষুদ্রঋণের মধ্যে কৃষি খাতে বিতরণ হয় ১১ হাজার ৮৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ কৃষি খাতে বিতরণ হয় ক্ষুদ্রঋণের ২৪ দশমিক ৩১ শতাংশ । অন্যদিকে ২০১২-১৩ অর্থবছরে ক্ষুদ্রঋণ বিতরণ কিছুটা কমে দাঁড়ায় ৪৩ হাজার ২২৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে কৃষি খাতে বিতরণ হয় ১৩ হাজার ১৯৮ কোটি টাকা। অর্থাৎ এ অর্থবছরে বিতরণকৃত ঋণের ৩০ দশমিক ৫৩ শতাংশই ছিল কৃষি খাতে। এছাড়া সর্বশেষ ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ৪৬ হাজার ২০০ কোটি টাকার ক্ষুদ্রঋণের মধ্যে কৃষি খাতে বিতরণ হয় ১৫ হাজার ৫৭৩ কোটি টাকা। এ অর্থবছরে খাতটিতে বিতরণ হয় মোট ক্ষুদ্রঋণের ৩৩ দশমিক ৭১ শতাংশ। ঋণ বিতরণে শীর্ষে রয়েছে গ্রামীণ ব্যাংক, ব্র্যাক, আশা, টিএমএসএস, জাগরণী চক্র ফাউন্ডেশন, আরডিআরএস, ব্যুরো বাংলাদেশ ও শক্তি ফাউন্ডেশন। আর বিতরণকৃত ঋণের মাত্র ২-৩ শতাংশ খেলাপি হচ্ছে। কৃষকরাও ক্ষুদ্রঋণ নিয়ে তা কাজে লাগাতে পারছেন বলে জানিয়েছেন। যশোর সদর উপজেলার শাহাবাজপুর গ্রামের কৃষক আতিয়ার রহমান জানান, শীতকালীন সবজি আবাদের আগে স্থানীয় একটি এনজিও থেকে ১০ হাজার টাকা ঋণ নিয়েছিলেন তিনি। এখন সবজি বিক্রির সঙ্গে সঙ্গে ঋণও পরিশোধ হচ্ছে তার। সবজির দাম ভালো পেলে এত দিনে ঋণের পুরো টাকা পরিশোধ করতে পারতেন বলে জানান এ কৃষক। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, প্রতি বছর বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ ঋণ কৃষি খাতে বিতরণের নির্দেশ রয়েছে। গত অর্থবছরে সব মিলিয়ে ব্যাংকগুলো প্রায় ১৬ হাজার কোটি টাকা বিতরণ করে। এসব ঋণ বিতরণের ক্ষেত্রে অনেক সময় এনজিওগুলোর সহায়তা নেয় ব্যাংকগুলো। তবে চলতি বছরের শুরুতেই এ ঋণ বিতরণে আরো কঠোর হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী কৃষিঋণ বিতরণ করতে না পারলে অর্থবছর শেষে কোনো ব্যাংক যতটুকু পরিমাণ বিতরণ করতে পারবে না, তার ৩ শতাংশ বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা করতে হবে। এ অর্থের বিপরীতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কোনো সুদ দেবে না। আগের নির্দেশনায় ৫ শতাংশ সুদ দেয়া হতো। এছাড়া কৃষি খাতে ব্যাংকের ঋণ বিতরণ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে এখন থেকে প্রতি তিন মাসের পরিবর্তে প্রতি মাসে আনুপাতিক লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের অগ্রগতি পর্যালোচনা করতে হবে। আর তিন মাসের হিসাবের পর্যালোচনায় যদি দেখা যায় লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা যায়নি, তাহলে যে পরিমাণ অর্থ বিতরণ করা যায়নি, তা বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে এক বছরের জন্য জমা রাখতে হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ ধরনের পদক্ষেপ কৃষি খাতে ঋণ বিতরণের জন্য এনজিওগুলোকে আরো বেশি উদ্বুদ্ধ করতে পারে। এ বিষয়ে ইনস্টিটিউশন অব মাইক্রো ফিন্যান্সের (আইএনএম) নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক এমএ বাকী খলীলী বলেন, এনজিওগুলোর চিন্তা ও ধ্যান-ধারণার পরিবর্তনের কারণেই কৃষি খাতে ঋণ প্রদান বাড়ছে। এখন অনেকে ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানের সদস্য না হয়েও ঋণ পাচ্ছে। আবার সরকারিভাবে অনেক প্রতিষ্ঠানকে কৃষি খাতে ঋণ প্রদানে সহায়তা করা হচ্ছে। অনেক বাণিজ্যিক ব্যাংকও অনানুষ্ঠানিকভাবে এনজিওগুলোর মাধ্যমে মাইক্রো ফিন্যান্সের চেষ্টা করছে।-বণিক বার্তা। একুশে সংবাদ ডটকম/আর/১০-০১-০১৫:
Link copied!