সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

ভারতকে হারিয়ে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ

একুশে সংবাদ প্রকাশিত: ০৭:৫৩ পিএম, ২২ ডিসেম্বর, ২০২১
ফাইনালে ভারতকে হারিয়ে শিরোপা জেতে বাংলাদেশ

সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ নারী চ্যাম্পিয়নশিপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ। বুধবার কমলাপুরের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে মেয়েদের সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ভারতকে ১-০ গোলে হারায় বাংলাদেশ।

ফাইনালে পুরো ম্যাচজুড়ে দুর্দান্ত ফুটবল খেলেছে গোলাম রাব্বানি ছোটনের শিষ্যরা। তবে বাংলাদেশ অসংখ্য আক্রমণ করে গোল পাচ্ছিল না। তারপরও বাংলাদেশ পুরো ম্যাচে আধিপত্য বিস্তার করে খেলেছে। ঠিক ৮০ মিনিটে আসে সেই মহেন্দ্রক্ষণ। গোলের আগে রিপা ব্যাকহিল পাস করেন। আনাই মুঘিনি বক্সের বাইরে থেকে শট নিলেন। বলের ফ্লাইট বুঝতে পারেননি ভারতের গোলরক্ষক।

গোলকিপারের হাতে বল লাগালেও, গোল লাইন অতিক্রম করা থেকে বিরত রাখতে পারেননি ভারতীয় গোলকিপার। গোল লাইন অতিক্রম করার সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশের এক গোল সম্পন্ন হয়ে যায়। নেচে ওঠে পুরো কমলাপুর স্টেডিয়ামের দর্শক সহ সারা বাংলার মানুষ।

এর আগে ২০১৮ সালে অনূর্ধ্ব-১৮ বছর বয়সীদের  নিয়ে হওয়া এই প্রতিযোগিতায় নেপালকে হারিয়ে শিরোপা জিতেছিল বাংলাদেশ।  সেবার নেপালের কাছে সেমি-ফাইনালে হেরে ছিটকে গিয়েছিল ভারত। প্রথমবারের মতো শিরোপার মঞ্চে উঠে এসে হারের বিষাদ সঙ্গী হলো তাদের। এ আসরে টানা দুই ম্যাচে বাংলাদেশের কাছে হারল ভারত। 

রাউন্ড রবিন লিগের ম্যাচেও ১-০ গোলে জিতেছিল বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কাকে ১২-০ গোলে উড়িয়ে দেওয়া ম্যাচের একাদশে চারটি পরিবর্তন আনেন কোচ ছোটন। সোহাগী কিসকু, স্বপ্না রানী, আনুচিং মোগিনি ও আফিদা খন্দকারের বদলে  একাদশে ফিরেন মনিকা চাকমা, তহুরা খাতুন, ঋতুপর্না চাকমা ও নীলুফার ইয়াসমিন।

ফাইনালের শুরু থেকে বলের নিয়ন্ত্রণে এগিয়ে ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু ভারতের জমাট রক্ষণ ভেদ করতে পারছিল না। এরই মধ্যে চতুর্দশ মিনিটে বড় বাঁচা বেঁচে যায় ভারত। মারিয়া মান্ডার দূরপাল্লার শট গোলরক্ষক আংশিকা ঝাঁপিয়ে পড়ে আটকালেও বল গ্লাভসে নিতে পারেননি। দুই ডিফেন্ডারের ফাঁক গলে বেরিয়ে কোনাকুনি শট নেন তহুরা, শটে গতি না থাকলেও বল ছুটছিল জালের দিকে। ছুটে গিয়ে গোললাইনের উপর নির্মলা দেবি বল আটকানোর পর  গ্লাভসে নেন আংশিকা।

বল গোললাইন পেরিয়েছে এমন দাবি করে রেফারি অঞ্জনা রায়কে ঘিরে ধরেন মারিয়া-মনিকারা। পরিস্থিতি অবশ্য ভালোভাবেই সামলেছেন নেপালের এই রেফারি। খেলার ২৪তম মিনিটে একটুর জন‍্য গোল পায়নি বাংলাদেশ। থ্রো ইনে সতীর্থের কাছ থেকে ফিরতি পাস পেয়ে উঁচু শট নিয়েছিলেন মোগিনি। বল গোলরক্ষককে ফাঁকি দিয়ে দূরের পোস্টে লেগে ফিরে।

বিরতির পর দ্বিতীয়ার্ধেও শুরু থেকে ভারতের উপর আক্রমণ বাড়িয়ে দেয় বাংলাদেশ। ৪৬তম মিনিটে আবারও বাংলাদেশের পথ আগলে দাঁড়ায় দূর্ভাগ্য। আঁখি খাতুনের লম্বা ক্রসে তহুরার ভলি ক্রসবারে লেগে ফিরে। ৫৭তম মিনিটে শামসুন্নাহার জুনিয়রের দূরপাল্লার শট যায় ক্রসবারের উপর দিয়ে। একটু পর রিপার ক্রসে শামসুন্নাহার জুনিয়রের হেড উপরের জাল কাঁপায়।

৬৩তম মিনিটে ডান দিক থেকে সতীর্থের ক্রসে লিন্ডা কমের হেড অনেকটা লাফিয়ে উঠে গ্লাভসে নেন বাংলাদেশ গোলরক্ষক রুপনা চাকমা। ম্যাচে বাংলাদেশের জালে এমন আক্রমণ খুব সামান্যই করতে পেরেছে ভারত।

৭৯তম মিনিটে আসে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। কাঙ্ক্ষিত গোলের আনন্দে মেতে ওঠে বাংলাদেশের ডাগআউট; কমলাপুরের গ্যালারি। রিপার ব্যাক হিলে মোগিনির দূরপাল্লার শট লাফিয়ে ওঠা গোলরক্ষকের গ্লাভস ছুঁয়ে জালে জড়ায়। বাকিটা সময় এ গোল আগলে রেখেই শিরোপা উৎসবে মেতে ওঠে বাংলাদেশ।

পাঁচ দলের মধ্যে একমাত্র বাংলাদেশই ফাইনাল পর্যন্ত কোনো গোল হজম করেনি। গোলও দিয়েছে সবচেয়ে বেশি, ২০টি। ভারত ৯ গোল দিয়ে হজম করল ২টি এবং দুটি গোলই বাংলাদেশের বিপক্ষেঅপরাজিত

একুশে সংবাদ/রাফি/এসএস

খেলাধুলা বিভাগের আরো খবর