সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

রাষ্ট্রপতির নির্দেশনা বাস্তবায়নে ধীরগতি, দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন মুক্তিযোদ্ধারা

একুশে সংবাদ প্রকাশিত: ১২:৫৭ এএম, ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
  • সরকারের সিদ্ধান্ত, বাস্তবায়নের জন্য আদেশ দিয়েছি 
    -বিকাশ দেওয়ান, এমডি, ডিপিডিসি

  • সরকারের নির্দেশনা পেয়েছি দ্রুতই বাস্তবায়ন করা হবে
    -আমির কাউসার আলী, এমডি, ডেসকো

 

যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা, খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা, মৃত যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবার, মৃত খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবার এবং শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানির বিল মওকুফের নির্দেশনা দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ।

 

গত ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ৩৭টি সুবিধা দিয়ে রাষ্ট্রপতির এ আদেশ জারির পর বিদ্যুৎ, পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন এবং ডাবল বার্নার একটি গ্যাস চুলার বিল এখনো মওকুফের ব্যবস্থা নেয়নি সংশিষ্ট্র (বিদ্যুৎ বিতরণী কোম্পানিগুলো, ঢাকা ওয়াসা ও তিতাস গ্যাস) অধিদপ্তর। মুক্তিযোদ্ধারা এ সব প্রতিষ্ঠানে আবেদন করার পরও দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। ইতিমধ্যেই ঢাকা সিটি কর্পোরেশন হল্ডিং ট্যাস্ক মওকুফ করেছেন।

 

বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক সরকারের সকল সংস্থাকে তা বাস্তবায়নের জন্য চিঠি দিয়েছেন। কিন্তু প্রায় দুই মাস অতিবাহিত হলেও রাষ্ট্রপতির নির্দেশনা মানছে না বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিভাগ।

 

এদিকে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি এ-সংক্রান্ত সরকারি আদেশ বাস্তবায়নের জন্য ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ডিপিডিসি) সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছে। মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট থেকে গত ৬ ফেব্রুয়ারি উপ-মহাব্যবস্থাপক আবুল কালাম আজাদ বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানিগুলোকে একটি চিঠি দেয়। ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, গত ৩১ ডিসেম্বর জারি হওয়া মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট প্রবিধান-২০২২-এ যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা, খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা, মৃত যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবার, মৃত খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবার এবং শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে বিদ্যুৎ বিল সরকার মওকুফ করেছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বিতরণ কোম্পানির প্রধানদের অনুরোধ জানানো হয়।

 

সূত্র বলছে, গত ২০০০ সালে সারাদেশে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বিদ্যুৎ বিল ২০০ ইউনিট পর্যন্ত মওকুফ, পানি বিল ২ থেকে ৩ শত লিটার পানি বিল মওকুফ করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যা বর্তমানে কার্যকর রয়েছে।

 

বিদ্যুত বিভাগ বলছে, ২০২১-২২ অর্থবছরে তিন কোটি ৩০ লাখ টাকার বিদ্যুত বিল মওকুফ করেছে পাঁচটি বিতরণ কোম্পানি। সারাদেশের তিন হাজার ৯৩৩ জন মুক্তিযোদ্ধা এই সুবিধা পেয়ে থাকেন। বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) ৩৫০ জন শহীদ মুক্তিযোদ্ধা এবং যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধার বিল পরিশোধ করে। গত অর্থবছরে সংস্থা ৫৬ লাখ টাকার বিদ্যুত বিল পরিশোধ করেছে। একইভাবে বিভিন্ন পল্লী বিদ্যুত সমিতি দুই হাজার ৬৯০ জনের বিদ্যুত বিল বাবদ এক কোটি ৯৬ লাখ ৪৫ হাজার টাকা, ডিপিডিসি ৩৩৫ জনের ৪৭ লাখ ২১ হাজার, ডেসকো ২৪৯ জনের ২৫ লাখ ৯৮ হাজার, ওজোপাডিকো ৩০৯ জনের ৩৩ লাখ ৭১ হাজার টাকা বিল পরিশোধ করেছে। বিদ্যুত বিভাগ বলছে, ২০০০ সাল থেকে সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রাষ্ট্রীয় সম্মানী ভাতাপ্রাপ্ত যুদ্ধাহত এবং শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের ২০০ ইউনিট পর্যন্ত বিদ্যুত বিল মওকুফ করে একটি গেজেট প্রকাশ করে অর্থ মন্ত্রণালয়। তখন মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের তালিকা অনুযায়ী সুবিধাভোগীর সংখ্যা ছিল এক হাজার ৭৯০ জন।

 

এ বিষয় মো. শাহজাহান কবীর বীরপ্রতীক বলেন, বিদ্যুৎ গ্যাস, পানির বিল মওকুফ এর জন্য আবেদন করেছি। এখনো বাস্তবায়নের অপেক্ষায় আছি।

 

মিজানুর রহমান বীরপ্রতীক বলেন, বিল মওকুফ এর জন্য আবেদন করেছি। কিন্তু বাস্তবায়ন হচ্ছে না। বিদ্যুৎ গ্যাস বিতারণী কোম্পানি গুলো রাষ্ট্রপতির নির্দেশনাও মানছে না।

 

এ বিষয় ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকাশ দেওয়ান বলেন, চিঠিটি আমরা ১৫ ফেব্রুয়ারি হাতে পেয়েছি। যেহেতু এটি সরকারের সিদ্ধান্ত, তাই বাস্তবায়নের জন্য আদেশ দিয়েছি। পরবর্তীতে আমরা এ বিষয়ে বিদ্যুৎ বিভাগের নির্দেশনা চাইব। এক্ষেত্রেও আমরা পরবর্তীতে বিদ্যুৎ বিভাগের মাধ্যমে অর্থ বিভাগের কাছে বিদ্যুৎ বিলের টাকা চাইব।

 

এ ব্যাপারে ডেসকোর এমডি আমির কাউসার আলী বলেন, সরকারের নির্দেশনা পেয়েছি খুব দ্রুতই বাস্তবায়ন করা হবে। বিদ্যুৎ বিভাগের সঙ্গে আলোচনা করে কিভাবে করা যায় সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।

 

এ বিষয় তিতাস গ্যাস এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক হারুন নুর রশিদ মোল্লাকে ফোন করা হলে তিনি রিসিভ করেননি।

 

প্রসঙ্গত বিদ্যুৎ বিল মওকুফের জন্য বীর মুক্তিযোদ্ধারা দীর্ঘদিন দাবি জানিয়ে আসছিলেন। সরকার মুক্তিযোদ্ধাদের সেই দাবির প্রতি সম্মান জানিয়ে বিল মওকুফ করার নির্দেশ দেয়া হয়।

 

একুশে সংবাদ.কম/এসএপি

বিশেষ প্রতিবেদন বিভাগের আরো খবর