সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

আধা ঘন্টার গরম বাতাসে ধান ক্ষেতের ফসল নষ্ট

একুশে সংবাদ প্রকাশিত: ০১:২৫ পিএম, ৬ এপ্রিল, ২০২১

গোপালগঞ্জ  জেলার টুঙ্গিপাড়া, কোটালীপাড়া এবং কাশিয়ানীতে কৃষকের ফসলি জমির যে দিকে চোখ যায় শুধু ধান আর ধান। দিগন্তের নিচে ধানের সবুজের সমারহে চোখ জুড়িয়ে যায়। ধানের বুকে বাতাস লেগে দোল খেয়ে প্রকৃতি অপরুপ রুপ ধারণ করে। কৃষকেরও তখন ধানের দিকে তাকিয়ে বুক জুড়িয়ে যায়। ধার দেনা করে নিজ হাতে যত্নে গড়ে তোলা ধানের দিকে তাকিয়ে অনাগত সন্তানের মতো সুখ লাভ করে । অপেক্ষা শুধু কয়েক দিনের মধ্যে ধান কেটে ঘরে তোলা । ঠিক সেই সময় কৃষকের স্বপ্নের বুকে বিষ ঢেলে দিয়েছে গত ৪ এপ্রিল সন্ধ্যায় বয়ে যাওয়া ঝড়ের সাথে ৩০ মিনিট স্থায়ী গরম হাওয়া। 

এক রাতের মধ্যে শত শত হেক্টর জমির ধান সবুজ থেকে সাদা হয়ে গেছে। নষ্ট হয়ে গেছে ধানের শীষ। কৃষি সংশ্লিষ্টরা বলছেন লু হাওয়ার কারনে এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে। গোপালগঞ্জের অন্ততঃ ১০টি ইউনিয়নে এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

গতকাল ৪ এপ্রিল (রোববার)সন্ধ্যার পরে বয়ে যাওয়া ঝড়ের সাথে ৩০ মিনিটের মতো সময় ধরে এসব এলাকায় গরম বাতাস বয়ে যায়।  এ গরম বাতাসে ক্ষেতে উঠতি বোরো ধানের যে ধানের শিষে  মাত্র “দুধ এর মতো পানি” এসেছে সেই ধান সব চিটায় পরিনত হয়ে সাদা বং ধারন করেছে। ধানে শীষে হাত দিলে এতে কোন ধানে অস্তিত্ব পাওয়া যাচ্ছে না। শুধু চিটা আর চিটা। আর এতে জেলার শত শত কৃষকেরা কোটি কোটি টাকার ক্ষতির সম্মূখীন হয়েছেন। 
 
রোববার দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে জেলার ৪টি উপজেলার অন্ততঃ ১০টি ইউনিয়নের উপর দিয়ে গরম হাওয়া বয়ে যায়। আধা ঘন্টা ধরে চলা এ গরম হাওয়ায় কোটালীপাড়া উপজেলার কান্দি, পিঞ্জুরী, হিরণ ও আমতলী ইউনিয়ন, টুঙ্গিপাড়া উপজেলার গোপালপুর, ডুমুরিয়া, পাটগাতি ও বর্নি ইউনিয়ন, কাশিয়ানীর রাতইল ইউনিয়ন, সদর উপজেলার লতিফপুর ইউনিয়নের শত শত হেক্টর জমির বোরো ধান নষ্ট হয়ে গেছে বলে কৃষি অফিস সুত্রে জানাগেছে।  কৃষকেরা আগামী বছর কি খেয়ে বাচঁবে তা নিয়ে তাদের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে।  কৃষকরা শুধু কাদঁছেন। কি করে তার ধার দেনার টাকা শোধ করবেন। সন্তানদের নিয়ে সারা বছর কি খাবেন।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ- পরিচালক ড. অরবিন্দু কুমার রায় বলেছেন গত রোববার সন্ধ্যায় ঝড়ো হাওয়ার সাথে ৩০ মিনিট বয়ে যাওয়া ব্যাপি গরম হাওয়ার কারণে ধানের এ ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতির পরিমান নিরুপনে কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা ইতোমধ্যে মাঠে নেমেছে বলে জানালেন এই কর্মকর্তা। ক্ষতির পরিমান নিরুপন পূর্বক উর্দ্ধতন দপ্তরে প্রয়োজনীয় সুপারিশ পাঠানো হবে। উল্লেখ্য, এ বছর জেলায় ৭৮ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ করা হয়েছে বলে জেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে।

 

একুশে সংবাদ/হু/আ

কৃষি বিভাগের আরো খবর