করোনা না যেতেই ‘টুইনডেমিক’ আতঙ্কে বিশ্ববাসী
একুশে সংবাদ : যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভাইরাসে মৃত্যুর সংখ্যা এরই মধ্যে ২ লাখ অতিক্রম করেছে। এদিকে গ্রীষ্ম বিদায় নিয়ে আসছে শীত; যুক্তরাষ্ট্রে যা ‘ফ্লু সিজন’ নামে পরিচিত। কভিড পরিস্থিতির সঙ্গে আসন্ন এই ফ্লু সিজনকে মিলিয়ে বিশেষজ্ঞরা একে ‘টুইনডেমিক সিচুয়েশন’ আখ্যা দিয়েছেন।
মঙ্গলবারের এক সম্মেলনকে সামনে রেখে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় বলছে, যুক্তরাষ্ট্রসহ বাদবাকি বিশ্বের প্রায় ৩ কোটি মানুষ যখন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত, ইতিমধ্যেই যখন প্রায় ১০ লাখ মানুষকে আমরা হারিয়েছে, ঠিক তখনই আমরা আরেকটি ভয়ংকর পরিস্থিতির মুখোমুখি; তা হলো সিজনাল ফ্লু। টিকা নেওয়ার মধ্য দিয়ে এই সংকট মোকাবিলার পরামর্শ দিয়েছে তারা।
তবে কভিড-১৯-এর সংক্রমণ ঠেকাতে ফ্লুর টিকা কোনো কাজে দেবে না। শুধু ইনফ্লুয়েঞ্জার প্রকোপ ঠেকাবে। চিকিৎসকরা বলছেন, সবচেয়ে আতঙ্কের হলো, কভিড-১৯ এবং ফ্লুর উপসর্গ প্রায় একই রকম। রোগীর শরীরে উপসর্গ দেখে কী হয়েছে তা বলা বেশ কঠিন।
সংক্রামক ব্যাধি বিশেষজ্ঞদের মতে, মানুষ বলতে পারছেন না কীসের অসুস্থতা। দুই রোগেরই সাধারণ উপসর্গ হলো জ্বর, সর্দি-কাশি, প্রবল ঠা-া লাগা এবং শ্বাস নিতে কষ্ট। তবে পার্থক্য; কভিডে গন্ধ, স্বাদের মতো অনুভূতি চলে যায়। কিন্তু করোনা-আক্রান্ত সবারই যে আবার স্বাদ-গন্ধ চলে যাওয়ার লক্ষণ দেখা দিচ্ছে, তেমনটা নয়। আবার ফ্লুতেও অনেক সময় ঠা-া লেগে নাক বন্ধ হয়ে যায়, জিভের স্বাদ চলে যায়! অতএব করোনা-পরীক্ষার রিপোর্ট না-পাওয়া পর্যন্ত রোগ নির্ণয় করা বেশ মুশকিল। আবার ফ্লু এবং কভিড-১৯, দুই রোগ একসঙ্গে হওয়ার আশঙ্কাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না বিশেষজ্ঞরা।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আগেই জানিয়ে রেখেছেন, ওষুধ প্রশাসন আপত্তি করলেও ৩ নভেম্বর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগেই তিনি টিকা বাজারে আনবেন। তবে আটলান্টিক ম্যাগাজিনে সতর্ক করে বলা হয়েছে, ‘কঠিন বাস্তবতা হলো শীতকাল সামনে রেখে আমাদের এমন পরিকল্পনা নেওয়া দরকার, যেন টিকা আমাদের জীবনের অপরিহার্য অংশ হয়ে না দাঁড়ায়।’
অবশ্য করোনা থেকে ইনফ্লুয়েঞ্জা মোকাবিলা তুলনামূলক সহজ। ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসে কভিডের তুলনায় সংক্রমিত হলে দ্রুত উপসর্গ দেখা দেয় এক থেকে চার দিনের মধ্যেই। রোগ দ্রুত ধরা পড়লে, দ্রুত-চিকিৎসা সম্ভব। তা ছাড়া উপসর্গ দেখা দেওয়ার আগে পর্যন্ত কোনো ফ্লু-রোগীর থেকে অন্য কেউ আক্রান্ত হতে পারেন। তার পরে আর সংক্রমণ ঘটে না। করোনা হলে দু’সপ্তাহ বাদেও উপসর্গ দেখা দিতে পারে। আবার উপসর্গ দেখা দেওয়ার ১০ দিন বাদেও রোগীর থেকে অন্য কেউ সংক্রমিত হতে পারে। অর্থাৎ কভিড-১৯ আরও বেশি সংক্রামক ব্যাধি।
একুশে সংবাদ/এআরএম/দে/২৩/০৯/২০২০
Link copied!
আপনার মতামত লিখুন :